শিবপুরে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা
নরসিংদীর শিবপুরে গত (১৬ সেপ্টেম্বর) আইয়ূবপুর ইউনিয়নের আলীয়াবাদ পূর্ব পাড়ার মৃত কলিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে মোঃ রোকন উদ্দিন ভূঁইয়ার জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করেন মাউন আহমেদ ও মাহাবুব এবং তাদের লোকজন। এই জমিতে দুইটি মামলা চলমান, মামলা নং-৮৬৯/২৩ এবং মামলা নং-১০১/২৩।
সরে জমিনে গিয়ে জানা যায়, আলীয়াবাদ পূর্বপাড়ার শাহাবুদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে মাউন আহমেদ ও মাহাবুব ভূঁইয়া দীর্ঘদিন যাবত জোরপূর্বক রোকন উদ্দিন ভূঁইয়া জমি দখলের পাঁয়তারা করে যাচ্ছে ও মাহবুব বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
রোকন উদ্দিন ভুইয়া বলেন, আমি আমার ফুপুর কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছি। আমার ক্রয় করা সম্পত্তি সঠিক আছে বলে সরকার আমার কাছ থেকে খাজনা নিয়ে আমাকে নামজারি করে দিয়েছে। এই জমিতে আমি দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করিতেছি। আমাকে উচ্ছেদ করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এনে হুমকি- ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমাকে মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে মাউন আহমেদ ও মাহাবুব।
এলাকাবাসী জানায়, মাহাবুব বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং তা মেরে দেওয়াই তার পেশা। পাওনাদারা আমাদের গ্রামে এসে ঝামেলা সৃষ্টি করতেছে এবং আমরা নিরীহ গ্রামবাসী মাহবুবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ।
নোয়াদিয়া গ্রামের পিয়াস মিয়া বলেন, ২০২০ সালে আমার ছোট ভাইকে ছয় মাসের ভিতরে বিদেশ পাঠাবেন বলে মাহাবুব তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয় আজ প্রায় চার বছরের বেশি হয়ে যায় আমার টাকা ফেরত দিচ্ছে না। আমি এলাকাবাসীকে জানাইলে এলাকাবাসী আমাকে আশ্বাস দেয় মাহবুবের সাথে কথা বলে আমাকে আমার পাওনা টাকার ব্যবস্থা করে দিবে। আমি এখনো আমার টাকা ফেরত পাইনি। আমি এখানে এসে শুনি আরেক পাওনাদার টাকা চাইতে আসলে তাকে মার দর করে ও উল্টো পাওনাদার কে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।
মিরপুরের সুলতানা আক্তার রিতা বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আমার কাছ থেকে জানুয়ারিতে পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয় মাহাবুব। আমাকে বলে তার ছেলেকে স্কুলের বেতন দিতে পারছেনা স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে। মেয়ের পরীক্ষার ফ্রি দিতে পারছেনা। মাহাবুবের পা ভেঙ্গে গেছে বলে আমার কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দার নেয়। পরে আমি জানতে পারি পাওনাদাররা তাকে মেরে পা ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি আমার পাওনা টাকা চাইতে আসলে আমাকে মেরে রক্তাক্ত জখম করে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি আমি তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করব।
বন্যা শিবপুরের সুফিয়া বেগম বলেন, মাহাবুবের পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে আমাদের বাড়িতে আসছিল আমি তাদেরকে চা নাস্তা দেই। আমার বাড়িতে একটি আইফোন চার্জে লাগিয়ে রেখেছিলাম তারা বাড়ি থেকে যাওয়ার পরে ফোনটি পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরে আমি শিবপুর থানায় ও নরসিংদী ডিবি অফিসে অভিযোগ করেছিলাম। ছয় মাস পরে ডিবির কর্মকর্তাদের কাছে জানতে পারি মাহাবুব ফোনটি চুরি করেছে। খবর পেয়ে মাহাবুব এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। আমার এক ভাই মারা গিয়েছে তারা গরিব মানুষ তাদের অবস্থা তেমন একটা ভালো না। তার ছেলে আকরাম হোসেনকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে তিন লক্ষ টাকা এনেছে মাহাবুব। আজকে প্রায় পাঁচ বছর হয় এখন পর্যন্ত টাকা ফেরত দেয়নি বিদেশও নেয়নি। মাহবুবের কাছে টাকা চাইতে আসলে হুমকি দিচ্ছে। মাহাবুবের বয়ে আমার ভাতিজারা টাকা চাইতে তার বাড়িতে আসতে পারছে না।
মাসুম সাহেব বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মাউন আহমেদ ও মাহাবুব মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক একটি ভিডিও প্রচার করিয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মাসুম সাহেব আরো বলেন, মূলত এই জায়গাটা নিয়ে আয়ূবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান সরকার, ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার বুলবুল, ৭ নং ওয়ার্ডের বিএনপির নেতাকর্মী, আমিসহ এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তিন দিন দরবার পরিচালনার পর সিদ্ধান্ত হয় যে রোকন উদ্দিনের খরিদা সম্পত্তিটি সঠিক ও তার কাগজপত্র সঠিক। মাউন আহমেদ ও মাহাবুব তাদের পক্ষ থেকে শিবপুর আমলীগের সেক্রেটারি রাখিল সাহেবসহ মাহবুবের পক্ষে অনেকে দরবারে উপস্থিত রেখেছিলেন। সমাজে আমাদের সামাজিক মর্যাদা নষ্ট করার জন্য মাউন আহমেদ ও মাহাবুব একটি ভিডিও অপপ্রচার চালিয়েছে আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেছি সঠিক তদন্ত করে তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার বুলবুল বলেন, আমরা বড় ভাই ওবাইদুল মাউন আহমেদ ও মাহবুবের কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছে ভিডিওতে অভিযোগ করেছে অভিযোগটি সম্পন্ন মিথ্যা বানোয়াট। সমাজে আমাদের সামাজিক মর্যাদা নষ্ট করার জন্য মাহাবুব একটি ভিডিও অপপ্রচার চালিয়েছে আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেছি সঠিক তদন্ত করে তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, ভিডিওতে অপপ্রচার যে এই জমিতে মাদক, ইয়াবা সেবন ও ব্যবসা পরিচালনা করিতেছে। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি সঠিক তদন্ত করে আপনারা দেখুন।
এ বিষয়ে জানতে, আইয়ুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান সরকারের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি বলেন আমি মিটিং-এ আছি পরে কথা বলবো।
এ বিষয়ে জানতে, মাহাবুবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আপনার মতামত লিখুন