দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আবারো বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ভোটের পর যুক্তরাষ্ট্রের বড় কোনও কর্মকর্তার বাংলাদেশ সফর হয়নি। সেক্ষেত্রে ডোনাল্ড লুর সফরটি হবে উচ্চ পর্যায়ের প্রথম সফর।

আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা না এলেও এই চলতি মাসের মাঝামাঝিতে দুই দিনের সফরে তিনি ঢাকায় আসবেন বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে। ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে দেখা করবেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। মতবিনিময় করবেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।

লুর আসন্ন সফরের গুরুত্ব তুলে ধরে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “ভারত মহাসাগরের ঠিক ওপরের দিকে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সরকার বাংলাদেশে থাকলে এখানে তাদের একটা অবস্থান থাকল এমনটা মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচন নিয়ে মতপার্থক্য থাকার পরও এখন পর্যন্ত দুই দেশ সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জোরালো মনোভাব দেখাচ্ছে। সেদিক থেকে আসন্ন সফরটি তাৎপর্যপূর্ণ।”

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ চেয়েছেন ডোনাল্ড লু। তবে এখনও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি।

গত ৩০ এপ্রিল গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত হওয়ার ঘটনার জবাব চেয়েছিলেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নতি হয়নি উল্লেখ করে দেশটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তারও সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে টানাপড়েনের মধ্যে গত বছরের মাঝামাঝিতে ঢাকা সফরে এসেছিলেন লু।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত জানুয়ারির নির্বাচনের গ্রহণযেোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিল ওয়াশিংটন। তবে ভোটের কয়েক সপ্তাহ পর টানা চতুর্থ বার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে ওয়াশিংটনের সমর্থন থাকবে। পাশাপাশি মুক্ত ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় ঢাকাকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

চীনা বংশোদ্ভূত আমেরিকান ডোনাল্ড লু ২০২১ সাল থেকে পররাষ্ট্র দপ্তরে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তার আগে তিনি কিরগিজস্তানে ও আলবেনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফরেইন সার্ভিসে যোগ দেওয়ার পর লু পাকিস্তানে এবং ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের মিশনেও কাজ করেছিলেন। পাকিস্তানে দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে উৎখাতের ক্ষেত্রে লুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল।