খুঁজুন
মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ৩০ আশ্বিন, ১৪৩১

‘ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারক এখনো গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন’

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:০৭ অপরাহ্ণ
‘ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারক এখনো গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন’

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, বিগত সময়ে যেসব বিচারক ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে মানুষের অধিকার হরণে ভূমিকা পালন করেছেন, তারা এখনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এ বিষয় চলমান থাকলে জাতির কাছে ভুল মেসেজ যাবে।

বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতির দেওয়া অভিভাষণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, বিচার বিভাগ সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান ও অধস্তন আদালতের বিচারকরা।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিগত দেড় দশক সময়ে খুন, গুম, হামলা, মামলা, দমন, পীড়ন ও লুটপাটের মাধ্যমে নাগরিকদের ন্যূনতম মানবাধিকার কিংবা ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। দেশী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) পর্যন্ত চার হাজারের বেশি মানুষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ৭শ এর বেশি মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। ৬০ লক্ষাধিক মানুষ গায়েবি মামলার আসামি হয়েছিল। কথা বলার স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশের স্বাধীন ও মৌলিক অধিকারগুলো হরণের মাধ্যমে বিরোধী মত দমনের নিকৃষ্টতম ইতিহাস রচিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, সেই দুঃসময়ে আমাদের বিচার বিভাগ ন্যায়বিচারের ধারা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। হয় দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন, নয়তো নতজানু অবস্থান নিয়েছিলেন বলে জনধর্ম আছে। যা আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন, ৩৬ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কেউ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়নি। তার মূল কৃতিত্ব যেতে পারে আমাদের শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে প্রতি।

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, মামলা দায়েরে ভিকটিম ফ্যামিলি কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনের গণ্ডি অতিক্রম করেছে বলে আমরা লক্ষ্য করেছি। এ বিষয়ে আমি উদ্যোগ নিয়ে জনমনে ভীতি দূর করতে আমার শিক্ষকদের কাছে আহ্বান রাখার ফলে সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছিলাম আমার অফিস থেকে। তার একটি ছিল মামলা হওয়া মানেই গ্রেপ্তার নয়। এর ফলে জনমনে অনেক স্বস্তি ফিরে এসেছে ইতোমধ্যেই।

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুর্নীতি। যা অর্থনৈতিক কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্নীতি হতে পারে। জাতি প্রত্যাশা করে, বিচার বিভাগ যেকোনো ধরনের দুর্নীতি কিংবা সিন্ডিকেটমুক্ত থাক। দুর্নীতির প্রচলিত ধারণা অর্থনৈতিক লেনদেন বুঝালেও, বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্নীতি ডিনামাইট চেয়েও ধ্বংসাত্মক। অ্যাটম বোমার চেয়েও ভয়াবহ। ক্যানসারের চেয়েও মারণঘাতী। সুতরাং শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে বিচার বিভাগের সব স্তর থেকে দুর্নীতি দূরীকরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নৈতিক দায়িত্ব ও বড় চ্যালেঞ্জ বলে আমি বিশ্বাস করি।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বিগত সময়ে যেসব বিচারক ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে মানুষের অধিকার হরণে ভূমিকা পালন করেছেন, তারা এখনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ পদে (পোস্টিং) রয়েছেন। এ বিষয় চলমান থাকলে জাতির কাছে ভুল মেসেজ যাবে। আইন উপদেষ্টা ও প্রধান বিচারপতির অফিসকে এ বিষয়ে যথাযথ সতর্ক থাকার জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিচারকদের প্রয়োজনীয় সমস্যা দূরীকরণেও আইন উপদেষ্টা ও প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

পাট খাতের খেলাপি ঋণ নবায়নে বিশেষ ছাড়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ১:০১ পূর্বাহ্ণ
পাট খাতের খেলাপি ঋণ নবায়নে বিশেষ ছাড়

পাট খাতের ব্যবসায়ীরা তাদের খেলাপি ঋণ দেড় শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে নবায়ন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ খাতের ঋণের বিপরীতে আরোপিত সুদ ও আবশ্যকীয় ক্ষেত্রে ঋণের আসল বা এর অংশ বিশেষ একটি ব্লক হিসাবে স্থানান্তর করে ১০ বছরের জন্য নবায়ন করা যাবে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহককে এক বছরের জন্য কিস্তি আদায় স্থগিত সুবিধা দেওয়া যাবে।

এ বিষয়ে সোমবার (১৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে পাট খাতের খেলাপি ঋণের সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য অর্থ উপদেষ্টার কাছে আবেদন করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ওই চিঠিটি সার্কুলারের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, পাট খাতের প্রতিটি গ্রাহকের প্রতিটি ঘটনায় গুনাগুন বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের সুদ ও আবশ্যকীয় ক্ষেত্রে আসল বা এর অংশবিশেষ ব্লক হিসাবে স্থানান্তর করে ১০ বছরের জন্য নবায়ন করা যাবে। এক্ষেত্রে গ্রাহককে এক বছরের জন্য ঋণের কিস্তি পরিশোধের বিষয়ে স্থগিত সুবিধা দেওয়া যাবে। এক বছর পর থেকে ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। ঋণ নবায়নের ক্ষেত্রে গ্রাহককে কমপক্ষে দেড় শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়, জাতীয় অর্থনীতিতে পাট খাতের গুরুত্ব বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইতোপূর্বে পাট খাতের কাঁচা পাট ব্যবসায়ীদের খেলাপি ঋণ নবায়নে একাধিকবার ছাড় দেওয়া হয়েছে। এবার পাটকল কারখানাগুলোর উদ্যোক্তাদের ছাড় দেওয়া হলো।

ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডিসহ ২০ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডিসহ ২০ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব

অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মিফতাহ উদ্দিন সহ ২০ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর চিঠি দিয়েছেন দুদকের তদন্ত দলের প্রধান এবং উপ-পরিচালক মো. ইয়াসির আরাফাত।

চট্টগ্রাম ভিত্তিক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ঋণের নামে ইসলামী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য এবং সাক্ষ্য প্রদানের জন্য তাদের দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

অভিযুক্তদের আগামী ২০-২৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে দুদকের সেগুন বাগিচা প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে লিখিত বক্তব্য, প্রমাণ উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রামের চাকতাই শাখার গ্রাহক মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের ঋণের যাবতীয় কাগজপত্র এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টৈর সত্যায়তি কপি সঙ্গে রাখতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

চিঠি অনুযায়ী অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন- ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ডিএমডি মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) মিয়া মো. বরকত উল্লাহ, ইভিপি মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী, এসএভিপি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী, ইভিপি মোহাম্মদ সিরাজুল আলম, ভিপি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সরকার, চট্টগ্রামের চাকতাই শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) খাজা মোহাম্মদ খালেদ, মোহাম্মদ আলী আসগর, এসএভিপি আমান উল্লাহ, এসপিও সরওয়ার কামাল, এসপিও মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, জুনিয়র অফিসার সিরাজ, প্রিন্সিপাল অফিসার (পিও) নাহিদ আঞ্জুমান সুমী, জুনিয়র অফিসার মো. ইসতিয়াক জকি, সিনিয়র অফিসার মো. আশরাফ, সিনিয়র অফিসার জোনায়েদ হোসাইন, সিনিয়র অফিসার সাহাদাত হোসাইন, জুনিয়র অফিসার মো. কলিম উল্লাহ চৌধুরী, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন ও এসপিও ইফতিখার সাদী রিপন।

বাজরে আগুন, জিম্মি সাধারণ মানুষ

সিন্ডিকেটে বন্ধ ঢাকা ও চট্টগ্রামের ডিমের আড়ৎ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ
সিন্ডিকেটে বন্ধ ঢাকা ও চট্টগ্রামের ডিমের আড়ৎ

সারাদেশে চলছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বাজার অগ্নিশর্মা। সরকারের তদারকি সংস্থাগুলোর অভিযান ঠেকাতে সিন্ডিকেট করে পাইকারি পর্যায়ে ঢাকার তেজগাঁও ও চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে আড়তের ব্যবসায়ীরা ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছে।

গত রোববার রাত থেকে আড়তে আনা হয়নি কোনো ডিম। ফলে সোমবার সকাল থেকে বিক্রিও বন্ধ ছিল। এমন পরিস্থিতিতে খুচরা বাজারে পণ্যটির দাম আরও বেড়েছে। প্রতি ডজন (১২ পিস) ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে রেকর্ড ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়।

এবিষয়ে সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কাওরান বাজার পরিদর্শন শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পণ্যের সিন্ডিকেট করে যারা দাম বাড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনো যারা সিন্ডিকেট করে কারসাজির চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরও বলেন, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যেসব পণ্যের সরবরাহ ঘাটতি আছে সেগুলোর বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রব্যমূল্যের দাম না কমাকে ব্যর্থতা হিসাবে মনে করেন কিনা প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, না, বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুই মাস যথেষ্ট সময় নয়। তবে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সৃষ্টির মাধ্যমে সবকিছুকেই নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। বেঁধে দেওয়া দাম অনুসারে উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা হওয়ার কথা। সে হিসাবে খুচরা পর্যায়ে এক ডজন ডিমের দাম হয় ১৪২ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে রোববার পর্যন্ত প্রতি ডজন ১৭০ টাকায় বিক্রি হলেও সোমবার ১৮০-১৯০ টাকায় ডিম বিক্রি হয়।

দুই সপ্তাহ ধরে ডিমের বাজারে অস্থিরতা ঠেকাতে মাঠে নামে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। যৌক্তিক মূল্যে ডিম বিক্রি না করায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেছে। পাশাপাশি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ফার্ম থেকে প্রতিপিস ১১ টাকায় কিনে পাইকারি আড়তেই ১৫ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। সে কারণে ভোক্তা পর্যায়ে এই ডিম ১৬-১৮ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। আর এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে রাজধানীর ২২ জন ব্যবসায়ী। এছাড়া তেজগাঁও ডিম আড়তদারদের কারসাজিতে ২০ দিনে ভোক্তার পকেট থেকে ২৮০ কোটি টাকা লুটে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ জানান, সরকার খুচরা পর্যায়ে ডিমের যে দাম নির্ধারণ করেছে, তার চেয়ে বেশি দাম দিয়ে খামারিদের কাছ থেকে ডিম কিনছেন তারা। এ কারণে বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। উদাহরণ হিসাবে তিনি বলেন, গতকাল (রোববার) রাতে তারা পাইকারিতে ডিম বিক্রি করেছেন প্রতিটি ১২ টাকা ৫০ পয়সা দরে। এই ডিম তারা কিনেছেন ১২ থেকে ১২ টাকা ২০ পয়সা দরে। তিনি জানান, তেজগাঁওয়ে দৈনিক ১৪-১৫ লাখ ডিম আসে। ঢাকায় ডিমের চাহিদা এক কোটি। তেজগাঁওয়ের বাইরে কিছু জায়গায় অনেকে ঠিকই উচ্চ দামে ডিম বিক্রি করছেন। কিন্তু বাড়তি দামে কেনাবেচার কারণে শুধু তাদের দায়ী করা হচ্ছে, অভিযান চালানো হচ্ছে। এজন্য ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

তিনি বলেন, সরকারের নিয়ম না মানলে জরিমানা ও শাস্তি হতে পারে। তাই এখন বিক্রি বন্ধ রেখে কী করা যায়, সে উপায় খুঁজছি। আজ (সোমবার) ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে সভা থাকায় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি।

সোমবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুচরা পর্যায়ে ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ ও সাদা ডিম ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ফার্মের মুরগির দামও চড়া। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা ও সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকা।

এদিন দুপুরে কাওরান বাজারের চিত্র, এই বাজারের কোনো দোকানে ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে না। শুধু একটি দোকানে কয়েকটি লাল ও দুই ডজনের মতো সাদা রঙের ডিম পাওয়া গেছে। এসব ডিমের ডজন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। যদিও সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই লাল ডিমগুলো বিক্রি হয়ে যায়।

পাহাড়তলীতে ডিমের আড়তে তালা:
সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে না পারায় চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে সোমবার সকাল থেকে আড়তগুলো বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে চট্টগ্রামে ডিমের বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে উৎপাদন পর্যায় থেকে প্রতিপিস ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা করে কিনতে এবং পাইকারিতে সেটি ১১ টাকা ১ পয়সা করে বিক্রি করতে। কিন্তু উৎপাদন পর্যায় থেকে ডিম কিনতে খরচ পড়ছে ১৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১৫ পয়সা। খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ টাকায়। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে ক্রয়-বিক্রয় করতে না পারায় আড়ত বন্ধ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বেঁধে দেওয়া দামে ডিম ক্রয় ও বিক্রি করা যাচ্ছে না।

তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, ডিমের আড়তদাররা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ও ডিমের দাম বাড়াতে আড়তগুলো বন্ধ রেখেছে। এতে ভোক্তাপর্যায়ে ডিমের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া তারা (আড়তদাররা) প্রশাসনকে অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

পাহাড়তলী বাজারের আড়তদার কামরুল হুদা গণমাধ্যমে বলেন, আমরা ডিমের ব্যবসা নিয়ে উভয় সংকটে আছি। উৎপাদন পর্যায় থেকে ডিম ক্রয় করলে রসিদও দেওয়া হচ্ছে না। ভোক্তা অধিকার থেকে আমাদের কাছে ক্রয়ের রসিদ চায়। আমরা কীভাবে ক্রয়ের রসিদ দেব? রসিদ না থাকায় আমাদের জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু উৎপাদন পর্যায়ে যে বেশি টাকা রাখছে। সেটি ভোক্তা অধিকার শোনে না। ডিম ক্রয় করতে না পারায় আমাদের আড়তগুলো আপাতত বন্ধ রাখছি।