খুঁজুন
সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫, ১২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

বর্বর ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২০ দিনে ৪৯০ শিশু নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ২:৩১ অপরাহ্ণ
বর্বর ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২০ দিনে ৪৯০ শিশু নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় গত ২০ দিনে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৪৯০ শিশু। সোমবার (৭ এপ্রিল) তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজার মিডিয়া অফিসের বরাতে আনাদোলু জানায়, ইসরায়েলি হামলায় গত ২০ দিনে গাজায় ১ হাজার ৩৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা প্রায় ৫০০। এই হত্যাযজ্ঞকে ‘আধুনিক যুগের অন্যতম ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে মিডিয়া অফিস।

গাজার মিডিয়া অফিসের রবিবার প্রকাশিত বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে শিশুদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। বেসামরিক হতাহতের ঘটনাকে দুর্ঘটনা দাবি করে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে তারা, কিন্তু পরিসংখ্যানই প্রমাণ করছে এই হামলা পদ্ধতিগত ও উদ্দেশ্যমূলক।

এর আগে গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল), জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, গত ১৮ মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল পুনরায় হামলা জোরদারের পর গাজায় প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ জন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে।

ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করে জোর দিয়ে বলেন, কোনো কিছুই শিশু হত্যাকে ন্যায্যতা দেয় না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে তিনি বলেন, ১৮ মার্চ ইসরায়েলি বাহিনী আবার হামলা শুরু করার পর থেকে গাজায় প্রতিদিন অন্তত ১০০ শিশু নিহত বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যুদ্ধ তাদের শৈশব কেড়ে নিচ্ছে। যুদ্ধ গাজাকে শিশুদের জন্য বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে।’

লাজ্জারিনি আরো উল্লেখ করেন, দেড় বছর আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ১৫ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

তিনি বলেন, এই বছরের শুরুতে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি গাজার শিশুদের বেঁচে থাকার এবং শৈশবের কিছু অনুভূতি অনুভব করার সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধ পুনরায় শুরু হওয়ায় আবারো তাদের সেই সুযোগ কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

ফিলিপ লাজ্জারিনি আরো বলেন, এটি আমাদের সাধারণ মানবতার ওপর কলঙ্ক লেপন করেছে। শিশুরা যেই স্থানেই থাকুক না কেন, তাদের হত্যাকে কোনোভাবে সমর্থন করা যায় না। এখনই যুদ্ধবিরতি পুনরায় চালু করা জরুরি।

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত রবিবার হামলা আরো বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়লি হামলায় প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজারের বেশি। নিহত ও আহতদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।

ইসলামি বক্তা আমীর হামজাকে কুষ্টিয়া সদরে জামায়াতের এমপি প্রার্থী ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫, ১:২৭ পূর্বাহ্ণ
ইসলামি বক্তা আমীর হামজাকে কুষ্টিয়া সদরে জামায়াতের এমপি প্রার্থী ঘোষণা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে ‘সম্ভাব্য প্রার্থী’ পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের শুরা সদস্য ফরহাদ হুসাইনের পরিবর্তে আগামী সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জনপ্রিয়, প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা মুফতি আমীর হামজাকে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের দায়িত্বশীল সমাবেশ শেষে এই নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা দেওয়া হয়। শহরের হাজী শরীয়তুল্লাহ একাডেমির আবদুল ওয়াহিদ মিলনায়তনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ বিষয়ে রাতে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দীন জোয়ার্দ্দার বলেন, জেলা জামায়াতের আমির আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হুসাইন। সভা শেষে তিনি নতুন প্রার্থী আমীর হামজার নাম ঘোষণা করেন।

সমাবেশে জামায়াতের যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য আলমগীর বিশ্বাস, অধ্যাপক খন্দকার এ কে এম আলী মহসীন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল গফুর, জেলা সেক্রেটারি সুজা উদ্দীন জোয়ার্দ্দার, কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ফরহাদ হুসাইন, কুষ্টিয়া শহর জামায়াতের আমির এনামুল হকসহ দলটির দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছিল জামায়াতে ইসলামী। সে-সময় জেলা জামায়াতের ফেইসবুক আইডিতে চার প্রার্থীর দলীয় একটি ছবি পোস্ট করে এ তথ্য জানানো হয়েছিল। সেখানে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর শুরা সদস্য ফরহাদ হুসাইনের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। জেলা জামায়াতের আমির আবুল হাশেমও তখন এ তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন।

প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়ে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দীন জোয়ার্দ্দার বলেন, সমাবেশে জেলার সব নারী–পুরুষ রুকনেরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতারাও ছিলেন। তাঁদের সবার মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রকে জানিয়ে আমীর হামজার নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

সম্ভাব্য প্রার্থী মুফতি আমীর হামজা দলীয় কোনো পদে না থাকলেও ওলামা বিভাগে কাজ করেন উল্লেখ করে সুজা উদ্দীন জোয়ার্দ্দার আরও বলেন, ‘এটা সম্ভাব্য প্রার্থী। কেন্দ্রের নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে বিচার–বিশ্লেষণ করে পরিবর্তনও হতে পারে। বিকল্প প্রার্থী হিসেবে অনেকে আমার নামও প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু আমি আমীর হামজা প্রার্থী হওয়ায় খুশি। তিনি (হামজা) শুধু কুষ্টিয়ার নন, সারা দেশের গর্ব। দেশের বাইরেও তাঁর ব্যাপক পরিচিতি।’

ড. ইউনুস ৩০ জুনের পর একদিনও থাকবেন না: প্রেস সচিব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ
ড. ইউনুস ৩০ জুনের পর একদিনও থাকবেন না: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ড. ইউনুস ৩০ জুনের পর একদিনও থাকবেন না। রোববার (২৫ মে) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২০ জন নেতার সাক্ষাৎ ও বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রফেসর ইউনূসকে সবাই সমর্থন জানিয়েছেন। আমরা যে সংস্কার করছি, আমরা যে বিচার কাজ শুরু করেছি, নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করেছি, সেটাতে তারা সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।

‘তারা বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার পাশে থাকবেন।’

শফিকুল আলম বলেন, আরও অনেকগুলো বিষয়ে কথা হয়েছে, নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে, সংস্কারের বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা আবারও জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করবেন। ৩০ জুনের ওই পাড়ে যাবে না। এতে সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে: তারেক রহমান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫, ৮:৫৭ অপরাহ্ণ
গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে: তারেক রহমান

গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় দেশে বিনিয়োগ থেমে গেছে, দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ার‌ম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় বিএনপি, প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেই দাবিই পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। এ সরকারের অধীনেই একট সুন্দর নির্বাচনের প্রত্যাশা করে বিএনপি।

রোববার (২৫ মে) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এক সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদের পথ রুদ্ধ করে রাষ্ট্র, সংস্কার ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের জন্য দরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার। সময়ের প্রয়োজনে পুঁথিগত অর্থ্যাৎ সাংবিধানিক ও আইনগত এবং প্রায়োগিক সংস্কারের বিকল্প নেই। অল্প কিংবা সংস্কার বলেও কিছু নেই; রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে আমার কাছে মনে হয় প্রায়োগিক সংস্কারের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের হয়তো নৈতিক ও রাজনৈতিক বৈধতার সংকট নেই; তবে অবশ্যই এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়। সরকার যেহেতু জবাবদিহিমূলক নয়, সেহেতু নৈতিক কারণেই সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের কাছে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন।

জনগণকে অন্ধকারে রেখে ও রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে কোনো পরিকল্পনায় কার্যত টেকসই হয় না, হবেও না বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকার সব দায়িত্ব পালন করবে জনগণ এমনটি আশা করে না। তারপরও সরকারকে নিয়মমাফিক কিছু কাজ করতে হয়।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এ কারণে আমরা দেখছি— প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে আসছে। যদিও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের দাবি-দাওয়া শোনার কেউ নেই এখন।

জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় গড়িমসির সুযোগ নিয়ে পতিত স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠার অপেক্ষায় রয়েছে, এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করে জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তবে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট তাঁবেদার অপশক্তির পথরোধ করা সম্ভব।

তিনি মনে করেন, দলগুলোর মধ্যে প্রক্রিয়াগত বিরোধ থাকলেও ফ্যাসিবাদের উত্থান মোকাবিলায় বিগত ৫ আগস্টের মতোই ঐক্যবদ্ধ।

বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের ভেতরে জাতীয় নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে রাজনৈতিক দলগুলো আবারও জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট দিনক্ষণ ও তারিখের দাবি জানিয়েছে। জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কারে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। জনগণও দেশের ইতিহাসে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায়।