রেমিটেন্সের ইতিহাসে রেকর্ড
আরও এক শতাংশ প্রণোদনা বাড়ানো উচিত -ড. আতিউর রহমান
![](https://bdnews999.com/wp-content/themes/Mega%20News/pitw-assets/pitw-image/user_default.png)
![](https://bdnews999.com/wp-content/uploads/2021/12/12-110.jpg)
করোনাকালে দেশে বাড়তে থাকে প্রবাসী আয়। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে টানা কমতে থাকে। তারপরও এই বছর শেষে মন্দা কাটিয়ে ২ হাজার ২০০ কোটি (২২ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার (৮৫ টাকা ৮০ পয়সা) হিসেবে টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড। কারণ এর আগে এক বছরে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল ২০২০ সালে, ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সালে ১৮ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। ২০২০ সালে এসেছিল ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৮৭ কোটি ১৮ লাখ (২১.৮৭ বিলিয়ন) ডলার। ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৩ কোটি ৮০ লাখ (১০.০৩ বিলিয়ন) রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ২৬৬ কোটি ৬০ লাখ (১২.৬৬ বিলিয়ন) ডলার। অর্থাৎ এই ৬ মাসে দেশে রেমিটেন্স কমেছে ২০ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
কিন্তু চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিটেন্স প্রবাহে ভাটার টান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রতি মাসেই কমছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। প্রথম মাস জুলাইয়ে আসে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ১৮১ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে আসে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। অক্টোবর মাসে এসেছে ১৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। নভেম্বর মাসে আসে আরও কম, ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। তবে বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরের শেষ চার দিনে ২০ কোটি ডলার আসলে এই মাসে নভেম্বরের চেয়ে কিছু বেশি রেমিটেন্স দেশে আসবে।
এদিকে আমদানি বাড়তে থাকায় বাংলাদেশের বিদেশি রিজার্ভও কমতে থাকে। আকু পরিশোধেরও ব্যাপার থাকে। ফলে তা নেমে এসেছিল ৪৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে। গত কয়েক দিনে তা আবার বাড়তে থাকে। গত মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ৪৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। প্রতি মাসে ৭ বিলিয়ন ডলার ধরে বর্তমানে এই রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের কিছু বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়। জানুয়ারিতে আবার আকুর বিল পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ ফের কমে যাবে। দুই মাস পর পর আকুর দেনা পরিশোধ করে বাংলাদেশ।
রেমিটেন্সে বর্তমানে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এই হার আরও এক শতাংশ বাড়ানো উচিত বলে মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এ অর্থনীতিবিদ বলেন, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। রফতানি, রেমিটেন্স ও কৃষি-এ তিন খাত মহামারিতে আমাদের রক্ষা করেছে। তবে এ তিন খাতের মধ্যে বড় ভ‚মিকা রেখেছে রেমিটেন্স। এজন্য রেমিটেন্সে ২ শতাংশের সঙ্গে আরও ১ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ার প্রস্তাব করেন তিনি।