খুঁজুন
রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সংবিধান বিষয়ে তাড়াহুড়া নয়’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪, ১:১৭ অপরাহ্ণ
‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সংবিধান বিষয়ে তাড়াহুড়া নয়’

রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাড়াহুড়া না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলে ভবিষ্যতের জটিলতা এড়ানো সম্ভব। মাফিয়া স্বৈরাচারের দোসররা এতদিন পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরকারকে ব্যর্থ করতে চেষ্টা করছে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনে ঢাকা লেডিস ক্লাবে এক শুভেচ্ছা মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শারদীয় দুর্গোৎসব-উত্তর এ শুভেচ্ছা বিনিময়ের আয়োজন করে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তারেক রহমান বলেন, আমরা সবাই একমত যে, পতিত স্বৈরাচার মাফিয়া সরকারের বেনিফিশিয়ারিদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে অন্তবর্তী সরকারের লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে পতিত পরাজিত শক্তি দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতো। সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের কোনো একটি ঘটনার বিচার তারা করেনি।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে তাবেদার সরকারের সময় আমরা দেখেছি সন্ত্রাসী দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মের ধর্মপ্রাণ মানুষদের রাখা হয়েছিল উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক পালানোর পর দেশের হিন্দু-মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষ এখন আয়না ঘরের ভীতিমুক্ত। আজ আমরা স্বাধীনভাবে এখানে একত্রিত হতে পেরেছি।

বিভিন্ন ধর্ম ও গোষ্ঠীর স্বার্থকে পুঁজি করে বা তাদের ব্যবহার করে পরাজিত শক্তি যেন কোনো ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতে যেন সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম নিশ্চিন্তে উদযাপন করতে পারে, তেমন একটি দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ। মনে রাখতে হবে- ধর্ম যার যার, কিন্তু নিরাপত্তা পাওয়ায় অধিকার সবার।

তিনি বলেন, মাফিয়া সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে মেরামত করতে অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ১৫ বছরের জঞ্জাল শেষ করে চলমান সংস্কার কার্যক্রম শেষ করা বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি, এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে গিয়ে জনগণের প্রতিদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা না গেলে, জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত থাকলে, অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রশ্নের মুখে পড়বে। ফলে এই সরকারের কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এজেন্ডাভিত্তিক করা অত্যন্ত জরুরি।

মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পর নতুন একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারিনি। এবার ৫ আগস্টের পর আবার একটি নতুন সম্ভাবনা এসেছে। আসুন আমরা সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলি। আসুন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি।

তিনি বলেন, পতিত শক্তি নানা ধরনের উসকানি দিচ্ছে। কোনোভাবে এসব উসকানির ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। আসুন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, আমরা সবাই মিলে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। ধর্ম যার যার, দেশটা আমাদের সবার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর একটা প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। আসুন আমরা সবাই মিলে একটি ঐক্যবদ্ধ ও কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করি।

দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজায় কোনো মন্দির পাহারা দিতে হতো না, এখন দেখি এসব! কেন? কোনো মুসলমান হিন্দুর মন্দির ভাঙতে পারে না, কোনো ধর্মে এমনটি বলা নেই। তাহলে এগুলো কারা করছে? এসব ঘটনায় যারাই ধরা পড়ছে, দেখা যাচ্ছে সব আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ আর যুবলীগ। আমার এলাকায় হিন্দুদের যত জমি দখল হয়েছে, সব আওয়ামী লীগ নেতারা করেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, মা (দেবী দুর্গা) আসেন প্রতিবছর ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য। ৫ আগস্ট এদেশ থেকে অসুর পালিয়ে গেছে। সত্যের জয় হয়েছে।

বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা একটি রেইনবো জাতি গঠন করতে চাই। বিএনপির দর্শন ও চিন্তা থেকে এর প্রতিফলন। ধর্মকে মূলধন করে অনেকে নেতা হয়ে যান। তারা নিজেরা লাভবান হচ্ছেন। এমনকি যাদের নিয়ে লাভবান হচ্ছেন তাদের বিষয়ে এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের কোন ভাবনা নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপিতে গোত্র-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সমান। এটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দল।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুব্রত বুড়ুয়া, বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায় ও শ্রেণির পেশাজীবীরা।

করিডোর ইস্যুতে সরকারের অবস্থান জানতে চাইল বিএনপি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ৩:১৭ অপরাহ্ণ
করিডোর ইস্যুতে সরকারের অবস্থান জানতে চাইল বিএনপি

করিডোর ইস্যু ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল। সরকারের গোপন আলোচনার খবর প্রকাশিত হওয়ায় করিডোর বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

একইসাথে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জোরালো হয়েছে।

শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ভূ-রাজনৈতিক নিরাপত্তা: প্রেক্ষিত মানবিক করিডর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ সব কথা উঠে আসে।

বিএনপির আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, করিডরের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কি কথা বলব? আমরা জানিই না সরকারের পরিকল্পনা কী। উপদেষ্টা বলেছেন, জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা বিস্মিত। এত বড় সিদ্ধান্ত সরকার কীভাবে নিলো? জাতিসংঘ এই আলোচনায় কোনো মতামত দিতে পারে না। এটি দুই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। জাতিসংঘ এখানে কেবল নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তে যুক্ত হতে পারে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন রেজুলেশন পাস হয়নি।

তিনি অভিযোগ করেন, সরকার প্রথমে বলেছিল আলোচনাই হয়নি, কিন্তু আমরা দেখছি আলোচনা চলছে। কাতারে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পুরো বিষয়টি এত গোপন কেন? এই সরকারের এখতিয়ারে এটা নেই। প্রধান উপদেষ্টার মুখ থেকে জানানো দরকার আসলে সরকার কি চায়। করিডোর ইস্যু শেষ হয়নি।

খসরু বলেন, করিডোর বিতর্কের পর সরকার এখন ‘চ্যানেল’ ইস্যু নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু করিডোর আর চ্যানেল, শব্দের পার্থক্য থাকলেও মূল কথা এক। সরকার বিষয়টি স্পষ্ট করুক। আরাকান আর্মি আনুষ্ঠানিক সরকার নয়, ভারতের সঙ্গেও তাদের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। যুদ্ধ-অস্থিরতা চলছে, সেখানে করিডোর নিয়ে আলোচনা কতটা যৌক্তিক? রোহিঙ্গাদের করিডোর দিয়ে ফেরানোর কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু তাদের সম্মানজনকভাবে ফেরানোর অধিকার আছে। করিডোরের প্রয়োজন কেন?

তিনি আরও বলেন, দেশে স্থিতিশীলতা সবচেয়ে বেশি দরকার। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়েছেন। এখন নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে সরকার আলোচনা করছে না।

আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, করিডোরের মাধ্যমে আরাকানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু মগ জালদস্যুদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারেরই নেয়া উচিত। নির্বাচন তাড়াতাড়ি করা হলে নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, করিডোর সিদ্ধান্ত সরকারের এখতিয়ারের বাইরে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে গোপন তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। অনেক জায়গায় মানবিক করিডোর সামরিক করিডরে রূপ নিয়েছে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আরেকজন রোহিঙ্গাকেও আমরা চাই না। করিডোরের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। গোপনে নয়, চুক্তিভিত্তিক কাজ করতে হবে।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ঘোষণার পরও নতুন করে প্রবেশ করছে। করিডোরের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। এমন সিদ্ধান্তে সরকারের যাওয়া উচিত হয়নি। সরকারের মূল কাজ ছিল নির্বাচন দেয়া, বিচার-সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন বিলম্বের সুযোগ নেই। বিএনপি একা নয়, অনেক দলই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব ও মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর গভর্নন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যানালাইসেসের নির্বাহী পরিচালক কর্নেল (অব) জগলুল আহসান।

দেশে ফিরে এভারেস্ট জয়ের গল্প শোনালেন গর্বিত শাকিল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ৩:১৫ অপরাহ্ণ
দেশে ফিরে এভারেস্ট জয়ের গল্প শোনালেন গর্বিত শাকিল

সংগ্রামী ‘সি টু সামিট’ অভিযান শেষে নেপাল থেকে দেশে ফিরেছেন এভারেস্টজয়ী বাংলাদেশি পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল। ২৯ মে বিকেলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নেমেই তিনি হাজির হন রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। এ অনুষ্ঠানে এভারেস্ট জয়ের পথে নানা চ্যালেঞ্জ ও সফলতার গল্প শোনান তিনি।

শাকিল বলেন, ‘এভারেস্টে ওঠার পথে বেজক্যাম্পে তাঁবুতে রাত্রি যাপন করতে হয়। কিন্তু তাঁবুতে ঘুম হতো না। এভারেস্ট জয় করে দেশে এসে কী কী গল্প শোনাব, রাত জেগে এসব ভাবতাম। জয়ের পর আমরা সবাই উদ্‌যাপন করি। কিন্তু এর পেছনেও অনেক গল্প থাকে, যা সবার জানা দরকার।’

এভারেস্ট জয়ের পরতে পরতে ছিল বিপদের হাতছানি। এসব অভিজ্ঞতা স্মরণ করে শাকিল বলেন, ‘এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পে যাওয়ার পথে একাধিক পর্বতারোহীর মৃতদেহ দেখেছি। একসময় মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছিলাম। তবে হাল ছেড়ে দিইনি। আর যেদিন চূড়ায় উঠলাম, সেই মুহূর্তে কোনো অনুভূতি ছিল না। শুধু মনে হচ্ছিল, দেশের পতাকা উড়িয়েছি, এখন বেঁচে ফিরতে হবে। কারণ, আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না।’

ইকরামুল হাসানকে এই সংবর্ধনা দিয়েছে তাঁর অভিযানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রাণ। অনুষ্ঠানে প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, ‘আজ শুধু উদ্‌যাপন নয়, শাকিলের অদম্য ইচ্ছা এবং ইচ্ছা থাকলেই যে অর্জন করা যায়, সেই অনুপ্রেরণাকে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। তাহলে তারাও অসাধ্যকে সাধন করতে পারবে। দেশের জন্য অর্জন করবে সম্মান। ইতিহাস সৃষ্টি করার জন্য প্রাণ গ্রুপের পক্ষ থেকে শাকিলকে ধন্যবাদ।’

অনুষ্ঠানে ইকরামুল হাসানের পরিবার, তাঁর ক্লাব বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) সদস্যরা, তাঁর অভিযানের স্ন্যাকস পার্টনার মিস্টার নুডলসের জেনারেল ম্যানেজার তোষন পালসহ প্রাণ গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনার অংশ হিসেবে ইকরামুল হাসান ও তাঁর মায়ের হাতে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেয় প্রাণ।

পরিব্রাজক ও বিএমটিসির সদস্য তারেক অণু বলেন, ‘এভারেস্টে ওঠা আনন্দের সংবাদ, তবে তার চেয়েও আনন্দের সংবাদ হলো শাকিলের সুস্থভাবে ফিরে আসা। আমার বড় আগ্রহের জায়গা ছিল ওর পরিবেশ নিয়ে কাজ করার বিষয়টি। সে প্লাস্টিক ফ্রি ও পরিবেশ সচেতনতার বাণী ছড়িয়েছে। সেই সুযোগ করে দেওয়ায় পৃষ্ঠপোষককেও ধন্যবাদ।’

ইকরামুল হাসান সমুদ্র থেকে শৃঙ্গ ছোঁয়ার এই অভিযানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপের কাছে। ১৯৯০ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো এভারেস্ট শৃঙ্গে আরোহণের পরিকল্পনা করেন। তাঁর একক অভিযানটির নাম দেন ‘সি টু সামিট এক্সপেডিশন’। অর্থাৎ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে হেঁটে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পৌঁছানোর প্রয়াস। টিম করেছিলেনও তা-ই, ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে ৯৬ দিনে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পা রাখেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে। ৩৫ বছর আগের ম্যাকার্টনির সেই কৃতিত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের পর্বতারোহী ইকরামুল হাসানও তাঁর অভিযানের নাম দেন ‘সি টু সামিট’, অর্থাৎ সমুদ্র থেকে শৃঙ্গ। সেই লক্ষ্যেই গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে এভারেস্ট চূড়ার উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেন। চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও মুন্সিগঞ্জ হয়ে ১২ দিন পর ঢাকায় পৌঁছান। কয়েক দিন বিরতি দিয়ে আবার হাঁটা শুরু করে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ হয়ে ২৮ মার্চ পৌঁছান পঞ্চগড়ে। ইকরামুল হাসান পরদিন বাংলাদেশ থেকে প্রবেশ করেন ভারতে। সে দেশের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং হয়ে ৩১ মার্চ পা রাখেন নেপালে। এভাবে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে গত ২৯ এপ্রিল এভারেস্ট বেজক্যাম্পে পৌঁছান ইকরামুল হাসান।

তার পর থেকে সেখানেই অবস্থান করছিলেন ইকরামুল হাসান। মাঝে ৬ মে রোটেশনে বের হন। একে একে ক্যাম্প–৩ পর্যন্ত পৌঁছে আবার বেজক্যাম্পে নেমে আসেন ১০ মে। এই পুরো রোটেশন এভারেস্ট অভিযানের মূল শৃঙ্গারোহণের প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এরপর মূল অভিযানের জন্য বেজক্যাম্প থেকে ১৬ মে ক্যাম্প–২-এ পৌঁছান ইকরামুল হাসান। ১৭ মে ক্যাম্প-৩ এবং ১৮ মে ক্যাম্প-৪-এ পৌঁছান। এই ক্যাম্প থেকেই সামিট পুশ (সর্বশেষ ক্যাম্প থেকে চূড়ার পানে যাত্রা) করেন শাকিল। ১৯ মে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ছয়টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবের পদ হারানোর গুঞ্জন

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১:৪৯ অপরাহ্ণ
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবের পদ হারানোর গুঞ্জন

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার খবর ভিত্তিহীন ও অসত্য বলে জানিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদ। এ ধরনের গুজবে কান না দিতে এবং বিভ্রান্ত না হতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন।

সে কারণে তিনি আপাতত দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন না। তবে তিনি আগামী রবিবার থেকে পুনরায় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। তাঁর দ্রুত সুস্থতার জন্য সব নেতাকর্মী ও সমর্থকদের দোয়া কামনা করা হচ্ছে।’
এ ছাড়া শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয় রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে ছাত্রদল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এসব খবরে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। এমন অবস্থায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।