রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট ও ওষুধের স্বল্পতায় সেবা বন্ধের উপক্রম। পাশাপাশি বিকল পড়ে আছে এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র। এতে বাইরে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও রোগীর স্বজনদের। একই অবস্থা উপজেলার অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতেও।
২০০৫ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম শুরু হয়। এর কিছুদিনের মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এক্স-রে যন্ত্রে। শুরু থেকেই কানই চালু, কখনও বন্ধ থাকছে যন্ত্রটি। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একেবারেই বিকল হয়ে যায়। অপারেটরের অভাবে আলট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসালট্যান্ট অবেদনবিদ, জুনিয়র কনসালট্যান্ট সার্জারি জুনিয়র কনসালট্যান্ট গাইনিসহ ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু কাগজেকলমে আছেন সাতজন। তাদের মধ্যে আবার মাতৃত্বকালীন ছুটিতে একজন, জেলা কারাগারে ডেপুটেশনে একজন ও বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে রয়েছেন একজন। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ চারজন পালাক্রমে ডিউটি করেন।
রাজারহাটে বেহাল স্বাস্থ্যসেবা গেলেই টানাপোড়েন শুরু হয়। গোটা হাসপাতালে একজনও ওয়ার্ডবয় নেই। এতে জরুরি সেবা কার্যক্রমও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। শূন্য রয়েছে মেডিকেল অফিসার, স্টাফ নার্সসহ অর্ধশতাধিক পদ। রয়েছে ওষুধের অপ্রতুলতা।
একই অবস্থা বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রতিগ্রাম স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের। চিকিৎক না থাকায় আড়াই বছর ধরে চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। উনুন উনর টান্ত্রিক মজিদ ও পাঙ্গা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা চলছে ফার্মাসিস্ট দিয়ে। একজন স্যাকমো (উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার) পরিচালনা করছেন নাজিমখান ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ফলে তিন লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত উপজেলাবাসী কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উন্নত চিকিৎসাসেবা গ্রহণে যাদের সামর্থ্য নেই, তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন গ্রাম্য হাতুড়ে চিকিৎসকের ওপর।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা ছানু বেগম, আখের বেগমসহ কয়েকজন বলেন, চিকিৎসক কম, রোগী বেশি। এ কারণে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
নবাব নামে এক যুবক বলেন, যন্ত্রপাতি বিকল। টেকনোলজিস্ট নেই। রোগ নির্ণয় ছাড়াই একই চিকিৎসক সব রোগের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম রসুল রাকিব বলেন, জনবল সংকটে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন