খুঁজুন
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০ পৌষ, ১৪৩১

খাদ্যপণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে সরকারকে আরো উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪, ২:২৩ পূর্বাহ্ণ
খাদ্যপণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে সরকারকে আরো উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান

বাজারে চাল, ডাল, সবজি, মাছ-মাংস ও ডিমের সরবরাহ ঠিক রাখতে হলে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় এবং প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ নিরসনে সরকারের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

রবিবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেরপুর, নেত্রকোনাসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলে বন্যায় এবং প্রবল বর্ষণে কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন একটা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যায় যেভাবে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক তৎপরতা দেখা দিয়েছিল সেটি বর্তমানে দেখা যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষক ও খামারিদের অতি দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। বন্যা উপদ্রুত মানুষ ও তাদের পরিবারের দুরাবস্থার বিষয়টি সরকারকেই প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে। বাজারে চাল, ডাল, সবজি, মাছ-মাংস ও ডিমের সরবরাহ ঠিক রাখতে হলে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। সার, কীটনাশক ও বীজের সরবরাহ বাড়িয়ে কিংবা প্রণোদনা দিয়ে কৃষক ও খামারিদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক রাখতে ক্ষতিগ্রস্ত আবাসন পুনর্নির্মাণ, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ ও পুষ্টির মতো অতি প্রয়োজনীয় সেবাগুলোর ঘাটতি যাতে না হয়, সেটি বিবেচনা করে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এ বন্যাজনিত সংকটে শিশুরা যাতে অপুষ্টিতে না ভোগে সেজন্য সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বন্যা পরবর্তী অসুস্থতা ও পানিবাহিত রোগ নিরাময়ে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহের বিষয়ে সরকারকে কর্ম তৎপর হতে হবে।

রিজভী বলেন, ভয়াবহ বন্যায় শেরপুর ও নেত্রকোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রোপা আমন ও সবজি চাষিরা। সরকারি সূত্র থেকে জানা যায়, শুধুমাত্র নেত্রকোনা জেলার পাঁচ উপজেলায় ২০ হাজার ৯০৯ হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে ৭০ হাজারের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে সবজি চাষের ক্ষতি হয়েছে ১৬০ হেক্টর জমির। এতে পাঁচ ৩২০ কৃষকের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। প্রায় এক হাজার ৭৩০টি পুকুর এবং মৎস্য খামার ডুবে গেছে। টাকার অংকে যার পরিমাণ আট কোটি টাকা। শেরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এক লাখ ৭৭ হাজার ৮০ জন কৃষক। এ বছর ৯৫ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছিল, তার মধ্যে ৩৭ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমির ফসল বন্যায় নষ্ট হয়েছে।

এ সময়ে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী। দাবিগুলো হলো: বন্যার পানিতে যাদের জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে তাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে আগামী ফসল না উঠা পর্যন্ত তাদের সর্বাত্মক ত্রাণ সহায়তা দেওয়া, আগামী ফসলের জন্য সুদমুক্ত কৃষি ঋণ দেওয়া ও বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক, সেচের তেলের ব্যবস্থা করা। আগামী ফসলের আগে রবি শস্য উৎপাদনের জন্য তাদের মধ্যে রবি শস্যের বীজ দেওয়া। বন্যার পানিতে যেসব মৎস্য, হাঁস-মুরগি, গবাদি পশুর খামার বিনষ্ট-মৎস্য, হাঁস-মুরগি গবাদি পশু ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের সঠিক তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে পুনরায় খামার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের সুদমুক্ত ঋণসহ অন্যান্য সহায়তা দেওয়া।

এছাড়া বন্যার পানিতে যাদের বাড়ি-ঘর আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের তালিকা তৈরি করে ঘর-বাড়ি পুনঃনির্মাণে সহায়তা দিতে হবে, নদীর বাঁধ ভেঙে যেসব গ্রাম-পাড়া-মহল্লা বিলীন হয়ে গেছে, সেসব স্থানে বসবাসকারীরা বর্তমানে উদ্বাস্তু হয়ে গেছে, তাদের সরকারি খাস জমিতে/আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তরিত করা। যেসব বাঁধ, রাস্তা, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে, সেগুলো সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করা। বন্যার পানিতে যেসব ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সামগ্রী বিনষ্ট হয়ে গেছে, তাদের সরকারি উদ্যোগে শিক্ষা সামগ্রী ও সহায়তা দেওয়া। বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে রোগ-বালাইগ্রস্ত মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা দিতে হবে।

দীর্ঘদিনের সংগ্রামী রাজপথে পেরিয়েছেন বহু চড়াই-উৎরাই

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন লক্ষ্মীপুরের এনামুল হক শান্ত

মোঃ হাসানুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ
ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন লক্ষ্মীপুরের এনামুল হক শান্ত

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে বহুল আলোচিত ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন এই কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের ত্যাগী নেতা, লক্ষ্মীপুরের কৃতি সন্তান এনামুল হক শান্ত। শান্ত ঢাকা কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী।

শান্ত ঢাকা কলেজ ছাত্রদলে শুরু থেকেই জনপ্রিয় ও পরিচিত মুখ। শিক্ষার্থী বান্ধব কর্মকান্ডের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থী সহ সকলের মাঝেই তার আলাদা গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। কারণ ঢাকা কলেজে এইচএসসি ভর্তি হবার সুবাদে রয়েছে আলাদা পরিচিতি। পরবর্তীতে সমাজবিজ্ঞানে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পূর্ণ করেন ঢাকা কলেজ থেকেই।

দীর্ঘ রাজনীতি জীবনের প্রেক্ষাপটে শান্ত পেয়েছেন একাধিক দায়িত্ব। কারণ তার রাজনেতিক জীবনের পুরোটাই তো দিয়েছেন ঢাকা কলেজ ছাত্রদলে। এমনকি বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার শাসনামলে যখন দলের অনেকেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আসতো না। ঠিক ওই সময়ে শান্ত’রা কলেজ ফটকে তালা ঝুলানো সহ কঠিন সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতেন। যার কারণে ত্যাগী ও সাহসীদের মূল্যায়ন হয়তো স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে।

২০২৪ এর এই কমিটিতে এনামুল হক শান্ত পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব। এর বাইরেও শাখা ছাত্রদলের আখতারুজ্জামান ইলিয়াস হল সভাপতি হিসেবেও দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ইতোপূর্বে শাহীন-জুলহাস কমিটিতে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন শান্ত। তারও আগে মাসুদ-সজীব কমিটিতে দায়িত্বে ছিলেন সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দেয়া হয়। যেখানে পিয়াল হাসান কে আহ্বায়ক এবং মোঃ মিল্লাত হোসেন কে সদস্য সচিব করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হলো।

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পদ বঞ্চিতদের বিক্ষোভ

মহানগর প্রতিনিধি, ঢাকা
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:২২ অপরাহ্ণ
ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পদ বঞ্চিতদের বিক্ষোভ

সম্প্রতি আজ বিকেলেই ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদলের ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি। এরপরই কমিটিতে স্থান না পাওয়া অন্যান্য নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এমনকি তারা দাবি করছেন, ঘোষিত এই আহ্বায়ক কমিটিতে ৩-৪ জন ছাত্রলীগ কর্মীও রয়েছেন। অথচ যোগ্যরা স্থান পায়নি।

পরে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে সড়কে এসে অবরোধ করেন। এ সময় তাদের আগুন জ্বেলে বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা গেছে। এর ফলে সন্ধ্যার পর বেশকিছু সময় সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক জামিল গণমাধ্যমে বলেন, গত ১ মাস আগে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সেক্রেটারি নাছিরের এলাকার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে সায়েন্সল্যাব থেকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করছিলাম। পরে সে নিজে এসে থানা থেকে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। সেই ক্ষোভের কারণে আমাকে ও আমার সহযোদ্ধাদের কমিটি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ঢাকা কলেজের ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট যে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সেখানে ৩-৪ জন ছাত্রলীগ কর্মী আছে।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি তাসবিরুল ইসলাম বলেন, শুধু আমি নয় দীর্ঘদিন যারা রাজপথে ছিল, আন্দোলন করেছে, কারা নির্যাতিত হয়েছে তাদের এই কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সেক্রেটারি নিজস্ব লোকদের নেতা বানানোর জন্য এবং সেই কমিটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য তারা তাদের অনুগতদের দিয়ে কমিটি করেছে। এ কমিটি আমরা মানি না।

তিনি বলেন, আমরা গত ১৬ বছর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। সেই আন্দোলন আমরা আমাদের জীবনের সবকিছু দিয়ে আন্দোলন করেছি। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমরা এই অবৈধ কমিটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ন্যায্য অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালবে।

এর আগে, বিকেলে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসিরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদল, ঢাকা কলেজ শাখার ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে কলেজের বাংলা বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পিয়াল হাসানকে আহ্বায়ক এবং ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মিল্লাদ হোসেনকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।

এছাড়া আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্যও এতে নির্দেশে দেওয়া হয়েছে।

বিবাহিত-অছাত্রদের পদ দেয়ার অভিযোগ

বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:১৯ অপরাহ্ণ
বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিক্ষোভ

দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আজ বিকেলেই ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি। এরই মধ্যে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিকে “অছাত্র, অনিয়মিত ও বিবাহিত” নিয়ে পকেট কমিটি’ আখ্যা দিয়ে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে ছাত্রদলের বৃহৎ একটি অংশ। এমনকি সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরাট একটি অংশ এমনটাই বলছে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বাঙলা কলেজ শাখায় মোখলেছুর রহমানকে আহ্বায়ক ও ফয়সাল রেজাকে সদস্য সচিব করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঠিক তার পরই সন্ধ্যায় কলেজের গেট থেকে প্রধান সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে শাখা ছাত্রদলের পদ বঞ্চিত বড় একটি অংশ।

কমিটিতে স্পষ্ট অনিয়মের কথা উল্লেখ করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা বলেন, “বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের যেসকল নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রামে নিজের জীবনকে উপেক্ষা করে দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে, আজ সেই সকল নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে অনিয়মিত ও শাখা ছাত্রদলের ব্যানারে আন্দোলন না করা কর্মীদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এমনকি বিবাহিত লোককেও বড় পদে বসানো হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে যারা সর্বাধিক কারাভোগ করেছে তাদেরকেও রাজনীতি থেকে মাইনাস করার একটি পাঁয়তারা হিসেবে এ কমিটি দেওয়া হয়েছে। যা রীতিমতো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে অপদস্ত করার শামিল।”

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কমিটিতে পদ পাওয়া একাধিক নেতা বলেন, “দেশ ও জাতি গঠনে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে তার বিন্দুমাত্র উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারবে না এই কমিটি। বরং ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের গৌরবোজ্জ্বল ইমেজকে নষ্ট করে বিভেদের সৃষ্টি করবে এ কমিটি। আমরা এ কমিটিতে থাকতে চাই না। কারণ যেখানে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বিবাহিত লোককে নেতা বানানো হয়। সেই কমিটি আজ হোক, কাল হোক বিতর্কিত হবেই।”

আগের কমিটিতে সদস্য পদে থাকা কিছু কর্মী অভিযোগ করেন, “কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন শাখা কমিটিতে নিজেদের পছন্দের লোক বসাতে গিয়ে ত্যাগীদের সাথে তামাশা শুরু করেছে। এভাবে চলতে থাকলে ত্যাগীরা দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। আর ওই সময়ে আওয়ামিলীগ আবারও সুযোগ নিবে।”

বাঙলা কলেজের পাশেই দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত এক ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘একটা দীর্ঘ সময় পর আমাদের আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। অথচ এই কমিটিতে বিগত দিনে যারা আন্দোলন সংগ্রামে জীবন বাজি রেখে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে থেকেছে, তাদের বাদ দিয়ে নিজস্ব মাইম্যান সেটাপ করতে সিন্ডিকেট করে পকেট কমিটি গঠন করেছে। কারণ বাঙলা কলেজের সবচেয়ে অ্যাক্টিভ নেতাকর্মীদের অধিকাংশই কমিটিতে রাখা হয়নি। বরং ছাত্রলীগ থেকে ৫ তারিখের পর ছাত্রদলে যোগ দেওয়া হাইব্রিড ছেলেদের কমিটিতে রাখা হয়েছে। এমনকি কেউ কেউ বাঙলা কলেজের ছাত্র না হয়েও এই কমিটিতে স্থান পেয়েছে। সুতরাং এই কমিটি আমরা ৪৫ দিন তো দূরের কথা, একদিনও মানি না। এই সুবিধাবাদ পকেট কমিটি আমরা প্রতাক্ষাণ করছি।”

বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করা অসংখ্য ছাত্র ও কর্মীরা বলেন, “যারা আন্দোলন সংগ্রামে ব্যানার ধরার জন্য দ্বিতীয় ব্যক্তি খুঁজে পেত না, তারা এখন নেতা। যারা ছাত্রলীগ করে ৫ তারিখের পরে ছাত্রদলে ইনক্লুড হয়েছে, সেও কমিটিতে এসেছে। আমরা এ কমিটিকে মানি না। আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের কাছে দাবি জানাই অযোগ্যদের নিয়ে ঘোষিত এ কমিটিকে বাতিল করে যারা সবচেয়ে বেশি ত্যাগ শিকার করে ছাত্রদলের পতাকাকে সমুন্নত করেছে তাদের এবং ক্যাম্পাসে রানিং শিক্ষার্থীদের আস্থাভাজন তাদের হাতে বাঙলা ছাত্রদলের নেতৃত্ব দেওয়া হোক। অন্যথায় এই বিভাজন বৃহত্তর আন্দোলনে প্রভাব ফেলবে।”

মূলত মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অন্যান্য শাখার সাথে সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের আংশিক এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশও প্রদান করা হয়। এরই মধ্যে কমিটিকে বিতর্কিত বলে প্রত্যাক্ষাণ করে প্রতিবাদী মিছিল করলো শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।