খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৫ পৌষ, ১৪৩১

জিয়াউলের নেতৃত্বে ‘কিলিং স্কোয়াড' চালায় গুম-খুন

ইলিয়াসকে গুম করা হয় শেখ হাসিনার নির্দেশে, গোপন তথ্য ফাঁস করলেন জড়িত র‍্যাব সদস্য

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩:১২ অপরাহ্ণ
ইলিয়াসকে গুম করা হয় শেখ হাসিনার নির্দেশে, গোপন তথ্য ফাঁস করলেন জড়িত র‍্যাব সদস্য

ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থ্যানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপরই ‘আয়নাঘর’ নামক বন্দিশালা থেকে গত ১৫ বছরে আটক অনেকেই ছাড়া পান। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রটে ‘আয়নাঘরে’ পাওয়া গেছে বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে। পরে অবশ্য জানা যায়, ইলিয়াস আলীকে গুমের পর পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সিলেট অঞ্চলে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এম ইলিয়াস আলীকে গুম করার পর হত্যা করে মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে একটি ‘কিলিং স্কোয়াড’। হত্যার পর খুনিচক্র ইলিয়াস আলীর লাশ যমুনা নদীতে ফেলে দেয়। এই চাঞ্চল্যকর গুম ও হত্যার নির্দেশদাতা ছিলেন খোদ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিতে র‌্যাব সদস্য সার্জেন্ট তাহেরুল ইসলাম ইলিয়াস আলীকে অপহরণের পর লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য দেন।

এ নিয়ে সোমবার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দৈনিক আমার দেশ। সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানের করা সেই প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর ইলিয়াস আলী গুম ও হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিতে তাহেরুল বলেন, জিয়াউল আহসানের নির্দেশে ঘটনার রাতে শেরাটন হোটেল থেকে তিনি ইলিয়াস আলীকে অনুসরণ করেন।

মহাখালী পৌঁছার পর জিয়াউল আহসান নিজেই আরেকটি টিম নিয়ে ইলিয়াস আলীর গাড়ি অনুসরণ করেন। ইলিয়াস আলীর গাড়ি বনানীর ২ নং সড়কের বাসার সামনে পৌঁছার আগেই বনানীর সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়। ইলিয়াস আলীর সঙ্গে তার ড্রাইভার আনসারকেও অপহরণ করা হয়। গাড়িটি জলখাবার হোটেলের সামনে দিয়ে বনানীর ২ নম্বর সড়কে ঢোকার পরে এই অপহরণের ঘটনা ঘটে।

ট্রাইব্যুনাল সূত্র আরও জানায়, ইলিয়াসকে হত্যা ছাড়াও র‌্যাবের জিয়াউল আহসানের কিলিং স্কোয়াডের এক সদস্য একদিনে ১১ জন এবং আরেক সদস্য ১৩ জনকে খুন করেছিল। উল্লেখ্য, জিয়াউল আহসান তখন র্যাবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলে আটক রয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও গুম তদন্ত কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে, ইলিয়াস আলীকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত দুজন সেনাসদস্য বর্তমানে সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। এরা হলেন— ওয়ারেন্ট অফিসার জিয়া ও ইমরুল। জিয়াউল আহসানের রানার হিসেবে গুম ও খুন মিশনের হুকুম তারা তামিল করতেন। খুনিচক্রের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর গুম তদন্ত কমিশন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত টিমের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী এ দুই সদস্যকে ক্লোজড এবং অন্তরীণ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যার পর দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ইলিয়াস আলী সভা করেন তৎকালীন শেরাটন হোটেলে (বর্তমান ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল)। সভা শেষ করে রাত ১১টায় তিনি বের হন এবং গাড়িতে করে বাসায় ফিরছিলেন। অপহরণের লক্ষ্যে জিয়াউলের নির্দেশে শেরাটন থেকেই অনুসরণ করছিলেন র্যাবের সদস্য সার্জেন্ট তাহেরুল ইসলাম। পরবর্তীতে তাকে চিহ্নিত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত টিম। তাকে তদন্ত কমিটিতে আনা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৬৪ ধারায় তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, আমার দায়িত্ব ছিল শেরাটন থেকে অনুসরণ এবং বেতার বার্তায় গতিপথ জিয়াউল স্যারকে জানানো। নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি ইলিয়াস আলীর গাড়ি অনুসরণ এবং প্রতিটি মুহূর্তে গাড়ির গতিপথ জিয়াকে অবহিত করা। মহাখালী পৌঁছার পর ইলিয়াস আলীর গাড়ি সরাসরি অনুসরণ শুরু করেন জিয়ার টিম।

মহাখালী জলখাবার হোটেলের অদূরে বনানীর ২ নম্বর সড়কে গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে থামানোর পর ড্রাইভার আনসারসহ ইলিয়াস আলীকে অপহরণ করে এই টিমের সদস্যরা। এরপরই জিয়া তাহেরুলকে বলেন, ‘তোমার ডিউটি শেষ, চলে যাও।’ নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব শেষে তিনি ফিরে যান। জিয়ার টিম ইলিয়াস আলীকে নিয়ে যাওয়ার পর কী হয়েছে সেটা তিনি বলতে পারবেন না। ’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইলিয়াস আলীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছিল। হত্যার পর তৎকালীন র্যাব কর্মকর্তা এবং পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীতে পদোন্নতি পেয়ে মেজর জেনারেল হওয়া জিয়াউল আহসান অফিসে ফিরে স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আজ বড় একটি অপারেশনে সাকসেসফুল হলাম। শেষ করে তাকে যমুনায় ফেলে দিয়ে এসেছি।’

জিয়া এ কথাও বলেন যে, ইলিয়াস আলী অপারেশনের কথা ঊর্ধ্বতনকে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন বলতে তিনি মেজর জেনারেল তারেক সিদ্দিকি কিংবা শেখ হাসিনাকে বুঝিয়েছেন বলে সূত্রের ধারণা। যাদের সামনে এই কথা জিয়াউল আহসান বলেছিলেন, তাদেরকেও চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত টিম।

এদিকে শেখ হাসিনার নির্দেশে বিভিন্ন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাকে গুম এবং অপহরণের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে গুম তদন্ত কমিশন।

গুম তদন্ত কমিশন সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার নির্দেশেই ইলিয়াস আলীকে গুম এবং খুন করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে এসএসএফ-এর মহাপরিচালক ছিলেন লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সওরাওয়ার্দী। তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ডিজিএফআইর তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে ইলিয়াস আলীকে গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। অথচ পরবর্তী সময়ে ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে ডেকে এনে নাটকও করেছিলেন।

পুরাতন শাড়ি পরে জড়িয়ে ধরেছিলেন ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও কন্যাকে। এ সময় ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে অপহরণ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধের জের হিসেবে এটা করা হয়েছে বলে ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে অবহিত করেছিলেন শেখ হাসিনা।

এদিকে গুম কমিশনের প্রাথমিক রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছে অনেক গুমের ঘটনা শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছিল। এই বিষয়ে ডিজিএফআই’র সাবেক একাধিক মহাপরিচালক গুম কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদেও এ কথা স্বীকার করেছেন।

একনেকে ৪ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ১:০১ পূর্বাহ্ণ
একনেকে ৪ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১০টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারের খরচ হবে ৪ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) একনেক সভায় প্রকল্পগুলো উত্থাপনের পর তাতে অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চট্টগ্রাম কর ভবন নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এদিনের সভায়, যার মেয়াদকাল ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারিত। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪৩৭.০৭ কোটি টাকা এবং এটি সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

মোংলা বন্দরে পশুর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্পও পরিকল্পনায় রয়েছে, যা ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ১৫৩৮.১৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে ১৩৮৪.৩৭ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং ১৫৩.৮২ কোটি টাকা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে হবে।

এছাড়া মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পটির ব্যয় ৭৬৭.২৫ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৩৬.৫৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং মেয়াদকাল জুলাই ২০১৯ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত।

সেইসঙ্গে ‘Establishment of Global Maritime Distress and Safety System & Integrated Maritime Navigation System (EGIMNS)’ প্রকল্পটির ব্যয় ১১৩.৮৫ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৩২.৬০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা নৌপরিবহণ অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।

নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পটির ব্যয় ২২৩.৭৫ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬১৫.৭৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং এর মেয়াদকাল জানুয়ারি ২০২০ থেকে জুন ২০২৭ পর্যন্ত।

এছাড়া, ডাল ও তেলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে টেকসই পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) বাস্তবায়িত হবে ২৬৫.৭৮ কোটি টাকায়, যা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) পরিচালনা করবে। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত।

সিলেট বিভাগে ৪৯৯.৯৯ কোটি টাকায় ‘ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বিএডিসি। এর মেয়াদকাল ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রন ব্রিজ পুনঃনির্মাণ/পুনর্বাসন (২য় সংশোধিত) প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৭৭৩.৪০ কোটি টাকা, যা বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত।

‘ডুপিটিলা-১ ও কৈলাশটিলা-৯নং কূপ (অনুসন্ধান কূপ) খনন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল) এবং এতে ব্যয় হবে ৬৪৬.৪৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

শেষে, Construction of Bangladesh Buddhist Monastery Complex at Lumbini Conservation Area, Nepal প্রকল্পের ব্যয় হবে ৬৮.০৮ কোটি টাকা, যা বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত প্রায় ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ণ
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত প্রায় ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে প্রায় ১৫ মাস ধরে। এই সময়ে অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি। এ ছাড়া, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজায় নিখোঁজ হয়েছে অন্তত ১১ হাজার মানুষ। তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে মঙ্গলবার (৭ জানায়ারি) সন্ধ্যার আগের ২৪ ঘণ্টায় অন্তত আরও ৩১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৮৮৫।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে আরও প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার ১৯৬ জন আহত হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ‘২৪ ঘণ্টায় তিনটি হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনী ৩১ জনকে হত্যা করেছে এবং ৫৭ জনকে আহত করেছে। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপে ও রাস্তায় আটকা পড়ে আছে, কারণ উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।’

এদিকে, ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী পরিকল্পিত ও পদ্ধতিগতভাবে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েল ১ হাজার ৫৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা এবং ৩৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এক বিবৃতিতে পিআরসিএসের স্বাস্থ্য কর্মসূচির পরিচালক বাশার মুরাদ বলেন, ‘গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের মধ্যে প্যারামেডিকস, প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারী দল এবং অ্যাম্বুলেন্স ও হাসপাতালকর্মীসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে ইসরায়েল।’

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজায় পিআরসিএসের চারটি শাখাকে পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে উত্তর গাজার জাবালিয়া শাখা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

মুরাদ আরও বলেন, গাজা শহরের বৃহত্তম পিআরসিএস কেন্দ্র আল-আমাল কমপ্লেক্সও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। সেখানে ইসরায়েলি হামলায় ৪৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে মেডিকেল ও প্যারামেডিক কর্মী এবং সেখানে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরাও রয়েছে।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের এই কর্মী আরও জানান, যুদ্ধ ও সংঘাতপূর্ণ এলাকায় রেড ক্রিসেন্ট ও রেড ক্রসের সুরক্ষা আন্তর্জাতিক আইন নিশ্চিত করলেও গাজা উপত্যকায় পিআরসিএসের প্রায় ৮০ শতাংশ সক্ষমতা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে ইসরায়েল।

মুরাদ বলেন, ‘ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের ফলে রেড ক্রিসেন্টের ৩২ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই গাজা উপত্যকায় দায়িত্ব পালন করার সময় সরাসরি ও পরিকল্পিতভাবে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।’

এর আগে, হামাস ২০২৪ (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলে হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় গণহত্যামূলক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তেল আবিব। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও তারা যুদ্ধ বন্ধ করেনি।

২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। গাজায় প্রাণঘাতী যুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে একটি গণহত্যার মামলা চলছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন

শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ
শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে বুধবার (৮ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।

খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান ৭৭ বছর বয়সী হাসিনা। ওইদিন হিন্দন বিমানঘাঁটিতে পৌঁছানোর পর থেকেই যোগাযোগবিচ্ছিন্ন রয়েছেন তিনি। তবে সূত্রগুলো জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে দিল্লির একটি নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে।

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৩ ডিসেম্বর একটি অস্বাক্ষরিত কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ হাসিনার পাসপোর্টও বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এ অবস্থায় হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতে থাকার সুবিধার্থে সম্প্রতি শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে সূত্রগুলো স্পষ্টভাবে বলেছে, ভারতে শরণার্থীদের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন না থাকার কারণে হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলা হচ্ছে না।

খবরে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জড়িত। এ ধরনের পদক্ষেপে সাধারণত মন্ত্রণালয়টির অনুমোদন প্রয়োজন হয়। স্থানীয় বিদেশি নিবন্ধন অফিসের (এফআরআরও) মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।