খুঁজুন
বুধবার, ২ এপ্রিল, ২০২৫, ১৯ চৈত্র, ১৪৩১

নজিরবিহীন সংকটে ১৪ দলের শরিকরা

সিনিয়র রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩:৩৯ অপরাহ্ণ
নজিরবিহীন সংকটে ১৪ দলের শরিকরা

রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। জোটের শরিক দলগুলো রাজনৈতিকভাবে নিষ্প্রভ, নেতা-কর্মীরাও এক প্রকার সংশয়-দোলাচলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন।

কেননা তারা কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে পারছেন না। পারবেন কি না, সেটাও তারা জানেন না।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী লীগের সরকারের। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। বিদেশে পালান আওয়ামী লীগের শীর্ষ অনেক নেতা ও পতিত সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। অনেকে গা ঢাকা দেন।

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরাও আড়ালে চলে যান। প্রায় চার মাস পার হওয়ার পরও এই দলগুলোর নেতা-কর্মীদের আতঙ্ক কাটছে না। দলগুলো স্থবির, নিস্ক্রীয় ও অস্থিত্বহীন হয়ে আছে।

২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত ১৪ দলে রয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, গণ-আজাদী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি (জেপি) ও কমিউনিস্ট কেন্দ্র। এর মধ্যে গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, গণ-আজাদী লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র ছাড়া বাকি সবারই নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন রয়েছে।

রাজনৈতিক ‘সত্তা’ আলাদা হলেও ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, তরিকত ফেডারেশনের মতো দলের শীর্ষ নেতারা অনেকটাই শেখ হাসিনার হুকুম তামিল করতেন। এমনকি জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সরকারকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছিল ১৪ দল। আগস্টের প্রথম থেকে তারা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামারও পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু সরকার আর তার দল ও শরিকদের সব পরিকল্পনা উড়িয়ে দিয়ে অভ্যুত্থান ঘটে যায় ৫ আগস্ট।

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ১৪ দলের শরিক দলের নেতাদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন ও জাসদের হাসানুল হক ইনু গ্রেপ্তার হয়েছেন সরকার পতনের প্রথম দিকেই।

‘সুসময়ে’ দলের শক্তি ও সামর্থ্য অনুসারে নানা কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে অবস্থান জানান দিলেও গত ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত দলগুলোর কোনো নেতাকর্মী সক্রিয় কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেননি। প্রকাশ্যে মাঠে নামতে তো পারছেই না, ঘরোয়াভাবেও কোনো সভা করার সুযোগও পাচ্ছে না দলগুলো। কেন্দ্র থেকে জেলা-উপজেলা পর্যন্ত সব জায়গায় একই অবস্থা বিরাজ করছে।

১৪ দলের বেশ কিছু নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নীতি-নির্ধারণী থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে গেছে। কেননা, হত্যা, বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন মামলায় গত দেড় মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার বেড়েছে। এজন্য পতিত সরকারের শরিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরা নজরদারির মধ্যে রয়েছেন। দলের কার্যালয়গুলোয় প্রতিনিয়ত নজরদারি চলছে।

বিশেষ করে জোট শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের নেতা-কর্মীদের ওপর চাপ বেশি। ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় দলগুলোর নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন মামলায় কর্মীদের নামও রয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় আসামি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে পুলিশ যাচ্ছে। যাদের নামে মামলা নেই তারাও অনেকে বাড়িতে থাকছেন না। যেসব মামলায় অজ্ঞাত আসামি রয়েছে সেসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে যেতে পারেন, এমন ধারণা করেও ১৪ দলের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এই সংকটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট টিকবে কি না, তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন জোটের শরিকদের অনেক নেতা-কর্মী। সরাসরি কেউ কিছু না বললেও তারা মনে করেন, ছাত্র আন্দোলনে দেড় সহস্রাধিক হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গে এই জোট বজায় থাকলে তাদের নীতি অনুসরণ করেই চলতে হতে পারে। একই সঙ্গে তাদের মতো আইনি পরিস্থিতিরও মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে নাম না প্রকাশের শর্তে জাসদের এক কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, গ্রেপ্তার বেড়ে যাওয়া, বাড়ি বাড়ি পুলিশ যাওয়া, থানা থেকে কল করে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। দলের যারা নামে পরিচিত বা এলাকার মানুষ যাদের নামে চেনে তাদের সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এতে নেতা-কর্মীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। নানা চাপের মধ্যে হুমকিও বিদ্যমান। গত দেড় মাসে এ ধরনের সমস্যা আরও বেড়েছে। যাদের নামে মামলা নেই তারাও গ্রেপ্তারের ভয়ে আছেন। কত দিন এভাবে চলবে কোনো ধারণাই করা যাচ্ছে না।

ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর এক সদস্য বলেন, দল থেকে কোনো কর্মসূচি নেওয়া যাচ্ছে না। আমরাও প্রকাশ্য কোনো তৎপরতায় যেতে পারছি না। প্রচণ্ড চাপে রয়েছেন আমাদের সব পর্যায়ের নেতারা। কর্মীরাও ভীত। ১৪ দলের শরিক হয়ে সবাই কমবেশি সংকটে দিন পার করছে। ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ বেশি সংকটে রয়েছে। ১৪ দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে মাঝে মধ্যে ফোনে কথা বলি। এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছে আমাদের।

৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব, হামাসকে যে শর্ত দিল ইসরাইল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:৩৩ অপরাহ্ণ
৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব, হামাসকে যে শর্ত দিল ইসরাইল

৫০ দিনের নয়, দখলদার ইসরাইল গাজায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। যার মাধ্যমে ১১ জন জীবিত ইসরাইলি বন্দিকে মুক্ত করার পাশাপাশি ১৬টি মরদেহও ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছে নেতানিয়াহুর সরকার।

Advertisement

বিপরীতে ইসরাইলের কারাগার থেকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি দেওয়া হবে।

সোমবার ইসরাইলি প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজ এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরাইল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কাছে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

প্রস্তাবের প্রধান শর্তগুলো হলো:

৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি;
হামাসের কাছ থেকে ১১ জন জীবিত বন্দির মুক্তি ও ১৬টি মরদেহ ফেরত;
ইসরাইলের কারাগার থেকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি;
যুদ্ধবিরতির ৫ম দিনে হামাসের কাছে বাকি বন্দিদের তথ্য চাওয়া;
১০ম দিনে ১৬ জনের মরদেহ হস্তান্তরের অনুরোধ।
পক্ষগুলোর প্রতিক্রিয়া

যদিও এই প্রতিবেদনের বিষয়ে ইসরাইল, হামাস বা মধ্যস্থতাকারীদের কেউই এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

বর্তমান পরিস্থিতি

নেতানিয়াহুর সরকার মনে করে যে, গাজায় হামাসের হাতে এখনো ৫৯ জন ইসরাইলি বন্দি রয়েছে। যাদের মধ্যে অন্তত ২৪ জন জীবিত।

অন্যদিকে, ইসরাইলি কারাগারে ৯,৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন। যাদের ওপর চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতন ও চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ রয়েছে।

ইসরাইল চলতি বছরের জানুয়ারিতে হওয়া একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন বিমান হামলা চালিয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে অব্যাহতভাবে চালানো এই হামলায় ১,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২,৫০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের হামলায় সবমিলিয়ে ৬৩,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

আইসিসি (International Criminal Court) গত বছর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলমান।সূত্র: আনাদোলু

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি ‘উদ্বেগজনক ও বিভ্রান্তিকর’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:৩১ অপরাহ্ণ
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি ‘উদ্বেগজনক ও বিভ্রান্তিকর’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বাংলাদেশে ইসলামিস্টদের উত্থান নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি উদ্বেগজনক এবং বিভ্রান্তিকর।

মঙ্গলবার সিএ প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধটি ইঙ্গিত দেয় যে বাংলাদেশে ধর্মীয় চরমপন্থা উত্থানের দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভ্রান্তিকর এ চিত্রায়ন কেবল দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক গতিশীলতাকে অতি সরলীকৃত করে না বরং ১৮ কোটি মানুষের একটি সমগ্র জাতিকে অন্যায়ভাবে কলঙ্কিত করার ঝুঁকিও তৈরি করে।

নিউইয়র্ক টাইমস প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যখন নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করছে, তখন কট্টরপন্থি ইসলামিস্টরা একটি সুযোগ দেখতে পাচ্ছে। তবে এ বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে প্রেস উইং বলছে, নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধটি বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি উদ্বেগজনক এবং একপেশে দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।

সিএ প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকাশ করার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে উসকানিমূলক নিবন্ধের ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে স্বীকৃতি দেওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বছর ধরে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি করেছে সেটাকে এবং পরিস্থিতির জটিলতাকে স্বীকার করা উচিত।

আরও বলছে, যদিও নিবন্ধটি ধর্মীয় উত্তেজনা এবং রক্ষণশীল আন্দোলনের কিছু ঘটনা তুলে ধরেছে, তবে এটি অগ্রগতির বৃহত্তর প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করেছে। বাংলাদেশ নারীদের অবস্থার উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সুরক্ষা এবং কল্যাণের জন্য বিশেষভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি এমন একটি সরকার যা নারীর অধিকার এবং সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। অথচ নিবন্ধে এর উলটোটা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের মতো একটি দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ধর্মীয় সহিংসতার মধ্যে পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর এবং তার পর থেকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘটিত অনেক সংঘর্ষকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যদিও বাস্তবে এসব ঘটনা ঘটেছিল রাজনৈতিক কারণে। রাজনৈতিক দলগুলি প্রায়শই সমর্থন জোগাড় করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। যা বিষয়টিকে জটিল করে তোলে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ধর্মীয় নিপীড়নের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে। সুতরাং পুরো পরিস্থিতিকে সাম্প্রদায়িক সংঘাত হিসেবে উপস্থাপন করা বিভ্রান্তিকর। এটি প্রকৃত রাজনৈতিক এবং আর্থ-সামাজিক বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করে।

প্রেস উইং জানিয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য তার প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করেছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সন্ত্রাসবাদ দমন প্রচেষ্টার সাথে তার চলমান কাজ এই প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করে। সামাজিক সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে চরমপন্থা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টা ভুল তথ্যের বিস্তারের দ্বারা ম্লান হওয়া উচিত নয়।

চলছে ষড়যন্ত্র, মূল মাস্টারমাইন্ড চিহ্নিত

জয় বাংলা ব্রিগেড প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা !

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ১:০৮ পূর্বাহ্ণ
জয় বাংলা ব্রিগেড প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা !

গেল ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণআন্দোলনের মুখে পতন হয় স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের। তারপর থেকেই দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকেই ভারতে পলাতক রয়েছে। আর সেই ভারত থেকেই চলছে বাংলাদেশকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে আসছে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের মহাষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে এমন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা ও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে। এরই মধ্যে শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগ আরও ঘনীভূত হয়েছে কলকাতায় আয়োজিত এক ইফতার পার্টিতে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পরিকল্পনার তথ্য প্রকাশের পর।

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কলকাতার রাজারহাটে এক ইফতার পার্টিতে অংশ নেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নাসিম, মেয়র জাহাঙ্গীর, সম্রাটসহ শতাধিক আওয়ামী ঘনিষ্ঠ পলাতক নেতা। উপস্থিত ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তার স্ত্রী।

পরদিন একই স্থানে ছাত্রলীগের শতাধিক পলাতক নেতার আরেকটি ইফতার অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল স্পষ্টভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যে কোনো মূল্যে উৎখাতের নির্দেশ দেন এবং তথ্যসূত্রের দাবি অনুযায়ী, তিনি নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করেন যে অস্ত্র ও অর্থের অভাব হবে না।

২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর “জয়বাংলা ব্রিগেড” নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের বৈঠকে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা হয় বলে সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে।

সেখানে শেখ হাসিনা পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের রূপরেখা ও প্রয়োজনে গৃহযুদ্ধের ডাক দেন বলে অভিযোগ। ওই বৈঠকে দেশ-বিদেশের ৫৭৭ জন অংশ নেন।

এর মধ্যে ৭৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে, এবং বাকি ৫০০ জনকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও দুবাইতে পালিয়ে থাকা আওয়ামী ঘনিষ্ঠ নেতারাও একই এজেন্ডা বাস্তবায়নে সক্রিয়। কলকাতা, দিল্লি, আগরতলা ও মেঘালয়ের মাটিও নির্বিঘ্নে ব্যবহার করছেন তারা।

গঠিত হয়েছে বিভিন্ন গ্রুপ। গঠিত হয়েছে কোর গ্রুপ। মধ্য রমজান থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি বৈঠকের তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে।

যদিও শেখ হাসিনা এখনও সরাসরি কোনো বিবৃতি দেননি, তবে সিআইডির দাবি অনুযায়ী, ষড়যন্ত্রের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তাকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদ্রোহিতার বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণ করা হবে। দেশের ভেতর ও বাইরে সক্রিয় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে অভিযুক্তদের।

সূত্র: https://www.facebook.com/watch/?v=625675083619141&rdid=ezVPoexOrUH9TrsP