‘জামায়াত সংখ্যালঘু মতবাদে বিশ্বাসী নয়’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সংখ্যালঘু কনসেপ্টে (মতবাদে) বিশ্বাসী নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী আমরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তাই জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সুশাসন ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’
সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মিরপুর ও কাফরুল এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে এ মতবিনিময় করে দলটি।
মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘সম্প্রীতিতে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। এখানে কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। অধিকারের ক্ষেত্রে আমরা সবাই সমান। আমাদের সংবিধানও সব নাগরিকের জন্য সে নিশ্চয়তা দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হবে। দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত নারীরা একাকী ভ্রমণ করলেও তাদের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাবে না। এমনই একটি ইনসাফ ও ন্যায়বিচারপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। যেখানে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে।’
জামায়াত দেশের বেকার সমস্যার সমাধান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা দেশের শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছি। এক্ষেত্রে কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ আমরা করি না। বরং মানুষকে ভালোবেসেই আমরা আমাদের আদর্শের প্রচার ও প্রসার ঘটাতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় শত্রুদের চিহ্নিত করে সম্মিলিতভাবে তাদের মোকাবিলা করতে হবে। আগস্ট বিপ্লবের চেতনাই ছিল সব ক্ষেত্রে ন্যায়, ইনসাফ ও জাস্টিস প্রতিষ্ঠা। তাই এই চেতনা থেকে আমাদের পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
এসময় তিনি ফ্যাসিবাদী আমালের লুটপাট, দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রসঙ্গে বলেন, ‘যারা চাঁদাবাজি, ঘুস, দখলদারি ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তারা জাতীয় শত্রু। জামায়াতের নেতাকর্মী তো দূরের কথা, কোনো সমর্থকের বিরুদ্ধে এসব অপকর্মের কোনো অভিযোগ নেই। বরং আমরা এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সব সময়ই সোচ্চার।’
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য লস্কর মুহাম্মদ তাসলিম প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মো. শহিদুল্লাহ ও শাহ আলম তুহিন, মজলিসে শুরা সদস্য রেজাউল করিম ও ডা.আহসান হাবিব। এতে আরও বক্তব্য রাখেন- মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি তপনেন্দ্র নারায়ণ হোড়, সাধারণ সম্পাদক হরিপদ দাস দোলন, কেন্দ্রীয় মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ডা. বিপ্লব বিজয়ী হালদার, সাবেক সভাপতি নিথীশ কুমার সাহা, মনোজ সরকার, শিব শঙ্কর সাহা, দেবদ্রী চক্রবর্তী প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন