‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ উদযাপন প্রসঙ্গে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
![‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ উদযাপন প্রসঙ্গে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ](https://bdnews999.com/wp-content/uploads/2025/02/hq720.jpg)
জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে’ এই বাক্যের অর্থ কোনো অবস্থাতেই ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ নয়।
তিনি বলেন, আমার জানা মতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এই দিবসটাকে ‘ভালোবাসা দিবস’ এ রকম কোনো নামে সাধারণত নামকরণ করা হয়নি। দুর্ভাগ্যজনক বাস্তবতা হলো আমাদের সমাজে এটা ‘ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি একটি টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
আহমাদুল্লাহ বলেন, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন একজন ধর্মযাজক। তার সঙ্গে কী ঘটেছিল এবং কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টানরা পরবর্তীতে কী উদযাপন করেছে, কী ধারণ করে রেখেছে; সেই আলাপ আমরা গুগল করলে, অনলাইন ঘাটলে নিশ্চয়ই আমরা জানতে পারব।
এই দিবসের ইতিহাস নিয়ে তিনি বলেন, এরকম একটা বিষয়কে নিছক ভালাবাসার মতো একটি সেক্যুলার শব্দ, যে শব্দটি কোনো ধর্মের মানুষের নয়। সেরকম একটি শব্দের মোড়ক দিয়ে সবার কাছে গলদকরণ করানো- আমি মনে করি এটা এক ধরনের অসাধুতা, অন্তত এটা একটা ভুল তথ্য। যদি আপনি এটাকে ‘ভালোবাসা দিবস’ বলেন, তাহলে আমার প্রশ্ন হলো-১৪ ফেব্রুয়ারি বা সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে, এই তারিখটাতে কী বাবা-মা তার সন্তানকে ভালবাসা নিবেদন করে, অথবা সন্তান কী তার মা-বাবাকে ভালবাসা নিবেদন করেন?
‘এই তারিখটাতে কী ভাই-বোন বা স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরকে ভালবাসা নিবেদন করেন? এসব প্রশ্নের উত্তর হলো- এরকম ঘটনা খুবই কম ঘটে। এই দিবসে যেই তথাকথিত ভালবাসা নিবেদন হয় সেটা হলো- বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক হয় সেটি।
তাহলে আমরা বলতে পারি, অবৈধ বা অনৈতিক বা আমাদের বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে অসামাজিক সম্পর্ক এবং যেনা-ব্যভিচারের যে সম্পর্ক- এরকম একটি সম্পর্কের জন্য এই দিনটিকে স্থির করা হয়েছে।’
এই ইসলামিক স্কলার আরও বলেন, আমি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই- ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে’ তে ভালবাসা বলতে যে বিনিময় হয় তার চেয়ে বেশি বিনিময় হয় বিবাহ বহির্ভূত যে সম্পর্ক সেটার বিনিময়। সর্বোপরি, এটা আসলে ভালবাসা দিবস হিসেবে উদযাপনকে আমরা সঠিক মনে করছি না।
দিবসটি নিয়ে ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, একজন মুসলিম হিসাবে আল্লাহ তায়ালার সামনে আমারে সবকিছুর হিসাব দিতে হবে। এরমধ্যে আমাদের চরিত্রের হেফাজতের বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং যে বিষয়টা আমাদের শরিয়া বৈধ বলছে না- সেটা আমরা ব্যক্তিগত জীবনে করলাম কি করলাম না, তার চেয়ে গুরুতর অন্যায় হলো সেটাকে প্রচার-প্রসারে আমি শামিল হলাম। এটা অনেকটা ইমান নিয়ে টান দেওয়ার মতো একটা বিষয়।
তিনি বলছেন, এর কারণ হলো- যদি আপনি কোনো অন্যায় কাজে লিপ্ত হন তাহলে আপনি অমুসলিম হবেন না যদি সেটা কুফুরির পর্যায় না যায়। কিন্তু এই একই কাজ যদি আপনি মনে করেন এটা করলে কী সমস্যা? যদি আপনি এটাকে বৈধতা দেন, এটা কোনো দূষণীয় মনে করলেন না। এখানে আপনি নিজে লিপ্ত না হয়ে কিন্তু ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেলেন।
সবশেষে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সুতরাং এসব বিষয়ে অবশ্যই আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমাদের এমন অনেকে আছেন যারা বিভিন্ন জোয়ারে নিজের ইমানকে নষ্ট করে ফেলেন। বিশেষ করে আল্লাহ তায়ালা সেটাকে হারাম করেছেন সেটাকে হালাল করার মতো দুঃসাহসিকতা আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে বিদ্রোহ করার শামিল। এটি আমরা নিজের অজান্তেই অনেকে করে ফেলছি।
আপনার মতামত লিখুন