গরীবের বন্ধু বাদশা হারুন ! « বিডিনিউজ৯৯৯ডটকম

সাধ আছে-সাধ্য নেই, অর্থ সংকটে দিনপার

গরীবের বন্ধু বাদশা হারুন !

স্টাফ রিপোর্টার
আপডেটঃ ১১ মে, ২০২৪ | ১:০৬
স্টাফ রিপোর্টার
আপডেটঃ ১১ মে, ২০২৪ | ১:০৬
Link Copied!
সকল ছবি হারুনের থেকে সংগৃহীত -- বিডিনিউজ৯৯৯ডটকম

আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়তই আমরা বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ দেখতে পাই। তাদের মধ্যে ভিক্ষুক, এতিম-মিসকিন, অসহায়, পথশিশু, পাগল, এককথায় সুবিধাবঞ্চিতের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। আর তাদের জন্যই কাজ করছেন রাজধানীর ভাষানটেকের হারুন। কেউবা তাকে গরীবের বন্ধু বাদশা হারুন বলেও ডাকেন। ভাঙাচোরা বস্তিতে নিদারুণ কষ্টে বাস করা হারুনের এই উপাধি দিয়েছেন তার মতো কষ্টে থাকা মানুষেরাই।

হারুনের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তিনি রাজধানীতে রয়েছেন ১৯৯৭ সাল থেকে। তার ভাষ্যমতে ১৯৯৭ সালে তিনি ঢাকার ভোটার হন। তখন থেকেই চলছে তার মানবিক কাজের প্রচেষ্টা। তবে অর্থনৈতিক অনটনে তিনি আর কোলাতে পারছেন না বলেও জানান।

মোঃ হারুন অর রশিদ ওরফে বাদশা হারুন মূলত বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তিনি বলেন, “আমি ২০১৪ সাল থেকে নিয়মিত গরীবদের জন্য কাজ করছি। ভাষানটেক থানায় আওয়ালীগের পদেও আমার নাম ছিলো। প্রচার সম্পাদক হিসেবে আমি কাজও করেছি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আমি এখন বঞ্চিত। কারণ পরে জানতে পারি, কমিটিতে আমার নাম দেয়া হয়নি। তবে আমি থেমে নেই। বিশেষ করে যারা রাস্তায়, মাজারে পাগল ও ভিক্ষুকের বেশে পড়ে আছে, কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। আমি তাদের জন্য কাজ করছি। কিন্তু কিছু সুবিধাভোগী মহল আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে বাধা দিয়েছে, এমনকি মেরে ফেলতে চেয়েছে। তাছাড়া হারুন আরো বলেন, আমার নামে বরাদ্দকৃত টাকাও তারা আত্মসাৎ করেছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।”

বিজ্ঞাপন

হারুন বর্তমানে রাজধানীর ভাষানটেকের একটি বস্তিতে থাকেন। তিনি তার কাজকে আরো বেগবান করার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। সেই সাথে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও সাক্ষাৎ করতে চান। তুলে ধরতে চান সুবিধাবঞ্চিতদের দাবি, বলতে চান তার মনের কথা।

গরীবের বন্ধু খ্যাত বাদশা হারুন বিভিন্ন দাবি ও অভিযোগ তুলে ধরেছেন। তবে রয়েছে মুদ্রার অপর পাশও। ভাষানটেক থানা, স্থানীয় জনগণ, বাজার, বস্তুি সূত্রে জানা যায় হারুন ইতিপূর্বে মাদক মামলায় জেলও খেটেছেন। তবে হারুন বলেন, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি পুলিশকে কোনো দোষ দিবো না। কারণ কিছু কুচক্রী মহল আমার টাকা আত্মসাৎ করতেই আমাকে মাদক আসামি বানিয়েছে, আমাকে করেছে ঘরছাড়া, পরিবার ছাড়া।

হারুন ইতিপূর্বে কচুক্ষেত বাজারে মাছের ব্যবসা করতো। সুবিধাবঞ্চিত ও ভিক্ষুকদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দিনে দিনে শেষ করেছেন সকল অর্থ, হারিয়েছেন মাছের দোকান। গুরুতর অসুস্থ হয়ে, পায়ের অপারেশনের পর হারুন এখন একেবারেই নিঃস্ব। ভাষানটেক বাগানবাড়ি পোড়া বস্তির ডোবা নালার মধ্যেই কেটে যাচ্ছে তার জীবন। তবে বস্তির লোকজন অকপটে স্বীকার করছে হারুনের ত্যাগের কথা।

বিজ্ঞাপন

সমাজসেবার বাইরেও হারুন সময় দিয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে। তবে হারুনের ভাষ্যমতে, ভাষানটেক থানা আওয়ামিলীগের পদ দিতে চেয়েও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাছাড়া ভাষানটেক থানা বিট পুলিশের তালিকায়ও তার নাম ছিলো। তাই তিনি চান, বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের রাজনীতির মধ্যে থেকেই সমাজসেবক হতে। তিনি আরও বলেন, এর আগে যারা বিএনপির রাজনীতি করতো, তারাই হারুনের টাকা মেরে এখন আওয়ামিলীগের নেতাবনে গিয়েছে। রাজনৈতিক দায়িত্বশীল ও প্রশাসন চাইলে তিনি তাদের নাম দিতেও প্রস্তুত আছেন বলে জানান হারুন।

হারুনের বারংবার অনুরোধে তার আশেপাশের লোকজন, দোকানদার, বাজারে খোঁজ নেয়া হয়। তার ব্যক্তিগত মোবাইলে দেখা যায় “বাদশা হারুন” নামে ফেইসবুক আইডি। হারুন বলেন, যখন বারাক ওবামা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন সারাবিশ্বের বেকার, সুবিধাবঞ্চিত, অসহায়, পথশিশু, ভিক্ষুক, পাগলদের জন্য কাজ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। হারুনও তখন সেখানে আবেদন করেন এবং নিয়মিত যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যান। একপর্যায়ে তিনি দেশ ও দেশের বাইরে থেকে আর্থিক সহায়তা পান। তবে তিনি লেখাপড়া না জানার কারণে তার বিশ্বস্ত লোকেরা তার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

তিনি আরো দাবি করেন, বাদশা হারুন সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে কাজ করার জন্য বিশ্বব্যাপী ফেইসবুকে ৯৮ হাজার ৮৮ কোটি লাইক পান এবং তাকে ভিক্ষুক ও বেকারদের সভাপতি করার প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে যথাযথ প্রমাণ ও আইটি টেকনোলজির ঘাটতি থাকায় তা অধিকতর অনুসন্ধানের দাবি রাখে।

হারুন দাবি করেন, তিনি দেশ ও দেশের বাইরে সকল স্তরে ভিক্ষুক ও পথে বসবাসকারী অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে চান। কিন্তু সরকারি সহায়তা ছাড়া এমন কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাই তিনি সকলের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন।

নিজে শিক্ষিত হতে না পারার আফসোস থেকে হারুন বলেন, আমি যদি লেখাপড়া জানতাম। তাহলে আমার টাকা কেউ মারতে পারতো না। আমি এ সমাজের অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে পারতাম। দেশের প্রতিটি মানুষের সুষ্ঠু শিক্ষার জন্য আরও বড় পদক্ষেপ নেয়ার দাবিও জানান বাদশা হারুন। তবে এই কাজগুলো তিনি নিজেই করতে চান। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দেশের সকল সচেতন মানুষ এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এমনকি এই উদ্দেশ্য রয়েছে তার একটি ব্যাংক হিসাব।

মোঃ হারুন অর রশিদের ইসলামি ব্যাংকের হিসাব নম্বর: 20502030203755013

ফোন নাম্বার:
01787 431337
01993-401580

হারুন বলেন, এর আগে আমাকে সামাজিক কাজ থেকে দূরে রাখতে ও আমাকে সমাজে হেয় করার জন্য অনেকে যড়যন্ত্র করেছে। আমাকে পাগল সাব্যস্ত করে আমার স্ত্রী, সন্তান থেকে দূরে রাখা হয়েছে। আমার স্ত্রীর সামান্য কাশি হলেও তাকে যক্ষ্মা রোগী সাজিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছে। এমনকি আমার স্ত্রী মারা গেলে কিশোরগঞ্জে গোপনে দাফন করা হয়। আমাকে জানানো হয়নি, আমাকে আমার স্ত্রীর লাশটাও দেখতে দেয়নি। আমার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য আমাকে চারতলা ভবনের ছাদে নিয়ে ফেলে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রও করা হয়। প্রশাসন নাম জানতে চাইলে আমি সকলের নাম, ঠিকানা দিতে প্রস্তুত।

হারুন বলেন, দেশের নানা প্রান্তে অনেকেই কাজ করছে। কিন্তু আমার কাজ মহৎ উদ্দেশ্যে ও ভিন্নধর্মী। অনেকেই দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। সুইস ব্যাংকে পড়ে আছে হাজার হাজার কোটি টাকা। সে-সব টাকা দেশে ফিরিয়ে আনলেও অনেক জনহিতকর কাজ করা সম্ভব। আমি চাই, সুইস ব্যাংকের টাকার হিসাব সুষ্ঠু তদন্ত করে জনগণের মাঝে প্রকাশ করা হোক। তাহলেই দেশ হবে সোনার বাংলা, এদেশের মানুষ পাবে ন্যায্য অধিকার।

বিষয়:

সর্বশেষ: