খুঁজুন
বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

ডিসি পদে বাছাই প্রক্রিয়া ও পদায়নে বিতর্ক সৃষ্টিতে উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ
ডিসি পদে বাছাই প্রক্রিয়া ও পদায়নে বিতর্ক সৃষ্টিতে উদ্বেগ

জেলা প্রশাসক পদে কর্মকর্তাদের বাছাই প্রক্রিয়া ও পদায়নে অভাবনীয় বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (BASA)।

শনিবার (৫ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা প্রশাসক পদে কর্মকর্তাদের বাছাই প্রক্রিয়া ও পদায়নে অভাবনীয় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে বিগত সময়ে বঞ্চিত কর্মকর্তারা ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং সামাজিকভাবেও হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন মর্মে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে মর্মে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন প্রত্যাশা করছে।

সেখানে বলা হয়, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব পর্যায়ের তথা বিভাগ ও জেলা পর্যায়সহ সব পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তারা সুশীল সেবক হিসেবে জনগণের পাশে থেকে উন্নয়নমুখী প্রশাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সদস্যদের কল্যাণ, পদপর্যাদা রক্ষাসহ ইত্যাদি কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে বাস্তবায়নে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে আসছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে অভ্যুদয় ঘটে নতুন বাংলাদেশের। সহস্র শহিদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে বৈষম্যহীন ও বঞ্চনামুক্ত একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন গড়ার প্রত্যয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জন-আকাঙ্ক্ষাপূরণে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে, যা সব মহলের প্রত্যাশাও বটে।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান রেখে স্বৈরাচার দোসরমুক্ত উন্নয়ন ও সংস্কারমুখী জনপ্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করতে সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু অতীব দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর ও তথ্য প্রকাশিত হওয়ায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বক্তব্য প্রদানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।

এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলোঃ

>>>দীর্ঘ বঞ্চনার পর যেসব কর্মকর্তা ইতোমধ্যে উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন তাদেরকে দীর্ঘ এক মাস অতিক্রান্ত হলেও যথাযথভাবে পদায়ন না করায় কর্মস্থলে কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বিধায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের পদায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছে।

>>>বিগত স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের দেওয়া সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও তা এখনও সম্পূর্ণরূপে সব ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন না করায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন তা দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছে।

>>>জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক পদায়ন নিয়ে দুর্নীতির যে খবর প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে যেহেতু উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে ইতোমধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠিত হয়েছে, সেহেতু বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন প্রত্যাশা করছে এ বিষয়ে প্রকৃত দোষী চিহ্নিত হয়ে যথাযথ শাস্তির আওতায় আসবে এবং প্রশাসনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।

>>>নতুন প্রজন্মের চাহিদাভিত্তিক কাঙ্ক্ষিত সংস্কারমুখী পুনর্গঠিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে কমিটি গঠন করায় সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধি যেমন যৌক্তিক তেমনি অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করাও সময়ের দাবি হিসেবে বিবেচ্য বিধায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বর্তমান সরকারের প্রতি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসর- উভয় ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।

আজ চীন যাচ্ছেন ড. ইউনূস, থাকবে নানা ইস্যু

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ২:৪৩ অপরাহ্ণ
আজ চীন যাচ্ছেন ড. ইউনূস, থাকবে নানা ইস্যু

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে আজ বুধবার বেইজিং যাচ্ছেন। এ সফরের অন্যতম লক্ষ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে ঢাকা-বেইজিং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। তার সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে, আসতে পারে কিছু ঘোষণাও।

আঞ্চলিক পরিস্থিতির পরিবর্তন এবং ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে উত্তেজনার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার এই সফর ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ড. ইউনূসের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর হিসেবে চীনকে বেছে নেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছে ঢাকা।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের বিস্তারিত গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। তিনি জানান, চীনের হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠেয় বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলনে যোগদান এবং বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য আজ বুধবার চীনের উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামীকাল ২৭ মার্চ বোয়াও সম্মেলনের প্লেনারি সেশনে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এছাড়া এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চীনের স্টেট কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রিমিয়ার দিং ঝুঝিয়াংয়ের বৈঠক হতে পারে।

২৮ মার্চ বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস। সেখানে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় নানা ইস্যু ও সহযোগিতা আলোচনা হবে। একই দিনে হুয়াওয়ে কোম্পানির উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন এন্টারপ্রাইজ পরিদর্শন করবেন প্রধান উপদেষ্টা। ২৯ মার্চ চীনের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় পিকিং ইউনিভার্সিটি তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে এবং সেখানে তিনি বক্তব্য রাখবেন। পরে বেইজিং থেকে চীনের একটি বিমানে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। তার চীন সফরে ৫৭ জনের একটি প্রতিনিধিদল থাকছে।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর, বাংলাদেশের একটি বার্তা:

চীন সফরে বাংলাদেশের চাওয়া কি? সাংবাদিক সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বলেন, এ সফরে চাওয়াটা বহুমাত্রিক। চীন আমাদের অন্যতম বড় উন্নয়ন সহযোগী। দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ছে। আমরা নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে চলেছি, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর হিসেবে চীনকে বেছে নেওয়ার মাধ্যমে একটা বার্তা আমরা দিচ্ছি। তবে এ বার্তা কার উদ্দেশে সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব জানান, এই সফরটি বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ঐতিহাসিক সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করার এবং নতুন দিগন্ত উন্মোচনের একটি সুযোগ তৈরি করবে।

চীন সফরে চুক্তি ও ঘোষণা:

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে পানি সম্পর্ক উন্নয়নে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিষয়ক সহায়তা এবং গণমাধ্যম বিষয়ক সহযোগিতা। এছাড়া অর্থনৈতিক বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে কিছু ঘোষণা আসতে পারে।

তিস্তা প্রকল্প, সামরিক ইস্যুতে আলোচনা:

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো সমঝোতা স্মারক সই হবে কি না—এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মধ্যে বৈঠকে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে বৈঠকটি হবে, সেটি শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের পছন্দ অনুযায়ী কথা বলবেন। তবে, আমাদের দিক থেকে এবং চীনের দিক থেকে পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কথা বলার আগ্রহ আছে। পানি ব্যবস্থাপনার আওতায় তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কথা বলার সুযোগ আছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য, রোহিঙ্গা, জিডিআই, অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

সামরিক বিষয়ে আলোচনা নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমাদের দিক থেকে চীনের সঙ্গে সামরিক বিষয়ে যে আলোচনা আছে তার সাধারণ একটা আলোচনা হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জসীম উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে সাত বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশের দিক থেকে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে সমস্যার যেন সমাধান হয়। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনায় চীনও আমাদের সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, দুই নেতার বৈঠকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যে উদ্ভূত পরিস্থিতি সেটি নিয়ে চীন কী ভাবছে তা আমরা দেখতে পারি। আমাদের চিন্তা তাদের জানাতে পারি।

স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলছে এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীনে বাংলাদেশি রোগীদের প্রথম ব্যাচ গেছে। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, তারা চিকিৎসাসেবায় সন্তুষ্ট। এছাড়া বাংলাদেশি রোগীদের জন্য কুনমিংয়ে চারটি হাসপাতাল চিহ্নিত করা হয়েছে। সচিব বলেন, আমাদের প্রত্যাশা, সামনের সময়ে এই সহযোগিতা আরও বাড়বে এবং চীন বাংলাদেশে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করবে, যেটি বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যে সুবর্ণজয়ন্তী, তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বিষয় হবে।

নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট ও হতাশাজনক: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ২:৩৫ অপরাহ্ণ
নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট ও হতাশাজনক: মির্জা ফখরুল

ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট ও হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের অবস্থিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির মহাসচিবসহ নেতাকর্মীরা।

এসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট। ন্যূনতম সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নির্বাচনের কথা বলে ক্ষমতায় যেতে নয়, জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের জন্য। নির্বাচিত সরকারই পারে সংকট সমাধান করতে।

অন্যদিকে চব্বিশকে যারা দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে তারা একাত্তরকে ছোট করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতারা। আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করেছে বলে অভিযোগ তাদের। দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করার দাবি তারাও জানান।

জাতীয় স্বাধীনতা দিবসে দেশের বীর সন্তানদের স্মরণ করছে জাতি। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টাসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।

এখানেই শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, চব্বিশকে যারা দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে তারা একাত্তরকে ছোট করতে চায়। ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে তাতেই বিশ্বাস রাখতে চায় তার দল। জাতির প্রয়োজনে সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।

গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে দেশের মানুষের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।

নারায়ণগঞ্জে ডিসি কার্যালয়ের সভায় ‘জয় বাংলা স্লোগান’ নিয়ে উত্তেজনা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ২:২৯ অপরাহ্ণ
নারায়ণগঞ্জে ডিসি কার্যালয়ের সভায় ‘জয় বাংলা স্লোগান’ নিয়ে উত্তেজনা

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের এক অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে বক্তব্য শেষ করেছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী।

এ ঘটনা নিয়ে সভা শেষে বিভক্তি দেখা দেয় দুই পক্ষের মধ্যে। শুধু তাই নয়, ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধন থেকে বুধবারের স্বাধীনতা দিবসের সভায় মোহাম্মদ আলীকে প্রতিরোধের ঘোষণা দেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। তিনি মোহাম্মদ আলীকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও ফ্যাসিস্ট শামীম ওসমান, সেলিম ওসমানের দালাল হিসেবে উল্লেখ করেন।

জানা গেছে, সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ আলী।

সে সময় তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। কাজেই আমাদের জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো অসম্মান হবে না। এবং কোনো অসুবিধা হবে না। আগামী দিনে আমরা সবাই মিলে থাকবো, আমাদের যেন সমস্যা না হয়। এবার যতটুকু অনুদান দিয়েছে এটাতে আমরা খুশি। আগামীতে যেন বেশি পাই এজন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ করছি, এবার ১৪০ জনকে অনুদান দেয়া হয়েছে, আগামীতে যেন ২৪০ জনকে দেয়া হয়।’ শেষাংশে তিনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: আলমগীর হুসাইনের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো: মনিরুজ্জামান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম প্রমুখ।

এ সময় ১৪০ জন মুক্তিযোদ্ধার মাঝে ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে অনুদানের তালিকা নিয়ে তর্কের জেরে মুক্তিযোদ্ধাদের দুইপক্ষের মধ্যে হট্টগোল ও হৈ-চৈ হয়।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, ‘২৬ মার্চে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হবে। সেখানে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা আসবেন। কিন্তু এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, ফ্যাসিস্ট ডেভিল মোহাম্মদ আলী যদি এখানে আসে তাহলে আমরা নারায়ণগঞ্জের জনগণ তাকে প্রতিরোধ করবো।’

মঙ্গলবার এক প্রস্তুতি সভা শেষে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে একথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করে যিনি সবসময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন, তিনি হলেন মোহাম্মদ আলী। এই মোহাম্মদ আলী নারায়ণগঞ্জের কোনো রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ নিক আমরা তা চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আগামীকাল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও ফ্যাসিস্ট, শামীম ওসমান, সেলিম ওসমানের দালাল মোহাম্মদ আলী যদি শিল্পকলা একাডেমিতে আসে তাহলে তাকে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করবো।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে তথাকথিত বিতর্কিত নামধারী মুক্তিযোদ্ধা এবং বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার ও নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ও সেলিম ওসমানের সকল অপকর্মের পৃষ্ঠপোষক এবং দোসর ডেভিল দাবি করে মোহাম্মদ আলীর তথাকথিত জয় বাংলার স্লোগানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সরকার ও প্রশাসনের সকল কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার দাবি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানান মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো: আবু আল ইউসুফ খান টিপু।