খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ৫ আষাঢ়, ১৪৩২

ট্রাইব্যুনাল-২ চেয়ারম্যান

বোমা মারলেও ভয় পাব না: বিচারপতি নজরুল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ
বোমা মারলেও ভয় পাব না: বিচারপতি নজরুল

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করবেন বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, কেউ বোমা মারলেও তিনি ভয় পাবেন না। মঙ্গলবার সকালে পুরাতন হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারপতিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করতে ৮ মে ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করা হয়। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল-২-এর কার্যক্রম শুরু হয়।

এদিকে, জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আল্লাহর ওপর নির্ভর করে পথ চলি। তার ওপর নির্ভর করে কাজ করি। কেউ বোমা মারলেও ভয় পাব না। কেউ গুলি করে মেরে ফেললে আমার সব গুনাহ নিয়ে যাবে। ফলে আমার ভয়ের কারণ নেই। আমি কবরের পাশে দাঁড়ানো, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ভয়ের কিছু নেই। আমরা এই তরি বয়ে নিয়ে যাব তীরে।’

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, কিছু লোক গত ১৫ বছর ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। তারা নিষ্ঠুরভাবে শাসন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। মানুষ নিজেদের কথা বলতে পারেনি। সেই ফ্যাসিস্টরা এখনো ফিরে আসার চষ্টো করছে। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শত শত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে মানুষকে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের অনেকে এখনো যথাযথ চিকিৎসা পাননি। বিচারকরা চেষ্টা করছেন ছাত্র-জনতার দুর্ভোগ কমাতে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইবু্যনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাদের নাম উলে্লখ করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে তারা কাজ করবেন। তাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার আশা করা যায়। তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম ও প্রক্রিয়া মেনে চলবেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বিষয়গুলোও মেনে চলবেন বলেও উলে্লখ করেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় ট্রাইব্যুনাল-২-এর সদস্য বিচারপতি মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারপতি নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই আমাদের এই বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে। আমরা দেখতে চাই এই বিচার যেন হয় আন্তর্জাতিকমানের। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আজকে সংবর্ধনায় এজলাসে বসা শুরুর মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল-২ এর যাত্রা শুরু হলো। ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে কিছু মামলা এখানে আসবে বলে আশা করছি। আর কিছু নতুন মামলা এখানে দাখিল করব। ইনশাআল্লাহ, বিচারের অগ্রগতি দেশবাসী দেখতে পাবেন।

শেখ হাসিনাকে আত্মসমর্পণে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ:
জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার (১৭ জুন) এ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন ট্রাইবু্যনালের রেজিস্ট্রার। মঙ্গলবার একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, পিতা. মৃত শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাতা. মৃত ফজিলাতুন্নেসা, স্বামী. ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া, টুঙ্গিপাড়া, থানা. টুঙ্গিপাড়া, জেলা. গোপালগঞ্জ, বর্তমান ঠিকানা∏ সুধা-সদন, বাড়ি নং-৫৪, রোড নং-৫, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা-১২০৯ এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পিতা. আশরাফ আলি খান, মাতা আকরামুন নেছা, গ্রাম-খারিয়া, থানা দোহার, জেলা. ঢাকা, বর্তমান ঠিকানা∏হোল্ডিং নং ১৩৬/১, গেট নং-০৬, মনিপুরি পাড়া, থানা. তেজগাঁও, ডিএমপি, ঢাকা-গণের বিরুদ্ধে ট্রাইবু্যনালের চিফ প্রসিকিউটর কর্তৃক International Crimes (Tribunals) Act, ১৯৭৩ এর ৯(১) ধারায় দাখিলকৃত Èফরমাল চার্জ বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী অপরাধসমূহ আমলে গ্রহণ করেছেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি সত্ত্বেও তারা পলাতক রয়েছেন বা গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আত্মগোপন করেছেন। সেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল-১) কার্যপ্রণালী বিধিমালা, ২০১০ (সংশোধিত-২০২৫) এর ৩১ বিধি অনুসারে তাদের আগামী ২৪ জুন ট্রাইবু্যনালে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া গেল। অন্যথায় তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হবে।

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে হট্টগোল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ
ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে হট্টগোল

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে আজ (বুধবার)। বক্তব্য দিতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে হট্টগোল করে সংলাপ থেকে বের হয়ে যান সিপিবি, গণফোরাম ও বাংলাদেশ এলডিপির নেতারা। পরে কমিশনের সদস্যদের হস্তক্ষেপে ফের সংলাপে যোগ দেন তারা।

বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপাস হলে কমিশনের দ্বিতীয় দফা সংলাপের তৃতীয় দিনের আলোচনায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিন আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াত ইসলামী, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান হৈচৈ করে সংলাপ ‘বয়কট করে’ বের হয়ে যান।

সংলাপ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখানে কিসের সংলাপ হচ্ছে, কার সঙ্গে সংলাপ করব। তারা যা ইচ্ছা তাই করছে। অন্তর্বর্তী সরকার যতদিন নিরপেক্ষ থাকবে না, ততদিনের জন্য আমরা বয়কট করেছি।’

হট্টগোল করে একইভাবে সংলাপ থেকে বের হয়ে যান সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

তিনি ‘ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বৈষম্য হচ্ছে’ অভিযোগ তুলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জামায়াত ইসলামীর তিনজনকে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। আরও অনেকে বক্তব্য রাখছেন, অথচ আমাদের কাউকে দেওয়া হচ্ছে না।’

সংলাপ ‘বয়কট করেন’ বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে ঐকমত্য কমিশন। সেই আলোচনা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এরপর দুপুরের খাবারের বিরতির পর বেলা ৩টায় আবারও সংলাপ শুরু হয়। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে তাদের কথা বলতে ‘দেওয়া হচ্ছে না বলে’ দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন সিপিবি গণফোরাম ও বাংলাদেশ এলডিপির নেতারা। একপর্যায়ে তারা সংলাপ থেকে বের হয়ে যান। তখন ভেতরে অন্যান্য দলের রাজনৈতিক নেতারা বসে ছিলেন। পরে কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার এবং উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কথাবার্তা বলে তাদের সংলাপস্থলে ফিরিয়ে নিয়ে যান।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এতে উপস্থিত রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

এর আগে গতকাল (মঙ্গলবার) দ্বিতীয় দিনের সংলাপ ‘বয়কট’ করেছিল জামায়াতে ইসলামী। তবে একদিন পর কমিশনের সংলাপে যোগ দিয়েছে দলটি।

নিরাপত্তা জোরদারে ঢাবিতে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ৪:৩৯ অপরাহ্ণ
নিরাপত্তা জোরদারে ঢাবিতে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৬টি প্রধান প্রবেশপথে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে আনসার ও সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার (১৮ জুন) ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এ বিষয়ে গতকাল (মঙ্গলবার) উপাচার্যের কার্যালয়ে এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। ৬টি প্রধান প্রবেশদ্বারে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে, যাতে অংশ নেবেন প্রক্টরিয়াল টিম, আনসার এবং সশস্ত্র পুলিশ সদস্যরা।

বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে ভবঘুরে ব্যক্তিদের উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান চালাবে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম। তাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের আশপাশে সেনা টহল বৃদ্ধির জন্য সেনাবাহিনীকে চিঠি দেওয়া হবে।

ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সভা করার মাধ্যমে নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা ও সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, নষ্ট ক্যামেরাগুলো সংস্কার করা হয়েছে এবং রাতের আলোকসজ্জা আরও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে পুলিশের তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।

এ ছাড়া সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে আইন মন্ত্রণালয়কে এবং তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের বিচার ত্বরান্বিত করতে পিবিআইকে পৃথকভাবে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ককটেল উদ্ধারের ঘটনায় দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমও আরও জোরদার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশা প্রকাশ করেছে, এসব পদক্ষেপ কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা পাওয়া যাবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, সিটি এসবির ডিআইজি মীর আশরাফ আলী, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি কর্নেল আব্দুল্লাহ, রমনা জোনের ডিসি মো. মাসুদ আলম, শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর, এনএসআই ও ডিবির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

শীর্ষে থাকা ১০টি ব্যাংক, বর্তমানে আমানত রাখা সবচেয়ে নিরাপদ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ২:৪০ অপরাহ্ণ
শীর্ষে থাকা ১০টি ব্যাংক, বর্তমানে আমানত রাখা সবচেয়ে নিরাপদ

অর্থনীতির তালগোলে দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঋণ কেলেঙ্কারি, আর্থিক অনিয়ম ও তারল্য সংকটের কারণে অনেকেই এখন ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে নিরাপদ প্রতিষ্ঠানে আমানত রাখতে চান। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে- কোন ব্যাংকে আমানত রাখলে তা সবচেয়ে নিরাপদ থাকবে?

বিশ্লেষকদের মতে, একটি আদর্শ ব্যাংক নির্ভরযোগ্য হয় তখনই, যখন সেটি গ্রাহকের অর্থ সুরক্ষিত রাখতে পারে, নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করে, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক সেবা দেয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা বজায় রাখে। এই বিবেচনায় ২০২৪ সালের পারফরম্যান্স অনুযায়ী বাংলাদেশের শীর্ষ ১০টি নিরাপদ ব্যাংকের তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো—

১. স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক:
৩৩০০ কোটি টাকা নিট মুনাফা এবং ৪১% প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিদেশি মালিকানাধীন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক দেশের অন্যতম নিরাপদ প্রতিষ্ঠান। শক্তিশালী মূলধন কাঠামো, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিশাল শাখা নেটওয়ার্কের জন্য গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সফল হয়েছে।

২. ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড:
দেশের বৃহত্তম ডিজিটাল ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক পরিচালনাকারী এই ব্যাংকটি নিরাপদ লেনদেন, উন্নত গ্রাহকসেবা এবং উচ্চ মুনাফার কারণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

৩. ব্র্যাক ব্যাংক:
বিকাশের মতো মোবাইল সেবা এবং ৭৩% নিট মুনাফা বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক প্রযুক্তিনির্ভর ও দ্রুততম উন্নয়নশীল ব্যাংক হিসেবে তৃতীয় স্থান দখল করেছে।

৪. ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল):
২০২৪ সালে ৬৬০ কোটি টাকা নিট মুনাফা ও ৩৫% লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ইবিএল। রেমিটেন্স এবং বিনিয়োগ আয়ের ইতিবাচক ধারা ব্যাংকটিকে এগিয়ে রেখেছে।

৫. উত্তরার পুবালি ব্যাংক লিমিটেড:(উবা ব্যাংক)
খেলাপি ঋণ মাত্র ২.৬৭ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং রেমিটেন্স আহরণে সক্রিয় ভূমিকার জন্য এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গ্রাহকদের কাছে এখন নির্ভরতার প্রতীক।

৬. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড:
বিভিন্ন বিতর্ক সত্ত্বেও দেশের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক এটি। আন্তর্জাতিক লেনদেনের সক্ষমতা এবং অবকাঠামোগত শক্তি একে নিরাপদ ব্যাংকের তালিকায় রেখেছে।

৭. সোনালী ব্যাংক লিমিটেড:
রাষ্ট্রায়ত্ত হলেও ব্যাংকটি বর্তমানে তারল্য সংকটে থাকা অন্যান্য ব্যাংককে সহায়তা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মুনাফায় ফেরার প্রচেষ্টা চোখে পড়ার মতো।

৮. সিটি ব্যাংক পিএলসি:
আর্থিক স্থিতিশীলতা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কারণে সিটি ব্যাংক বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের কাতারে স্থান পেয়েছে।

৯. প্রাইম ব্যাংক পিএলসি:
৭০০ কোটি টাকা নিট মুনাফা ও ২০% লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়ে প্রাইম ব্যাংক বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করেছে। এর মূলধন পর্যাপ্ততার হার (CAR) ১৮.২৬%, যা অন্যতম সর্বোচ্চ।

১০. উত্তরা ব্যাংক পিএলসি:
১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাংকটি দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীলতা ও সুনাম ধরে রেখেছে। ২০২৪ সালে ৪৭৮ কোটি টাকা মুনাফা এবং ৩০.৭৫% আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপদ ব্যাংকের তালিকায় জায়গা পেয়েছে।

যদিও দেশের ব্যাংক খাত চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তবুও এই ১০টি ব্যাংক স্বচ্ছতা, আর্থিক শৃঙ্খলা এবং গ্রাহকসেবার মান বজায় রেখে নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গা হিসেবে টিকে আছে। সঞ্চয় রাখতে আগ্রহী গ্রাহকদের জন্য এ তালিকাটি হতে পারে দিকনির্দেশক।