বাংলাদেশ হয়তো ভুলেই গিয়েছিল তারা টেস্ট খেলছে
কানপুর টেস্টে সর্বসাকুল্যে আড়াই দিনও খেলা হয়নি। অথচ এই অল্প সময়ের মধ্যেই ভারতের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ দল।
পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাই করে আসা শান্তবাহিনীর এমন বেহাল দশা মানতে পারছেন না দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। এমনকি সমালোচনার বান আসছে ভারত থেকেও।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ দুই টেস্টের সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশ হারে ২৮০ রানে। এরপর কানপুরে আড়াই দিন বৃষ্টি ভেসে যাওয়ায় ম্যাচ ড্র হওয়ার সম্ভাবনা জাগে। কিন্তু ভারত রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রান করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারে মোটে ১৪৬ রান। জবাবে ‘বাজবল’ ক্রিকেট খেলে আড়াই দিনেরও কম সময়ে ৭ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে ভারত।
গতকাল সকালে সাদমান ও শান্ত মিলে অবশ্য প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজার বলে অযথা রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন শান্ত। একটু পরেই আকাশ দীপের অনেক বাইরের বল ফ্ল্যাশ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন সাদমান। অথচ তখন তিনি ফিফটি করে ফেলেছিলেন। অর্থাৎ সেট হয়ে উইকেট বিলিয়ে দেন তিনি। ২ উইকেটে ৯১ থেকে ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
শান্তদের এমন ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ের সমালোচনা করে ভারতের ব্যাটিং কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার বলেছেন, বাংলাদেশ দল নাকি ভুলেই গিয়েছিল যে তারা টেস্ট খেলছে। এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ১০ হাজারি ক্লাবে প্রবেশ করা গাভাস্কার বলেন, ‘ওরা (বাংলাদেশের ব্যাটাররা) সম্ভবত ভুলে গিয়েছিল, এটা টেস্ট ম্যাচ। টেস্টে অনেক সময় পাওয়া যায় এবং এটা শেষ দিন ছিল। ‘
‘শান্তর (বাংলাদেশ অধিনায়ক) কিছু শট দেখলাম, ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক হলে দেখতে ভালোই লাগে। কিন্তু যখন তা হয় না, তখন মনে হয়, সে আসলে কী করতে চাচ্ছে! আর হাঁফ সেঞ্চুরির পর সাদমান অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে আলগা শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিল। অথচ ওই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে তার সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া দরকার ছিল। ‘
অন্যদিকে ইএসপিএনক্রিকইনফোতে জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার ও ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার বলেন, ‘আমার মনে হয় বাংলাদেশ হয়তো বাস্তবতা বুঝতে পারছে। তারা নিজ দেশে ভালো কিছু দলকে হারিয়েছে, এরপর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে হারিয়ে এসেছে। এটা বড় অর্জন। ‘
মাঞ্জেরেকার নির্দিষ্ট করে সমালোচনা করেছেন সাকিব, লিটন ও মুশফিকেরও। এই সিরিজে ৪ ইনিংসে মুশফিকের রান ৬৯, লিটনের ৩৭। সাকিব বল হাতে ৪ উইকেট পেলেও ব্যাট হাতে ছিলেন ব্যর্থ। তাদের নাম উল্লেখ করে মাঞ্জেরেকার বলেন, ‘সিনিয়র ক্রিকেটার যারা তাদের দেশে বড় সুপারস্টার, বড় ব্র্যান্ড; তাদের এত মনযোগ প্রাপ্য কি না, সেটা দেখানোর সময় ছিল এটা। লিটন, মুশফিকুর, সাকিবের ব্যাটিং দেখে তা মনে হয়নি। তাদের অ্যাপ্রোচ হুমকি মনে হয়নি। কিন্তু ভারতকে চাপে ফেলার মতো কাজটা তো সিনিয়রদেরকেই করতে হয়।’
আপনার মতামত লিখুন