খুঁজুন
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ পৌষ, ১৪৩১

চীনের ‘নতুন মহাপ্রাচীর’, নেপালে শঙ্কার ছায়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
চীনের ‘নতুন মহাপ্রাচীর’, নেপালে শঙ্কার ছায়া

সম্প্রতি নেপালের হুমলা জেলায় চীনের বিরুদ্ধে সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনগণ বলছেন, চীনের এই কর্মকাণ্ড তাদের জমি ও জীবনযাত্রার ওপর হুমকি সৃষ্টি করছে। তিব্বত ও নেপালের মধ্যে থাকা এই সীমান্তে চীনা বাহিনী প্রাচীর ও কাঁটাতারের বেড়া তৈরি করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নজরদারি ক্যামেরা ও সশস্ত্র প্রহরী।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এ খবর জানিয়েছে। এলাকাটি তিব্বতের উচ্চ মালভূমিতে অবস্থিত। সেখানে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থনে একটি বিশাল বার্তা লেখা রয়েছে: ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টি দীর্ঘজীবী হোক’। এটি ৬০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি পাহাড়ের ওপর খোদাই করা, যা মহাকাশ থেকে দৃশ্যমান।

নেপালের নেতারা এই সমস্যাগুলোকে স্বীকার করতে নারাজ। চীনের অর্থনৈতিক ও আদর্শিক প্রভাবের অধীনে থাকায়, নেপাল সরকার ২০২১ সালের একটি প্রতিবেদনের সুপারিশ অগ্রাহ্য করেছে। ওই প্রতিবেদনে হুমলায় সীমান্ত লঙ্ঘনের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছিল।

২০২১ সালে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, জরিপকারীরা ও পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে একটি পরিদর্শন দল গঠন করা হয়। তারা ১৯৬০ সালের মানচিত্র ব্যবহার করে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। প্রতিবেদনে চীনের সামান্য অগ্রসরতার কথা উল্লেখ করা হয়। তবে এর চেয়েও বড় বিষয় ছিল চীনের ভৌগোলিক কৌশলগত উদ্দেশ্য নিয়ে উদ্বেগ।

চীনের সরকার নিজেদের শান্তির প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে। গত বছর চীনের ন্যাশনাল এথনিক অ্যাফেয়ার্স কমিশনের প্রধান প্যান ইউয়ে বলেন, ‘চীন কখনও প্রতিবেশী দেশগুলোকে উপনিবেশ বানায়নি।’

তবে ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা। ১৯৭৯ সালে চীন ভিয়েতনামে অস্থায়ীভাবে আক্রমণ চালায় এবং ভারত-চীনের মধ্যে সীমান্ত যুদ্ধ হয়েছে। তিব্বতের সুরক্ষা ও আধুনিকীকরণের নামে চীন সেখানে অবকাঠামো গড়ে তুলেছে।

হিলসার সীমান্তবর্তী এলাকা দুই দেশের পৃথক জগৎকে আলাদা করে রেখেছে। তিব্বতের দিকে আধুনিক ভবন ও সুরক্ষিত সড়ক থাকলেও নেপালের অংশে কাঠের ঘর ও বিদ্যুৎহীন অবস্থা বিরাজমান।

জেলার বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, সীমান্তের কয়েকটি স্থানে চীন নেপালের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। তারা আরও জানিয়েছেন, চীনা নিরাপত্তা বাহিনী নেপালের তিব্বতি জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতা রোধ করছে, বিশেষ করে দালাই লামার ছবি প্রদর্শনে বাধা দিচ্ছে। এছাড়া, চীনা সুরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে তিব্বতের শরণার্থীদের নেপালে পালিয়ে আসা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

নেপালের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন.পি. সাউদ বলেন, ‘সীমান্তের বিষয় কোনও গোপনীয়তা নয়’। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পরবর্তীতে নেপালের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু রানা দেবা বলেন, তিনি চীনের বেড়া স্থাপন বা হুমলার প্রতিবেদন সম্পর্কে অবগত নন।

ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের চায়না পাওয়ার প্রজেক্টের একজন ফেলো ব্রায়ান হার্ট বলেন, চীন যদি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ তৈরি করে সুবিধা নিতে থাকে, তাহলে তা অন্যান্য দেশকে হুমকির মুখে ফেলবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নেপালের উচিত সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করা এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো খোলাসা করা। নেপালের মতো ছোট দেশগুলোর পক্ষে চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কঠিন, তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমর্থন পেলে এ ব্যাপারে সমাধানের পথে এগোনো সম্ভব হতে পারে।

রাজধানীর মগবাজারে ট্রেনের ধাক্কাই এক যুবকের মৃত্যু

আব্দুল্লাহ আল মোত্তালিব, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:৫১ অপরাহ্ণ
রাজধানীর মগবাজারে ট্রেনের ধাক্কাই এক যুবকের মৃত্যু

রাজধানীর মগবাজার রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মোঃ আপন (২২)নিহত হয়েছে। নিহত আপন কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী উপজেলার মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে। বর্তমানে মগবাজার এলাকায় ভাড়া থাকতো।

শনিবার(২১ ডিসেম্বর)সন্ধ্যা সোয়া ৫টা নাগাদ অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী সোহাগ বলেন, আজ বিকেলের দিকে মগবাজার রেল ক্রসিং পারাপারের সময় কমলাপুরগামী একটি ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় ওই যুবকটি।পরে দ্রুততাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান ওই যুবকটি আর বেঁচে নেই।

তিনি আরও বলে,
আমরা ওই যুবকের পকেটে থাকা কাগজে লেখা মোবাইল নাম্বারে তার পরিবারের সাথে কথা বলে তার নাম পরিচয় জানতে পেরেছি। পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ ফারুক হোসেন, ওই যুবকের মরদেহ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশকে জানিয়েছি।

আগে একদল সড়কে দুর্নীতি করত এখন করছে অন্যদল: উপদেষ্টা নাহিদ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৫৩ অপরাহ্ণ
আগে একদল সড়কে দুর্নীতি করত এখন করছে অন্যদল: উপদেষ্টা নাহিদ

সড়ক ও পরিবহন খাতে দুর্নীতির সঙ্গে পলিটিক্যাল প্রভাব জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কের নৈরাজ্যের সাথে একটা পলিটিক্যাল প্রভাব জড়িত। সড়ক ও পরিবহণ খাতে আগে একদল দুর্নীতি করত এখন অন্যদল করছে। এটা খুব সহজে সমাধান হবে না। তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। দুর্নীতির সঙ্গে যেহেতু রাজনৈতিক কর্মী ও নেতারা জড়িত তাই সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা রাখতে হবে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সার্কিট হাউস সংলগ্ন প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত সড়ক পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। দিনব্যাপী এ সংলাপে সড়ক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও পরিবহণ সেক্টরের অংশীদারজনও উপস্থিত ছিলেন।

এ-সময় নাহিদ বলেন, বুয়েটের একজন মারা গেল। একটা ধারণা যে সমাজের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে যারা আছেন তাদের বিচার হয় না, জবাবদিহিতা হয় না। এখানে সাধারণ মানুষদের জীবনটাই আসলে যায়। এই চিত্র আমাদের সমাজে আছে। এটার পরিবর্তন দরকার। সবাইক বিচারের আওতায় আনা দরকার। এখানে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। উন্নয়ন নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, এখন রাস্তায় বের হয়ে মানুষ মারা গেলে সেটাকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। কারণ এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কারণে হচ্ছে। এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে রাস্তায় মানুষ বের হলে মানুষ মারা যেতে পারে৷ এখানে ব্যবস্থাপনাতেই সমস্যা রয়েছে। যে ধরনের প্রতিষ্ঠান সড়কের নিরাপত্তা দিতে পারে সেটাই তৈরি হয়নি।

পরিবহণ সেক্টরের দুর্নীতি চলমান আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের দল দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল আবার এখন আরেক দল রয়েছে। এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা প্রয়োজন। কারণ রাজনৈতিক কর্মীরাই এগুলোত জড়িত।

জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা পরিবহণ সমন্বয়ক কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক আরমানা সাবিহা হকসহ অন্যান্যরা।

অবৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে দিল্লির সব স্কুলে নির্দেশনা জারি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৪৯ অপরাহ্ণ
অবৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে দিল্লির সব স্কুলে নির্দেশনা জারি

কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েনের আঁচ এবার শিক্ষার্থীদের ওপরও লাগছে। অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী শিক্ষার্থীদের শনাক্তে ভারতের রাজধানী দিল্লির সব স্কুলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের পরিচয় যথাযথভাবে শনাক্তও যাচাইয়ের বিষয়টিও আছে নির্দেশনাতে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিল্লি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (এমসিডি) জারি করা ওই নির্দেশনাটি প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লি সরকারের প্রধান সচিবের (গৃহ বিভাগ) সভাপতিত্বে গত ১২ ডিসেম্বর এমসিডি একটি ভার্চুয়াল সভা আয়োজন করে। এতে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে স্কুলে তাদের শনাক্তকরণ ও তাদের জন্ম সনদ না দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এছাড়া কোনও অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে জন্ম সনদ না দেওয়ার ব্যাপারে দিল্লির জনস্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমসিডি তাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে এবং সঠিক পরিচয় ও যাচাইকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনারও নির্দেশ দিয়েছে।

এমনকি যেসব জায়গায় এই অভিবাসীরা অন্যের জমি বা জায়গা দখল করে রেখেছে, সেগুলো খালি করে দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।

ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া কঠিন। কারণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাজ্য তাদের নিজস্ব রেকর্ড রাখে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে অল ইন্ডিয়া সার্ভে ফর হায়ার এডুকেশনের ২০২১-২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ৬০৬ জন শিক্ষার্থী ভারতে উচ্চশিক্ষার জন্য গেছেন।

শিক্ষার্থীদের আগে নয়া দিল্লিতে থাকা অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরতেও পুলিশ অভিযানে নেমেছিল।

বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর কয়েকদিন পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর থেকেই ঢাকা ও নয়া দিল্লির সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না।

এরপর তা আরও নাজুক হয়ে পড়ে গত নভেম্বরে হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তার হওয়ার পর। তার প্রতিবাদে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় এক বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশ মিশনে হামলা হয়। অন্যদিকে ভারতবিরোধী বিক্ষোভ বাংলাদেশেও চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।