রাজশাহীর বাঘায় টাকার মালা পড়ে বিজয় র‌্যালি « বিডিনিউজ৯৯৯ডটকম

রাজশাহীর বাঘায় টাকার মালা পড়ে বিজয় র‌্যালি

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১১:৪৭
ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১১:৪৭
Link Copied!

ঢাক-ঢোলের বাদ্য বাজনা আর গলায় টাকার মালা পরে বিজয় র‌্যালি করেছেন বেসরকারিভাবে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান-মেম্বররা। নির্বাচন শেষ হওয়ার পরের দিন থেকে (বুধবার,মঙ্গলবার ও সোমবার) দিনভর নির্বাচনী এলাকার পাড়া-মহল্লায় বিজয় র‌্যালি করেন তারা। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার যোগাযোগ বিছিন্ন পদ্মার চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ডিএম বাবুল মনোয়ার বিজয়ী মেম্বর ও তাদের শুভাকঙ্খীদের নিয়ে বিজয় র‌্যালি করেছেন।

ওই ইউনিয়নে আ’লীগ দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ডিএম বাবুল মনোয়ার। তার সাথে নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য সহিদুল ইসলামসহ কয়েকজনের গলায় ছিল টাকার মালা। তাদের গলায় ঝুলছিল হাজার টাকা, পাঁচশ টাকা, একশ টাকা, পঞ্চাশ টাকা, বিশ টাকা, দশ টাকার নোট। তাদের এমন কাজে অসন্তোষ ও বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তাও। অনেকের মতে, টাকার মালা গলায় পরে তারা জানান দিতে চেয়েছেন যে টাকা ছাড়া নির্বাচন হয় না। আবার কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, যাদের অনেক টাকা আছে তাদের সাথে কেউ যেন লড়তে না আসেন।

ইউনিয়নটির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য প্রার্থী হেলাল উদ্দীন বলেন. টাকার জোরে নির্বাচিত হয়েছেন বলেই টাকার মালা গলায় পরে বিজয় র‌্যালি করেছেন। তিনি সহিদুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ২৭ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। বুধবারও বিজয়ী অনেক মেম্বর ফুলের ও টাকার মালা গলায় পরে নিজ নিজ ওয়ার্ডে র‌্যালি করেছেন। সোমবার থেকে বিজয় র‌্যালি শুরু করেছেন চেয়ারম্যান-মেম্বররা।

বিজ্ঞাপন

৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান শিশির মন্ডল জানান,সোমবার তার নিজ ওয়ার্ডে বিজয় র‌্যালি করেছেন। ওয়ার্ডের লোকজন হাজার টাকা, পাঁচশ টাকা, এক’শ টাকা, পঞ্চাশ টাকা, বিশ টাকা, দশ টাকার নোট দিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছেন। সব মিলে ত্রিশ হাজার টাকা পেয়েছেন তিনি। বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী ডিএম বাবুল মনোয়ার বলেন, ‘নিজের ইচ্ছায় টাকা দিয়ে মালা বানিয়ে গলায় পরিনি। জনগণই তাদের টাকা দিয়ে মালা বানিয়ে গলায় পরিয়ে দিয়েছে। তবে কত টাকা দিয়ে মালা দিয়েছে তা জানাতে পারেননি। সোমবার নির্বাচনী এলাকার পাড়া-মহল্লা হাট বাজারে গিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর সময় ফুলের মালা ও গলায় টাকার মালা পরিয়ে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে তার কোন বিজয় র‌্যালি হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। টাকার মালা গলায় পরে বিজয় র‌্যালি করা আইনসিদ্ধ কিনা এ প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি।

পরাজিত স্বতন্ত্র (আওয়ামীলীগ দলের বহিস্কৃত) চেয়ারম্যান প্রার্থী আজিজুল আযম বলেন, চর এলাকার রেওয়াজ অনুযায়ী নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান-মেম্বরকে এভাবেই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তবে আইন সন্মত না হলে বন্ধ করা উচিত বলে জানান তিনি। চকরাজাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম জানান, চরের রেওয়াজ অনুয়ায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সপ্তাহব্যাপী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। চর এলাকার মিলন সেখ নামের একজন জানান, সংবর্ধনায় চেয়ারম্যান মেম্বরকে টাকার মালা পরিয়ে পর্যায়ক্রমে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ মালাতে এক হাজার টাকা, পাঁচশ টাকা, একশ টাকা, পঞ্চাশ টাকা, বিশ টাকা, দশ টাকার নোট দেওয়া হয়।

বাঘা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুল আলম বলেন, ‘বিজয়ীদের র‌্যালি নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু, তারা বিধি নিষেধ মানছেন না। টাকার মালা গলায় পরে বিজয় র‌্যালি করা একটি অশুদ্ধ কর্ম। এতে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলবেন। যেহেতু নির্বাচন পরবর্তী এই ঘটনা, সেহেতু আমাদের পক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী ডিএম বাবুল মনোয়ার (নৌকা) ৪ হাজার ৯১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুল আযম (আনারস) ৩ হাজার ১০১ ভোট পেয়েছেন। এই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৫৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪ হাজার ৮৮৮ ও মহিলা ৪ হাজার ৬৪৫ জন। ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে চকরাজাপুরসহ ৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বিষয়:

সর্বশেষ: