বিজয় দিবসে নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে সতর্ক অবস্থানে র্যাব
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সন্দেহভাজন ব্যক্তি অথবা নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে বিশেষ গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান পরিচালনা করবে র্যাব। পাশাপাশি কিশোর গ্যাং সংক্রান্ত গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি এবং এরা যেন সংঘাতে লিপ্ত হয়ে কোনো অনুষ্ঠান পণ্ড করতে না পারে, সে ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পুলিশের এই এলিট ফোর্স।
রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক আল আমিন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হবে। জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবভনসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান, জনসমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হবে। সার্বিকভাবে সব ধরনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে বিজয় দিবসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে র্যাব।
অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে র্যাবও বিজয় দিবস উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করেছে। দিবসটি ঘিরে এরই মধ্যে জারি করা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সব নির্দেশনা বাস্তবায়নে র্যাব ফোর্সেস কাজ করছে।
বিজয় দিবসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব ১৩ ডিসেম্বর থেকে দায়িত্বপূর্ণ এলাকার উল্লেখযোগ্য ভেন্যুগুলো ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি এবং নিরাপত্তা টহল বাড়িয়েছে।
আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে ব্যাটালিয়নসমূহের নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে।
র্যাবের ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা গুরুত্বপূর্ণ স্থানের আশেপাশে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের মাধ্যমে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ইউনিফর্ম টহল বৃদ্ধি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়াও র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইন নজরদারির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
র্যাবের টহল জোরদার করার পাশাপাশি দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ডগ স্কোয়াড ও র্যাব বোম্ব স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল ফোর্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গভবন ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনসহ সারাদেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণকল্পে র্যাবের দৃশ্যমান উপস্থিতি ও টহল অব্যাহত রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানস্থলের আশেপাশে কেউ যেন কোনো প্রকার ব্যাগ, বস্তা বা কার্টুন জাতীয় কোনো দ্রব্য বহন ও সংরক্ষণ না করতে পারে সেটি খেয়াল করা হবে।
বিজয় দিবসে ঢাকা মহানগরীতে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। এসব ভেন্যু ও অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
সারাদেশে ভিভিআইপি/ভিআইপি, বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের গমনাগমনের স্থানসহ জনসমাগম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এমন স্থানে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
শহরের প্রবেশ ও বাহির পথগুলোর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যেখানে জনসমাগম বেশি হয় সেসব এলাকায় যেন কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা যেন বস্তি, হোটেল ও রেস্ট হাউজে অবস্থান করে অপরাধ পরিকল্পনা করতে না পারে এই লক্ষ্যে নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সব বস্তি, হোটেল, গেস্ট ও রেস্ট হাউজ, নগরীর উপকণ্ঠে নতুনভাবে গড়ে ওঠা আবাসিক এলাকা ও ক্রাইম জোনে নজরদারি করা হবে।
র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড টিমকে কৌশলগত স্থানে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তার কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক, বোমাবাজিসহ সহিংস ঘটনা রোধকল্পে আগাম গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহপূর্বক প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও নিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসা কোনো নারী যেন ইভটিজিং, যৌন হয়রানি অথবা সম্মানহানির শিকার না হন সেদিকে বিশেষভাবে সতর্ক দৃষ্টি রেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এবং লঞ্চ টার্মিনাল ও এর আশপাশের এলাকায় সাদা পোশাক ও ইউনিফর্মে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
র্যাবের ব্যাটলিয়নগুলো নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তাদের জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করবে। র্যাব সদরদপ্তরে কন্ট্রোল রুমের (কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বর- ০১৭৭৭৭২০০২৯) মাধ্যমে ঢাকাসহ সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন