খুঁজুন
বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন, ১৪৩১

খাদিজা-আসিফ নজরুল বিতর্কে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ
খাদিজা-আসিফ নজরুল বিতর্কে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

“আমি শুধু একটি নাম, কিন্তু আমার কণ্ঠস্বর থেমে থাকবে না,” ঠিক এভাবেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরা তার বক্তৃতা শুরু করেন। এই তরুণী, যিনি ২০১৯ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৫ মাস কারাভোগ করেছিলেন, সম্প্রতি তার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। আর যা নিয়ে রীতিমতো তৈরি হয়ে নতুন বিতর্ক।

খাদিজা তার বক্তব্যে দাবি করেন, সরকারের শাসনব্যবস্থা, বিশেষত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার, একটি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিপদগ্রস্ত।

খাদিজা তার বক্তৃতায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন, বলেছিলেন, “আমাকে একটি উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। যেনো বলা হয়, যে কোনো মেয়ে—শিক্ষার্থী হলেও যদি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাকে গায়ের ওপর আঘাত সহ্য করতে হবে।” তার ভাষায়, “সরকারের শাসন এখন ফ্যাসিস্ট শাসন হয়ে গেছে, আর আমার ওপর যে নৃশংসতা করা হয়েছে, তা ফ্যাসিজমের সবচেয়ে বাজে উদাহরণ হতে পারে।”

এখন প্রশ্ন উঠেছে, খাদিজার বক্তব্যে যে প্রধান অভিযোগ ছিল তা হচ্ছে সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের প্রতি তার ক্ষোভ। খাদিজা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা স্টুডেন্টরা বিশ্বাস করে আজকের উপদেষ্টাদের বসিয়েছি। কিন্তু যদি আসিফ নজরুল স্যার বিচারগুলো সঠিকভাবে না করতে পারেন, তাহলে আপনি নেমে যান।” তার এই মন্তব্য শুধু আসিফ নজরুলের দায়িত্বহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে না, বরং সরকারের প্রতি তার অবিশ্বাসের গভীর প্রমাণ হিসেবে দাঁড়ায়।

খাদিজা আরও এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন, ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় মেজর দেলোয়ারের সঙ্গে একটি লাইভ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে “ফ্যাসিস্ট” বলে মন্তব্য করার পর তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে দুই বছর পর, তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তার করার ঘটনা এক প্রশ্নের জন্ম দেয়—”কেন তখন হয়নি, আর কেন এখন?” খাদিজা বলেন, “এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে চালানো মামলা, যার পেছনে সরকারের অপ্রকাশিত উদ্দেশ্য ছিল।”

নারী দিবসের প্রসঙ্গে খাদিজা বলেন, “সমতা মানে শুধু পুরুষদের মতো হওয়া নয়, বরং নারীদের ইসলাম অনুযায়ী যথাযোগ্য সম্মান ও অধিকার দেওয়া উচিত।” এর মাধ্যমে তিনি নারীদের প্রকৃত মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানালেন।

অবশেষে, খাদিজা সরকারের পতনের পর যে বিচারহীনতা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “সরকার বদলেছে, কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখনো রয়েছে, এবং যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ রয়েছে, তাদের বিচার হচ্ছে না।”

তিনি অব্যাহত নারী নির্যাতন এবং শিশু ধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “কখনও কখনও নারীরা এমন আন্দোলনে অংশ নেন না, যেখানে তাদের থাকা প্রয়োজন।” এই বক্তব্যটি একদিকে যেমন নারীর অধিকার রক্ষার কথা বলে, তেমনি সমাজের সংকটময় সময়ে নারীদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপরও আলোকপাত করে।

খাদিজার বক্তব্যে উঠে এসেছে একদম নতুন রাজনৈতিক প্রশ্ন— আসলেই কি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, নাকি এটি সরকার বিরোধীদের দমন করার একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে? এই বিতর্কের পেছনে রয়েছে একটি বড় ধরনের সামাজিক এবং রাজনৈতিক লড়াই, যা শুধু আইন ও শাসনব্যবস্থা নিয়ে নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎও নির্ধারণ করতে পারে।

তথ্য জানতে চাওয়ায় সাংবাদিকদের মারধর

হাতে ইনজুরির চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ১:০৪ পূর্বাহ্ণ
হাতে ইনজুরির চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে এক রোগীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসা অবহেলার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। কারণ সামান্য হাতে ইনজুরির চিকিৎসায় কারো মৃত্যু হয়- এটা প্রথম দেখলাম।

পরিবারের সদস্য হুমায়ুন আহমেদ জানান, ‘গতকাল রাত ১০টায় হাতের ইনজুরি নিয়ে ওই রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন রাত ৪ টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে মৃত্যুর খবর দেয়। এরপর তারা বিস্তারিত জানতে চাইলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।’

নিহতের পরিবারের দাবি, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সমঝোতার প্রস্তাব দেয় এবং ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা করে। তবে মৃতের স্বজনরা প্রকৃত তথ্য জানতে চাইলেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে সঠিক তথ্য জানতে চাইলে তাদের তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। এমনকি দুর্ব্যবহার করে সাংবাদিকদের হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশেও বাধা দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই সময়ে ভেতরে মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ আলোচনা চালিয়ে যায় এবং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
এরপর যখন মৃতদেহ এম্বুলেন্সে ওঠানো হচ্ছিল, তখন সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়।

হামলায় আহত গণমাধ্যম কর্মীদের অভিযোগ, হাসপাতালে ওই ঘটনায় ১০-১২ জন ব্যক্তি সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ও মাইক্রফোন ভাঙচুর করে।

এ ঘটনায় কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। তারা হলেন-দৈনিক নিরপেক্ষ’র অনলাইন প্রতিবেদক মিছবাহ উদ্দিন, দৈনিক খোলা কাগজ প্রতিনিধি রেজাউল করিম সোহাগ, মাহবুব আলম, আজকের সংবাদ প্রতিনিধি পবিত্র চন্দ্র সরকার সহ বেশ কয়েকজন।

এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে হামলার শিকার গণমাধ্যমকর্মী মিছবাহ উদ্দিন জানান, ‘মৃত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা সেখানে যাই। কিন্তু হাসপাতালের লোকজন ভিতরে যেতে দেয়নি। পরে লাশ বের করার সময় ছবি তুলতে গেলে তারা আমাদের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায়। এমনকি তারা আমাদের মোবাইল, ক্যামেরা ভাংচুর ও ছিনিয়ে নেয়। তবে হামলার ভিডিও আমাদের কাছে রয়েছে। হাসপাতালের সিসি টিভিতেও থাকতে পারে। পরবর্তীতে সিনিয়রদের পরামর্শে থানায় অভিযোগ করেছি। আমাদের কথা পরিস্কার- আমরা হামলাকারীদের বিচার চাই।’

এ ঘটনায় সাংবাদিকেরা ইতোমধ্যে মোহাম্মদপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও বিস্তারিত আসছে…

জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার বহাল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ৮:৩০ অপরাহ্ণ
জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার বহাল

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার বহাল রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ২০০৩ সালে দেওয়া স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) সুপ্রিম কোর্টের যে রায়ের পটভূমিতে ২০১৬ সালে সরকার বাতিল করে, ওই রায়ে তাকে প্রদত্ত স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের কোনো নির্দেশনা না থাকায় মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অসাধারণ অবদান বিবেচনায় তার স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের এ সিদ্ধান্ত সরকার রহিত করেছে।

২০১৬ সালে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার। পরে জাতীয় জাদুঘর থেকে তার পুরস্কারের মেডেল ও সম্মাননাপত্র সরিয়ে ফেলা হয়।

এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একই বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

যেসব ব্যক্তিকে এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে:

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।

ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের লাঠিচার্জ

মহানগর প্রতিনিধি, ঢাকা
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ৮:২৪ অপরাহ্ণ
ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের লাঠিচার্জ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার সময় ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্লাটফর্ম সদস্যদের লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ প্লাটফর্ম সদস্যরা। পথে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে তাদের বাধা দেয় পুলিশ।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের তীব্র বাকবিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের দুই দফা লাঠিপেটা করে পুলিশ। পরে বিক্ষোভকারীরাও পুলিশের ওপর চড়াও হলে তাদের লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন।

বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্লাটফর্ম সদস্যদের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা তা না করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে রওনা দেন। তবে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশেপাশে সভা-সমাবেশের ওপর ১৪৪ ধারা জারি থাকায় তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে থামানো হয় এবং বলা হয় একটি ছোট প্রতিনিধি দল নিয়ে স্মারকলিপি দিতে।

তিনি বলেন, এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে এবং একজন পুলিশ সদস্যের ওপর চড়াও হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়।

এর আগে, দুপুর আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে যমুনা অভিমুখে রওনা হন। মিছিল থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমের পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দেন ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সব ধর্ষণকাণ্ডের বিচারের দাবি জানান তারা।