খুঁজুন
রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছাই

চট্টগ্রামে জাহাজ বিধ্বংসে প্রাণ হারালেন সৌরভ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৩০ অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামে জাহাজ বিধ্বংসে প্রাণ হারালেন সৌরভ

আশায় বুক বাধা বাবা মাকে দেওয়া কথা রাখতে পারলেন না ক্যাডেট সৌরভ কুমার সাহা। কথা রাখার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হলো সৌরভকে। ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল অসহায় পরিবারের স্বপ্ন। চট্টগ্রামে জাহাজে বিধ্বংসী প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী তরুণ সৌরভ কুমার সাহা।

সৌরভ পেশায় জাহাজের ডেক ক্যাডেট। নৌ ক্যাডেট সৌরভের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুরে। মাত্র দু’মাস আগে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে চাকরীতে যোগ দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাবা-মাকে,সংসারে সুদিন ফিরিয়ে আনবেন তিনি। এমনকি পুজোর ছুটিতে বাড়ি আসবেন সেই কথাও দিয়েছিলেন। দু’চোখ ভরে বাবা-মাকে দেখবেন,জড়িয়ে ধরে দুঃখ ঘোচাবেন তিনি। তবে সেই আশা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বিধ্বংসী আগুনে।

চট্রগ্রাম বন্দরের ডলফিন জেটিতে নোঙ্গর করা ‘এমটি বাংলা জ্যেত্যি’তে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হয়েছেন সৌরভ। সোমবার দুপুরের পর সৌরভের মৃত্যুর খবর পৌছায় বাড়িতে। তারপর থেকেই পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। এক এক করে প্রতিবেশি ও আত্নীয়রা ভীড় করেন তার বাড়িতে। সৌরভের বাবা-মা বিলাপ করে চলেছিলেন। যারা সান্ত্বনা দিতে এসেছেন তাদের চোখেও ছিল জল। বাবা-মা আশা করেছিলেন,ছেলে হয়ত পরিবারে সুদিন ফিরিয়ে আনবেন। সব সামর্থ্য দিয়ে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই আগুনে পুড়ে গেছে।

সৌরভের বাবা মানিক সাহা ছোট্ট একটা মুদি দোকান চালান। দুই ছেলের বড় সৌরভ। পরিবারের সদস্যরা জানান, সৌরভ বরিশাল মেরিন একাডেমি থেকে পাস করে অগাস্টেই বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে যোগ দিয়েছিলেন। তার চাকরির বয়স মাত্র দুই মাস।

সৌরভের মা সীমা সাহা জানান, ‘তার ছেলের সঙ্গে রোববার দুপুরে শেষ কথা হয়। সে বলেছিল কুতুবদিয়া থেকে তেল নিয়ে রওনা হয়েছে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে। আমি বলেছিলাম একটু ভিডিও কল দিতে। কিন্তু জাহাজের ডেকে অনেক কষ্ট, সেটা দেখে আমরা কষ্ট পাবো ভেবে আমাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতো না।’

সৌরভের প্রতিবেশী নিপুণ বিশ্বাস বলেন, ‘সৌরভদের পরিবার নিম্নবিত্ত। ছোটবেলা থেকেই সে অত্যন্ত মেধাবী ছিল। তার বাবা খুব কষ্ট করে তাকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার পড়িয়েছিলেন। পরিবারটির সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।’

শোকাহত সৌরভদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনদের ভিড়। তারা পরিবারটিকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কারো কান্নাই থামছে না।

সৌরভের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার শৈলকুপার কবিরপুরে তার বাড়িতে পৌঁছায়।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবের পদ হারানোর গুঞ্জন

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১:৪৯ অপরাহ্ণ
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবের পদ হারানোর গুঞ্জন

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার খবর ভিত্তিহীন ও অসত্য বলে জানিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদ। এ ধরনের গুজবে কান না দিতে এবং বিভ্রান্ত না হতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন।

সে কারণে তিনি আপাতত দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন না। তবে তিনি আগামী রবিবার থেকে পুনরায় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। তাঁর দ্রুত সুস্থতার জন্য সব নেতাকর্মী ও সমর্থকদের দোয়া কামনা করা হচ্ছে।’
এ ছাড়া শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয় রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে ছাত্রদল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এসব খবরে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। এমন অবস্থায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

যেসব কারণে পতন হলো ফারুক আহমেদের

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১:৪২ অপরাহ্ণ
যেসব কারণে পতন হলো ফারুক আহমেদের

বিতর্কিত বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পলায়নের পর নতুন আশা নিয়ে বিসিবি সভাপতি হন ফারুক আহমেদ। অথচ মাত্র ৯ মাস ৮ দিন- এটাই ছিল ফারুক আহমেদের বিসিবি সভাপতির মেয়াদ। গত বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) তার কাউন্সিলর মনোনয়ন বাতিল করলে কার্যত তার সভাপতির পদও শূন্য হয়ে যায়। পরদিন, শুক্রবার পরিচালকদের জরুরি সভায় আমিনুল ইসলাম বুলবুল নির্বাচিত হন নতুন সভাপতি হিসেবে। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে- কেন এত অল্প সময়ে পদচ্যুত হলেন ফারুক আহমেদ?

এ নিয়ে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে খতিয়ে দেখা হয়েছে, ফারুকের রাজত্ব শেষের পিছনে কোন কোন কারণ কাজ করেছে:

বিপিএল-২০২৫ দুঃশাসনের প্রতিচ্ছবি:

ফারুক আহমেদের পতনের সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে চলতি বছরের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এর দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা।

বিশেষ করে দুর্বার রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা, খেলোয়াড়দের বেতন না দেওয়া, হোটেল বিল বকেয়া রাখা এবং শেষ পর্যন্ত খেলোয়াড় বিদ্রোহ- এ ঘটনাগুলো সরকারকে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য করে।

তৎকালীন বোর্ড সভাপতি হিসেবে এসব ঘটনায় কার্যকর কোনো সমাধান দিতে না পারা ফারুককে প্রশাসনের নজরে ফেলে দেয়। এমনকি দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজে এই বিষয়গুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। বিপিএলের ফাইনালে তার অনুপস্থিতিও রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে ধরা হয়, যার প্রভাব পড়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের অবস্থানের উপরেও।

স্বেচ্ছাচারিতা ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন:

বোর্ড পরিচালকদের একটি বড় অভিযোগ ছিল, ফারুক বিসিবির গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন।

বিশেষ করে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পরিচালকদের না জানিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। বিসিবি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এমন বড় সিদ্ধান্তের আগে পরিচালকদের মতামত নেওয়া বাধ্যতামূলক।

এর বাইরে কিছু সিদ্ধান্তে ফারুক ঘনিষ্ঠ কয়েকজন পরিচালককে উপেক্ষা করেছেন, যার ফলে বোর্ডের ভেতরেই দলাদলির সৃষ্টি হয়।

ভেতরের কোন্দল: ফাহিম বনাম ফারুক:

বোর্ড পরিচালক এবং এনএসসি মনোনীত প্রতিনিধি নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আরও একধাপ বাড়িয়ে দেয় পরিস্থিতি। এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে এবং বোর্ডের ঐক্য বিনষ্ট হয়। এমনকি, ফারুক আহমেদ ক্রীড়া উপদেষ্টার সহকারী একজন কর্মকর্তার সঙ্গেও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়ান, যা প্রশাসনিক মহলে ভালোভাবে নেওয়া হয়নি।

নির্বাচন নিয়ে ‘অতিরিক্ত আগ্রহ’, আস্থা হারান বোর্ডে:

অন্য এক বড় কারণ ছিল, ফারুক আহমেদের অক্টোবরে সম্ভাব্য বিসিবি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ। সম্প্রতি এক ইউটিউব সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে চান। এই অবস্থান তার সহকর্মী পরিচালকদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করে এবং অনেকে মনে করেন, তিনি বোর্ড পরিচালনার চেয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান তৈরিতেই বেশি মনোযোগী ছিলেন।

এনএসসি ও প্রশাসনের চূড়ান্ত পদক্ষেপ:

৮ জন পরিচালক আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানানোর পর এনএসসি একটি স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। রিপোর্টে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বের ঘাটতির সরাসরি দায় বর্তায় ফারুকের ওপর।

ফারুক আহমেদ ছিলেন একজন সাবেক অধিনায়ক, ক্রিকেটার ও অভিজ্ঞ সংগঠক। কিন্তু সভাপতির চেয়ারে বসার পর তার আচরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি, আর প্রশাসনিক দক্ষতার অভাবই শেষ পর্যন্ত তাকে বিসিবি থেকে সরিয়ে দেয়।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে আমিনুল ইসলাম বুলবুল দায়িত্ব নিয়েছেন এ অস্থির সময়েই। তারও সামনে রয়েছে দল পুনর্গঠন, স্বচ্ছতা ফেরানো ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ।

ফারুকের পতন, তা যতই নাটকীয় হোক না কেন, ক্রিকেট প্রশাসনে আবারও এক কঠিন বাস্তবতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

চিকিৎসকের পরামর্শে পূর্ণ বিশ্রামে আছেন ছাত্রদল সভাপতি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১:২৯ অপরাহ্ণ
চিকিৎসকের পরামর্শে পূর্ণ বিশ্রামে আছেন ছাত্রদল সভাপতি

শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব চিকিৎসকের পরামর্শে পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ফলে তিনি গত দুদিন ধরে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।

শুক্রবার (৩০ মে) রাতে ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি মর্যাদা) জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জাহাঙ্গীর আলম জানান, আগামী রোববার থেকে তিনি (সভাপতি) পুনরায় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন, ইনশাআল্লাহ। তিনি সব নেতা-কর্মী ও সমর্থকের কাছে শারীরিক সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদল সভাপতির শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের যেকোনো ধরনের গুজব থেকে সতর্ক থাকার জন্য কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলো।

উল্লেখ্য, বিএনপির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে-এমন গুঞ্জন সংগঠনটির অভ্যন্তরে ও বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে।