খুঁজুন
সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৩ চৈত্র, ১৪৩১

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

অতিরিক্ত খেলাপি ঋণে বিপর্যস্ত ৫ ব্যাংক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:২৯ অপরাহ্ণ
অতিরিক্ত খেলাপি ঋণে বিপর্যস্ত ৫ ব্যাংক

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লুটপাটের কারণে সৃষ্ট খেলাপি ঋণের আগ্রাসী থাবায় ৫টি বড় ব্যাংক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকেরও বেশি আটকে রয়েছে ওই ৫ ব্যাংকের কাছে। এতে ওইসব ব্যাংকের মূলধন ও আয় কমে গেছে। প্রভিশন ঘাটতি ও খারাপ সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। এতে ব্যাংকগুলোতে সংকট আরও বাড়বে।

রোববার (১৬ মার্চ) প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।

প্রতি তিন মাস পর পর এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ আরও বেড়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে। তবে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকনীতি সহায়তা বাড়িয়ে আর্থিক দুর্বলতা কাটাতে সহায়তা করছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১৭ শতাংশ। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে শীর্ষ ৫ ব্যাংকের কাছে রয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। যা মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি বা প্রায় ৫১ শতাংশ। দেশের মোট ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে বাকি ৫৬টি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ রয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। যা মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকের কম বা ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ।

এদিকে খেলাপি ঋণের শীর্ষে ১০ ব্যাংকে রয়েছে ২ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা। যা মোট খেলাপির ৭১ শতাংশ। বাকি ৫১টি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ রয়েছে ৮৩ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। যা মোট খেলাপির ২৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।

প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় খেলাপি ঋণে শীর্ষ ব্যাংকগুলোতেও এর পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে। আগে শীর্ষ ৫ ব্যাংকে মোট খেলাপির ৩৫ শতাংশ ছিল। এখন তা ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যে চারটি রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও একটি বেসরকারি খাতের ব্যাংক।

গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেড়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ফলে শীর্ষ ৫ ব্যাংকে খেলাপির পরিমাণ আরও বেড়েছে।

সাধারণত ৫ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ থাকলে ওই ব্যাংককে ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়। বর্তমানে শীর্ষ ৫ ব্যাংকের প্রতিটিতে খেলাপি ঋণ রয়েছে ৪০ শতাংশের বেশি। ২০ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে ১৪টি ব্যাংকে। মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে ৮২ শতাংশই আদায় অযোগ্য কুঋণে পরিণত হয়েছে। ফলে এসব ঋণ আদায়ের সম্ভাবনাও কম।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক দখল করে ব্যাপক লুটপাটের কারণে ওইসব ঋণ এখন খেলাপি হচ্ছে। যে কারণে লুটপাটের শিকার ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে বেপরোয়া গতিতে। এর প্রভাবে ব্যাংক খাতে সম্পদের গুণগত মান ও আয় কমে যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে মূলধন ও প্রভিশন ঘাটতি। যা সার্বিকভাবে ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

আগে আর্থিক খাতের খেলাপি ঋণ ও দুর্বলতাগুলোকে আড়াল করে রাখা হতো। যে কারণে বাস্তব চিত্র প্রকাশিত হয়নি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তা প্রকাশ পেতে শুরু করে। যে কারণে এখন প্রতি প্রান্তিকেই খেলাপি ঋণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

ব্যাংকগুলোর বড় গ্রাহকরা খেলাপি হয়ে পড়ায় ও লুটপাটের ঋণ সরাসরি খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করায় এর পরিমাণ বেশি মাত্রায় বাড়ছে। গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ বেশি বাড়লে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বৈদেশিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ কারণে খেলাপি ঋণ যথাসম্ভব কম দেখানো হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু খেলাপি ঋণ নবায়ন করতে বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। যাতে খেলাপির হার কমে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো কারণে ব্যাংকের বড় গ্রাহকরা খেলাপি হলে এর পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। তখন মূলধন ঘাটতিও বেড়ে ব্যাংকগুলোতে বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের সংকট আরও বেড়ে যাবে।

এদিকে সম্পদের গুণগত মান কমার কারণে ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বেড়ে গেছে। মাত্রাতিরিক্ত হারে এ সম্পদ বাড়ায় এর বিপরীতে নির্ধারিত হারে প্রভিশন রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন খাতে ঘাটতি আরও বেড়ে যাচ্ছে।

মোট সম্পদের ৩১ শতাংশ শীর্ষ ৫ ব্যাংকের হাতে রয়েছে। শীর্ষ ১০ ব্যাংকের হাতে রয়েছে ৪৬ শতাংশ সম্পদ। অর্থাৎ শীর্ষ ৫ ও ১০ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ মাত্রাতিরিক্ত বাড়লেও তাদের সম্পদ বাড়েনি। বরং খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বেড়ে গেছে। যে কারণে ব্যাংকগুলোর সংকট আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দীর্ঘদিন মিলছে না ভিসা, ভোগান্তি চরমে

ইতালির ভিসা জটিলতা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার দিকে তাকিয়ে ভিসা প্রত্যাশীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ
ইতালির ভিসা জটিলতা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার দিকে তাকিয়ে ভিসা প্রত্যাশীরা

ইতালির ভিসা জটিলতা সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ইতালির ভিসা প্রত্যাশীরা। ওয়ার্ক পারমিট জমা দেওয়ার পরও দেড় থেকে দুই বছর ইতালির ভিসা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে রবিবার (১৬ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইতালির ভিসা প্রত্যাশীরা।

কয়েকমাস যাবৎ ইতালির ভিসা জটিলতা নিরসনে ইতালি সরকার ও এম্বাসি এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মহলের সাথে আলাপ আলোচনা ও যোগাযোগ এবং ধারাবাহিক আন্দোলনের পরও উদ্ভুত জটিলতা নিরসনে কোন ইতিবাচক ফল পরিলক্ষিত না হওয়ায়, আয়োজন করা হয় ইতালি ভিসা প্রত্যাশী ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা রাষ্ট্রের কুটনৈতিক ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ইতালির ভিসা না পাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। তবে পার্শ্ববর্তী দেশে এই সুবিধা বহাল রয়েছে; যা ইউরোপে বাংলাদেশের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরী হচ্ছে। অন্যদিকে পাশের দেশগুলো ইউরোপে অনেক বেশী গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। উদ্ভুত জটিলতার দরুণ দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা পর্যায়ক্রমে তাঁদের ভোগান্তি, হয়রানি ও ক্ষতির কথা উল্লেখ করে পুরো বিষয়টা সরকারকে সমন্বয় করে দ্রুত ভিসা সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানান।

যেসমস্ত ভুক্তভোগী তাঁদের অসহায়ত্ব ও নিরুপায় চিত্র তুলে ধরেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন:
মোহাম্মদ অপু, লোটাস পারবেজ, মাসুদ রানা, মোঃরিয়াদ হোসেন, আতিকুর রহমান, সাইদুল সরদার, মোঃ মেহেদী হাসান, ইউসুফ অনিক সহ বিভিন্ন উপায়ে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া আরো কয়েকজন।

বক্তারা জানান, ভুক্তভোগীর সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশেষত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের দিকে চেয়ে আছেন। এসময় তাঁরা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক দূর্দশার কথা জানান। আশু কোন সমাধান না আসলে ঈদের পরে ৬০ হাজার ভুক্তভোগী আন্দোলনে নামবে বলে জানিয়েছেন ইতালির ভিসা প্রত্যাশীরা। এসময় প্রয়োজনে রেমিট্যান্স বন্ধ করে দেয়ার কথাও জানান তাঁরা।

কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশ হলেই লভ্যাংশ দেওয়া বন্ধ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:৪০ অপরাহ্ণ
কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশ হলেই লভ্যাংশ দেওয়া বন্ধ

কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশ হলে ঐ ব্যাংক আর লভ্যাংশ দিতে পারবে না। মূলধন ও প্রভিশন ঘাটতি কিংবা অন্য কোনো সংস্থান ঘাটতি রেখেও আর লভ্যাংশ দেওয়া যাবে না। আবার মূলধন ভিত্তি সবচেয়ে ভালো থাকা এবং ভালো মুনাফা করা ব্যাংকেও সর্বোচ্চ লভ্যাংশের সীমা মানতে হবে। একটি ব্যাংক কোনো অবস্থায় পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ কিংবা নিট মুনাফার ৫০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না। ২০২৫ সালের লভ্যাংশ দেওয়ার ক্ষেত্রে এ নীতিমালা কার্যকর হবে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক করোনার কারণে ২০২০ সাল থেকে লভ্যাংশ বিতরণের ওপর বিধিনিষেধ দিয়ে আসছে। এতদিন কেবল প্রভিশন সংরক্ষণে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংকের লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ ছিল। এবার নতুন করে অনেক ধরনের শর্ত যুক্ত করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, ব্যাংক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা, আর্থিক সক্ষমতা এবং শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের রিটার্নের বিষয় বিবেচনা করে ব্যাংকগুলোকে লভ্যাংশ বিতরণে এই নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, একটি ব্যাংক কেবল বিবেচ্য পঞ্জিকাবর্ষের মুনাফা থেকে নগদ লভ্যাংশ দিতে পারবে। কোনোভাবেই পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রেও আরো কিছু শর্ত মানতে হবে। কোনো ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের হার সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের বেশি হলে লভ্যাংশ দিতে পারবে না। ঋণ, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে কোনো ধরনের সংস্থান ঘাটতি থাকা যাবে না। আবার সিআরআর ও এসএলআর ঘাটতির কারণে আরোপিত দণ্ড সুদ ও জরিমানা অনাদায়ি থাকলে লভ্যাংশ দিতে পারবে না। প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডেফারেল সুবিধা বহাল থাকা অবস্থায় লভ্যাংশ দেওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২২ ও ২৪ ধারা যথাযথ পরিপালন করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়ে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এটি মোট ঋণের ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। বর্তমানের এ খেলাপি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২ লাখ ১৩১ কোটি টাকা বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি বলেছেন, আগামীতে খেলাপি ঋণ আরো বাড়বে। আমরা এখনো খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ চূড়াই পৌঁছাইনি। কোনো তথ্য আমরা লুকিয়ে রাখব না। খেলাপি ঋণ ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় আগামীতে অনেক ব্যাংক আর লভ্যাংশ দিতে পারবে না। সব শর্ত পরিপালন করলেও লভ্যাংশ বিতরণের একটি সীমা মানতে হবে। আর ঘোষিত লভ্যাংশের পরিমাণ কোনোভাবেই পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশের বেশি হবে না।

এতে বলা হয়েছে, যেসব ব্যাংকের প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর পর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে আড়াই শতাংশ আপৎকালীন সুরক্ষা সঞ্চয়সহ (ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফার) ন্যূনতম ১৫ শতাংশ মূলধন থাকবে-ঐ ব্যাংক সামর্থ্য অনুযায়ী লভ্যাংশ দিতে পারবে। তবে সর্বোচ্চ লভ্যাংশ ৫০ শতাংশের বেশি হবে না। আবার এমনভাবে লভ্যাংশ দেওয়া যাবে না যাতে করে লভ্যাংশ পরবর্তী মূলধন পর্যাপ্ততার হার সাড়ে ১৩ শতাংশের নিচে নেমে যায়। কনজারভেশন বাফারসহ যেসব ব্যাংকের সাড়ে ১২ শতাংশের বেশি, তবে ১৫ শতাংশের কম মূলধন থাকবে তারা সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে লভ্যাংশ-পরবর্তী কোনোভাবেই মূলধনের হার সাড়ে ১২ শতাংশের নিচে নামতে পারবে না। আর যেসব ব্যাংকের মূলধনের হার ১০ শতাংশের বেশি ঐ ব্যাংক যত মুনাফাই করুক কেবল স্টক লভ্যাংশ দিতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নীতিমালা চলতি বছরের সমাপ্ত বছরের লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ২০২৪ সালের সমাপ্ত বছরে লভ্যাংশের ক্ষেত্রে ২০২১ সালের নির্দেশনা মানতে হবে। তবে ঐ নির্দেশনায় ডেফারেল নেওয়া ব্যাংকের ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেওয়ার যে সুযোগ রাখা হয়েছিল তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংক ২০২৪ সালের জন্য কোনো লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারবে না।

মন্টু হত্যাকাণ্ড

নিহতের পরিবারের সঙ্গে তারেক রহমানের ঐতিহাসিক আলাপ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:৩৫ অপরাহ্ণ
নিহতের পরিবারের সঙ্গে তারেক রহমানের ঐতিহাসিক আলাপ

বরগুনায় আলোচিত মন্টু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে ন্যায়বিচার পেতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস এবং বিএনপি সবসময় তাদের পাশে থাকবে বলে জানান।

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি করইতলা এলাকার মন্টুর বাড়িতে উপস্থিত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানের মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, আপনারা বাংলাদেশের নাগরিক। আপনাদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। তাই বিএনপি আপনাদের পাশে থাকবে। আপনারা যাতে ন্যায়বিচার পান; আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাটি করব। ভয় পাবেন না, দেশের মানুষ ও বিএনপি আপনাদের পাশে আছে।

স্বামী হত্যার বিচার দাবি করে মন্টুর স্ত্রী বলেন, মেয়ে ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে আমার স্বামী নিহত হয়েছে। এখন আমার তিনটি সন্তান নিয়ে কী করব? আমার তো কোনো নিরাপত্তা নেই।

এ সময় তারেক রহমান বলেন, আমি আমার নেতৃবৃন্দকে বলেছি, আমার নেতৃবৃন্দ আপনার ওখানে যাচ্ছে। এছাড়াও আমান ওখানে আছে। আমাদের দলের আরও সিনিয়র নেতাদেরকে আমরা বলেছি আপনার ওখানে যাবে, কথা বলবে। এবং আপনার কী কী সহযোগিতা প্রয়োজন আমাদেরকে বলবেন। কতটুকু পারবো জানি না; তবে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব আপনার পাশে দাঁড়াতে। আপনি যাতে আইনের শাসন পান, ন্যায়বিচার পান সেজন্য আমার দলের যারা উকিল আছেন তাদেরকে আমরা সেভাবেই নির্দেশনা দেব।

নিহতের ঘটনার ৬ দিন পার হলেও কোনো আসামি ধরা পরেনি এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, আপনি টেনশন করবেন না। আমরা দেখি, আপনার জন্য কি ব্যবস্থা করতে পারি। বাচ্চাদেরকে নিয়ে যে টেনশনে আছেন; ইনশাআল্লাহ আমরা একটা ব্যবস্থা করব আপনার জন্য।

তারেক রহমান আরও বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় আইনজীবী ফোরামকে আমি নির্দেশনা দিচ্ছি তারা ব্যবস্থা নেবে। এছাড়াও দলীয়ভাবে বসে ভুক্তভোগী পরিবারকে যাতে বাচ্চাদের নিয়ে কষ্ট করতে না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ১১ মার্চ রাত ১টার দিকে বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি কড়ইতলা এলাকায় নিজ বাড়ির পেছন থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা করেন।

এর আগে, ৫ মার্চ মন্টুর সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় সৃজীব চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই দিনই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে এবং আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মন্টুর মরদেহ উদ্ধারের পর সন্দেহভাজন ৪ জনকে আটক করা হলেও পরে তিনজনকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় এবং একজনকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।