খুঁজুন
রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরের ঐতিহাসিক স্ট্যাটাস

ঢাবি শিবির সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনা করে ৯ দফা তৈরি হয় !

মোঃ হাসানুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ
ঢাবি শিবির সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনা করে ৯ দফা তৈরি হয় !

দেশের ইতিহাসে সুপার আন্দোলন হিসেবে স্বীকৃত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঘোষিত ঐতিহাসিক নয় দফা নিয়ে এবার মুখ খুললেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের। নয় দফা কিভাবে ঘোষণা হয়েছিল সে বিষয়ে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুক পেজে বিস্তর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন তিনি।

ওই পোস্টে আব্দুল কাদের লিখেছেন, ‘কোটা সংস্কারকে উদ্দেশ্য করে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল; কিন্তু সরকার পরিস্থিতি ঘোলাটে করলে আন্দোলন ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় নয় দফার অবতারণা হয়।

‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলাম; কিন্তু ১৬ তারিখ মঙ্গলবার আবু সাঈদসহ ৬ জন যখন শহীদ হন। ওইদিন রাত ১২ টায় সামনের সারির সমন্বয়করা মিলে আমরা একটা অনলাইন মিটিং করি। মিটিংএ প্রথম এজেন্ডাই ছিল আজকে যে ছয়জন শহীদ হলেন, এই ছয়টা লাশের বিনিময়ে শুধু কোটা সংস্কার কি না? তখন সবাই হই হই করে বলে উঠে, ছয়টা লাশের বিনিময়ে শুধু কোটা সংস্কার হতে পারে না। পরবর্তীতে দীর্ঘক্ষণ আলাপ আলোচনা করা হয়।’

‘এই আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিসহ আরো কিছু দাবি দাওয়া উঠে আসে। বলে রাখা ভালো, আমরা এতোদিন “বাংলা ব্লকেড” থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি পেশসহ নানান সফট এবং হার্ড কর্মসূচি নিয়ে মাঠে অবস্থান করেছিলাম; কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে একেবারে নির্বিকার-নির্লিপ্ত মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছিল। আলাপ-আলোচনার ধার ধারেনি সরকার, কেবল হাইকোর্টের কাঁধে বন্দুক রেখে চুপচাপ দেখে যাচ্ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি যখন বেগতিক হয়ে যায়, ৬ জন শহীদ হয়; ওইদিনই সরকার আলোচনার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দেয়, আমাদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ দিতে থাকে আলোচনায় বসার জন্য।
কিন্ত আমরা আলোচনার আহ্বানকে বরাবরের মতোই প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করি। যদিও ভিতর-বাহির থেকে আলোচনায় বসার নানারকম চাপ আসছিল।’

তিনি বলেন, ‘সরকার সংলাপের আহ্বান ফরমালি জানিয়েছিল কিন্ত সেটার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের অবস্থান ফরমালি ক্লিয়ার করিনি। ক্লিয়ার করার সুযোগও পাইনি। বুধবার গায়েবানা জানাযায় ঢাবি ক্যাম্পাসে পুলিশ আমাদের উপর গুলি চালায়, আমিসহ কয়েকজন আহত হই।

হান্নান মাসউদ গুলিবিদ্ধ হন। তখন থেকেই আমরা আন্দোলন পরিচালনা করে যাবার স্বার্থে কৌশলী অবস্থান নিয়ে গ্রেপ্তার এড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই। যদিও সরকারের সংলাপকে প্রত্যাখ্যান করে মঙ্গলবার রাতে আমরা কিছু দাবি দাওয়া ঠিক করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে সবাই মিলে আলাপ-আলোচনা করে যে সেই দাবিগুলো ফাইনাল করব সে সময় পাইনি। তবে আমরা বৃহস্পতিবার মাঠের কর্মসূচি (কমপ্লিট শাটডাউন) দিয়ে নিজেদের অবস্থান ক্লিয়ার করেছিলাম। বৃহস্পতিবার আমি আর আসিফ ভাই এক বাসা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভিন্ন ভিন্ন গন্তব্যে চলে যাই। ওইদিন ১৮ তারিখ রাতেই ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার। আমরাও কর্মসূচি চলমান রাখতে, গ্রেপ্তার এড়াতে বার বার জায়গা পরিবর্তন করে বেড়াচ্ছি। কারো সাথে তেমন কোনো যোগাযোগ করতে পারছি না।’

‘আন্দোলনের শুরুতেই নাহিদ ভাই আমাকে ডেকে নিয়ে এক লোকের সাথে মিট করায় এবং পরবর্তীতে আন্দোলনের পারপাসে একাধিকবার ওই লোকের সাথে যোগাযোগ হয়; পরবর্তীতে জানতে পারি তিনি ঢাবি শিবিরের ছাত্র আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। কিন্ত তখনো শিবিরের সভাপতি এবং সেক্রেটারির সাথে ওইভাবে যোগাযোগ হয়নি।’

‘শুক্রবার যাত্রাবাড়ি এলাকায় যখন আন্দোলন করছিলাম তখন শিবিরের ঢাবি সেক্রেটারি ফরহাদ ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, “আন্দোলনরত কয়েকজন সমন্বয়ক সরকারের মন্ত্রীদের সাথে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে, এতো এতো শহীদের রক্তের সাথে বেইমানী করতেছে তারা। আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে। কিছু দাবি-দাওয়া দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে, মানুষের সাথে বেইমানি করা যাবে না।” আমি সম্মতি জানাই। আমাদের তো আগেই অবস্থান ছিল আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার। তাছাড়া মঙ্গলবার রাতের মিটিংয়ে ঠিক করা কিছু দাবি দাওয়া আমার মাথায় আছে।’

‘আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার মতো মাঠে কোনো সিনিয়র নেই। আসিফ-নাহিদ ভাইকে গুম করে রেখেছে। আমি সাত-পাঁচ না ভেবে রিস্ক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ওইদিন জুমার নামাজের পর পরই যাত্রাবাড়ীতে কয়কজন শহীদ হন, সবগুলা আমার চোখের সামনেই ঘটতেছে। মানুষকে পাখির মতো গুলি করে মেরে ফেলছে, এটা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। তাছাড়া দীর্ঘদিন জেল-জুলুম, হামলা-মামলার শিকার হয়ে হাসিনার এমন অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছি; মাথা নত করিনি। আমার পরিণতি কি হবে, সেটা ঘুনাক্ষরেও কল্পনা করিনি। চোখের সামনে মানুষ মেরে ফেলছে, মানুষের কথা চিন্তা করে নিজের জীবনের কথা ভাবার সময় পাইনি। গত ৪/৫ বছর ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই আমাদেরকে দৃঢ়তা ধরে রাখার শিক্ষাই দিয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে হাল ধরার সিদ্ধান্ত নিই।’

‘যাইহোক, কিছুক্ষণ বাদে শিবিরের সেক্রেটারি আমাকে আবারো ফোন দিলেন। বলছেন, “কিছু দাবি দাওয়া খসড়া আকারে করছি, তোমার সাথে আলোচনা করি”৷ আমাদেরও যেহেতু আগেই আলোচনা হয়েছিল অনেকগুলো দাবির ব্যাপারে সেগুলো তখন উনার সাথে আলোচনা করে সমন্বিতভাবে তৈরী হয় ৯ দফা।’

‘তিনি একে একে কিছু দাবি বললেন। যেগুলা খুব কমন দাবিদাওয়া- যেমন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, ছাত্র হত্যার সাথে জড়িত পুলিশ প্রশাসনকে বরখাস্ত, সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনা, ভিসি’র পদত্যাগ। যেগুলা ৬ জন শহীদ হওয়ার পরে মঙ্গলবার রাতের বৈঠকের আলোচনাতেই আমরা ভেবেছিলাম। এছাড়া মানুষজনও সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কিছু দাবিদাওয়া জানিয়ে আসছিল। শেষের দিকে গিয়ে শিবিরের সেক্রেটারি একটা দাবি এড করলেন, “ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে” এটা আমি মানি নাই, দীর্ঘক্ষণ আলাপ আলোচনা হল। পরে আমি বললাম, ঢালাওভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা যাবে না, এক্ষেত্রে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলতে পারেন। পরে সেটাই ঠিক হল, “লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে”।

‘এই হইলো নয় দফা তৈরির পেছনের গল্প। তবে নয় দফা প্রচার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল শিবির। যেহেতু নেট নেই, গোলাগুলি-কারফিউয়ের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সশরীরে হাউজে হাউজে পৌঁছে দিয়েছে, বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা তারাই করেছে।’

‘আমাকে নতুন একটা সীম এবং মোবাইল কালেক্ট করার পরামর্শ দিল তারা। আমি স্টুডেন্টের বাসা থেকে সীম নিয়ে ওই নম্বরটা নয় দফা সংবলিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির সাথে দিয়ে দিলাম। ওইদিন সন্ধ্যায় বাসা থেকে ৪-৫ কিলো দূরে হেটে গিয়ে পরিচিত সাংবাদিকদেরকে ফোন দিয়ে নয় দফার বিষয়টা জানালাম। টুকটাক ছাত্র রাজনীতি করার সুবাদে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের সাথে আমার পরিচয় ছিল। তো ওই রাতে তাদের অনেককে একটা একটা করে দফা বাটন ফোন দিয়ে ম্যাসেজের মাধ্যমে দাবিগুলা লিখে পাঠাইছি। পুরা নয়টা দাবি একসাথে ম্যাসেজে পাঠানো যায় না। কাউকে আবার মুখে বলে দিয়েছি, সে লিখে নিয়েছে। কেউ আবার রেকর্ড করে নিয়েছেন। কনফার্ম হওয়ার জন্য অনেকেই ফোন দিয়েছেন, এটা আসলেই আমি দিয়েছি কি না। বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলাকেও ফোন দিয়ে কনফার্ম করতে হয়েছে, ‘আমার পক্ষ থেকে এটা যাচ্ছে, আপনাকে একজন পেনড্রাইভের মাধ্যমে পৌঁছে দেবেন।’ এইভাবে চলল রাতের ১১ টা পর্যন্ত।’

‘প্রতিদিন রাতের বেলায় বাসা থেকে দূরে চলে যেতাম। ফোন অন করে সাংবাদিকদের সাথে ২-৩ ঘন্টা কথাবার্তা বলে, তাদেরকে কনফার্ম করে, ফোন বন্ধ করে আবার বাসায় ফিরতাম। সিনিয়ররা গুম অবস্থায় ছিল, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না বাকিদের সাথেও। এইভাবেই চলতে থাকল। আমার বাসা ছিল যাত্রাবাড়ী থানার পাশেই। গ্রেপ্তারের আতঙ্ক, তারপরও বাসায় থাকতে হতো। শুরুতেই যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। কোনো রাত মসজিদে কাটিয়েছি, কোনো রাত অর্ধেকটা বাইরে কিংবা বাসার ছাদে কাটিয়ে শেষ রাতে বাসায় ফিরেছি।’

‘এইতো ঐতিহাসিক নয় দফা, আমাদের নয় দফা, ফ্যাসিস্ট হাসিনা থেকে মুক্তি লাভের সনদ!’

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবের পদ হারানোর গুঞ্জন

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১:৪৯ অপরাহ্ণ
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবের পদ হারানোর গুঞ্জন

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার খবর ভিত্তিহীন ও অসত্য বলে জানিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদ। এ ধরনের গুজবে কান না দিতে এবং বিভ্রান্ত না হতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন।

সে কারণে তিনি আপাতত দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন না। তবে তিনি আগামী রবিবার থেকে পুনরায় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। তাঁর দ্রুত সুস্থতার জন্য সব নেতাকর্মী ও সমর্থকদের দোয়া কামনা করা হচ্ছে।’
এ ছাড়া শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয় রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে ছাত্রদল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এসব খবরে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। এমন অবস্থায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

যেসব কারণে পতন হলো ফারুক আহমেদের

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১:৪২ অপরাহ্ণ
যেসব কারণে পতন হলো ফারুক আহমেদের

বিতর্কিত বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পলায়নের পর নতুন আশা নিয়ে বিসিবি সভাপতি হন ফারুক আহমেদ। অথচ মাত্র ৯ মাস ৮ দিন- এটাই ছিল ফারুক আহমেদের বিসিবি সভাপতির মেয়াদ। গত বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) তার কাউন্সিলর মনোনয়ন বাতিল করলে কার্যত তার সভাপতির পদও শূন্য হয়ে যায়। পরদিন, শুক্রবার পরিচালকদের জরুরি সভায় আমিনুল ইসলাম বুলবুল নির্বাচিত হন নতুন সভাপতি হিসেবে। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে- কেন এত অল্প সময়ে পদচ্যুত হলেন ফারুক আহমেদ?

এ নিয়ে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে খতিয়ে দেখা হয়েছে, ফারুকের রাজত্ব শেষের পিছনে কোন কোন কারণ কাজ করেছে:

বিপিএল-২০২৫ দুঃশাসনের প্রতিচ্ছবি:

ফারুক আহমেদের পতনের সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে চলতি বছরের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এর দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা।

বিশেষ করে দুর্বার রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা, খেলোয়াড়দের বেতন না দেওয়া, হোটেল বিল বকেয়া রাখা এবং শেষ পর্যন্ত খেলোয়াড় বিদ্রোহ- এ ঘটনাগুলো সরকারকে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য করে।

তৎকালীন বোর্ড সভাপতি হিসেবে এসব ঘটনায় কার্যকর কোনো সমাধান দিতে না পারা ফারুককে প্রশাসনের নজরে ফেলে দেয়। এমনকি দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজে এই বিষয়গুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। বিপিএলের ফাইনালে তার অনুপস্থিতিও রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে ধরা হয়, যার প্রভাব পড়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের অবস্থানের উপরেও।

স্বেচ্ছাচারিতা ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন:

বোর্ড পরিচালকদের একটি বড় অভিযোগ ছিল, ফারুক বিসিবির গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন।

বিশেষ করে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পরিচালকদের না জানিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। বিসিবি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এমন বড় সিদ্ধান্তের আগে পরিচালকদের মতামত নেওয়া বাধ্যতামূলক।

এর বাইরে কিছু সিদ্ধান্তে ফারুক ঘনিষ্ঠ কয়েকজন পরিচালককে উপেক্ষা করেছেন, যার ফলে বোর্ডের ভেতরেই দলাদলির সৃষ্টি হয়।

ভেতরের কোন্দল: ফাহিম বনাম ফারুক:

বোর্ড পরিচালক এবং এনএসসি মনোনীত প্রতিনিধি নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আরও একধাপ বাড়িয়ে দেয় পরিস্থিতি। এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে এবং বোর্ডের ঐক্য বিনষ্ট হয়। এমনকি, ফারুক আহমেদ ক্রীড়া উপদেষ্টার সহকারী একজন কর্মকর্তার সঙ্গেও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়ান, যা প্রশাসনিক মহলে ভালোভাবে নেওয়া হয়নি।

নির্বাচন নিয়ে ‘অতিরিক্ত আগ্রহ’, আস্থা হারান বোর্ডে:

অন্য এক বড় কারণ ছিল, ফারুক আহমেদের অক্টোবরে সম্ভাব্য বিসিবি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ। সম্প্রতি এক ইউটিউব সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে চান। এই অবস্থান তার সহকর্মী পরিচালকদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করে এবং অনেকে মনে করেন, তিনি বোর্ড পরিচালনার চেয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান তৈরিতেই বেশি মনোযোগী ছিলেন।

এনএসসি ও প্রশাসনের চূড়ান্ত পদক্ষেপ:

৮ জন পরিচালক আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানানোর পর এনএসসি একটি স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। রিপোর্টে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বের ঘাটতির সরাসরি দায় বর্তায় ফারুকের ওপর।

ফারুক আহমেদ ছিলেন একজন সাবেক অধিনায়ক, ক্রিকেটার ও অভিজ্ঞ সংগঠক। কিন্তু সভাপতির চেয়ারে বসার পর তার আচরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি, আর প্রশাসনিক দক্ষতার অভাবই শেষ পর্যন্ত তাকে বিসিবি থেকে সরিয়ে দেয়।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে আমিনুল ইসলাম বুলবুল দায়িত্ব নিয়েছেন এ অস্থির সময়েই। তারও সামনে রয়েছে দল পুনর্গঠন, স্বচ্ছতা ফেরানো ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ।

ফারুকের পতন, তা যতই নাটকীয় হোক না কেন, ক্রিকেট প্রশাসনে আবারও এক কঠিন বাস্তবতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

চিকিৎসকের পরামর্শে পূর্ণ বিশ্রামে আছেন ছাত্রদল সভাপতি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১:২৯ অপরাহ্ণ
চিকিৎসকের পরামর্শে পূর্ণ বিশ্রামে আছেন ছাত্রদল সভাপতি

শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব চিকিৎসকের পরামর্শে পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ফলে তিনি গত দুদিন ধরে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।

শুক্রবার (৩০ মে) রাতে ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি মর্যাদা) জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জাহাঙ্গীর আলম জানান, আগামী রোববার থেকে তিনি (সভাপতি) পুনরায় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন, ইনশাআল্লাহ। তিনি সব নেতা-কর্মী ও সমর্থকের কাছে শারীরিক সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদল সভাপতির শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের যেকোনো ধরনের গুজব থেকে সতর্ক থাকার জন্য কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলো।

উল্লেখ্য, বিএনপির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে-এমন গুঞ্জন সংগঠনটির অভ্যন্তরে ও বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে।