খুঁজুন
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আন্দোলনে হারান চোখ, ছাড়তে হয় দেশ

১২ বছর পর দেশে ফিরলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা ইঞ্জি. শফিকুল ইসলাম রিবলু

মোঃ হাসানুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯:১৩ অপরাহ্ণ
১২ বছর পর দেশে ফিরলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা ইঞ্জি. শফিকুল ইসলাম রিবলু

দীর্ঘ একযুগ পর দেশে ফিরেছেন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি, যুক্তরাজ্য শাখার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম রিবলু।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় তিনি ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এসময় বিএনপির ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক এমএ কাইয়ুমসহ দলটির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী রিবলুকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

এর আগে যুক্তরাজ্য বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ইমতিয়াজ এনাম তানিম সহ যুক্তরাজ্য বিএনপির নেত্রীবৃন্দরা তাকে যুক্তরাজ্যের একটি এয়ারপোর্টে বিদায় জানান।

এদিন রাজধানীর বিভিন্ন শাখার বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল সহ হাজারো নেতাকর্মীর ঢল নামে। বিশেষ করে সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের ছিলো সক্রিয় উপস্থিতি। বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আল মাহমুদের নেতৃত্বে এয়ারপোর্টে হাজির হয় অসংখ্য নেতাকর্মী। অন্যান্যদের পাশাপাশি ফুলের তোড়া নিয়ে জনাব শফিকুল ইসলাম রিবলুকে অভ্যর্থনা জানাতেও দেখা যায় জোবায়েরকে।

মূলত আওয়ামিলীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলের রোষানলে রিবলু গুরুতর জখম হয়ে চোখ হারিয়ে উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি জমান। পরিস্থিতির কারণে দেশে ফিরতে না পারলেও তৎকালীন আন্দোলন সংগ্রামে রিবলুর দৃঢ়চেতা ও ত্যাগী অবদান আজও সবার মুখে মুখে। হয়তো সেজন্যই ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁর আগমনে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় শুভাকাঙ্ক্ষীদের উপস্থিতিতে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে বাম চোখ নষ্ট হয়ে যায় তৎকালীন যুবদল নেতা ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম রিবলু। দেশে চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্ত্যরাজ্য চলে যান। জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে আর দেশে ফেরেননি তিনি।

মূলত আন্দোলনের মাঠে পুলিশ রিবলুর চোখে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে। যা বাংলাদেশে বটেই, পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়। অবশেষে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

রিবলুর আগমন উপলক্ষে বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের উচ্ছসিত আমেজ দেখে তাদের কাছে কারণ ও অনুভূতি জানতে চাওয়া হয়। এ-সময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আল মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি, যুক্তরাজ্য বিএনপি সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও শাখা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং যুবদলের সদ্য সাবেক সদস্য জনাব সফিকুল ইসলাম রিবলু ভাইয়ের দীর্ঘ ১২ বছর পর লন্ডন থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করছেন। তার আগমনে শুধু আমরাই নই, সবাই আজ আনন্দিত। কারণ রিবলু ভাই কোনো একক ব্যক্তিত্ব নয়। তিনি স্বৈরাচারী হাসিনার বিরুদ্ধে সংগ্রামের একজন জীবন্ত কিংবদন্তি।”

বাড়ছে করোনা শনাক্ত, ছড়াচ্ছে আতঙ্ক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫, ৫:২৮ অপরাহ্ণ
বাড়ছে করোনা শনাক্ত, ছড়াচ্ছে আতঙ্ক

আবারও করোনা আতঙ্ক ফিরে এসেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন স্থানে করোনার সংক্রমণ নতুন করে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও হঠাৎ করোনা বাড়তে শুরু করেছেন। গত ৫ জুন নতুন করে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে।

এ অবস্থায় ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের ফিরতি যাত্রায় যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং মাস্ক পরার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আজ রবিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় ৩ জনের শনাক্ত হয়েছে। একইসময়ে ছয়জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছে। তবে, মৃত্যু হয়নি।

দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৪২ জনে। এরমধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৩ জন। মারা গেছেন ২৯ হাজার ৫০০ জন।

এদিকে, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ হারের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় সবাইকে মাস্ক পরার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিশেষত বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ ধরনের স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ঈদ পরবর্তী ট্রেন যাত্রায় সব যাত্রীকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য এবং মাস্ক পরার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সবাইকে অনুরোধ জানানো হলো।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু-দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

বেলকুচির মুকুন্দগাতী মানবকল্যাণ সংস্থা উদ্বোধন

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫, ৫:২৫ অপরাহ্ণ
বেলকুচির মুকুন্দগাতী মানবকল্যাণ সংস্থা উদ্বোধন

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার “মুকুন্দগাঁতী উত্তরপাড়া মানবকল্যাণ সংস্থা” নামে একটি সেবা ও জনকল্যাণমূলক সংস্থার কার্যক্রম শুরু করেছে।

রবিবার (৮ জুন) সকালে উপজেলার মুকুন্দগাঁতী বাজার সংলগ্ন মুকুন্দগাঁতী উত্তরপাড়া দারুস সালাম জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে সংস্থাটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। পরে সংস্থাটির ২৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। 

সংস্থাটির সভাপতি ও আলোকিত দৈনিক-এর সম্পাদক মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেলকুচি প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব গাজী সাইদুর রহমান। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর আব্দুল হামিদ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার গোলাম মোস্তফা রুবেল, নারায়ণ মালাকার, মাওলানা আব্দুস সাত্তার, মাওলানা আল আমিন, হোসেন আলী প্রামাণিক, হারুন অর রশিদ,হাজী রজব আলী প্রামাণিক,আবুল কালাম আজাদ,হাজী আব্দুল কাদের প্রামানিক,হাফেজ মওলানা আমানুল্লাহ প্রমুখ সহ আরো অনেকে।

অনুষ্ঠান শেষে মহল্লাটির কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে সংস্থাটির পক্ষ থেকে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই ষড়যন্ত্র !

যাদের সহায়তায় দেশ ছাড়লেন হাসিনার চাচা শেখ কবির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ
যাদের সহায়তায় দেশ ছাড়লেন হাসিনার চাচা শেখ কবির

সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা এবং গোপালগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন গোপনে দেশ ছেড়েছেন। রবিবার (৮ জুন) সকালে একটি ফ্লাইটে তিনি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।

হাসিনার ম্যানেজার খ্যাত এই কবিরের বিরুদ্ধে রয়েছে অর্থপাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং একাধিক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে শীর্ষপদ দখলের গুরুতর অভিযোগ। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে তদন্তের প্রস্তুতির কথাও জানা যাচ্ছিল।

শেখ কবির হোসেনের বিদেশ যাত্রা ছিল সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত। ইমিগ্রেশন বিভাগের ডিআইজি মোয়াজ্জেম হোসেন এ বিষয়ে বলেন, সরকারের নির্দেশেই শেখ কবির হোসেন রবিবার সকালে সিঙ্গাপুরে গেছেন। তবে ভিন্নমত রয়েছে অভ্যন্তরীণ সূত্রের।

তাদের মতে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রভাবশালী একটি চক্রের সক্রিয় সহযোগিতাতেই তিনি বিমানবন্দর অতিক্রমে সক্ষম হন।

এদিকে এমন বিতর্কিত স্বৈরাচারের দোসরের এই প্রস্থানকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং আইনের প্রয়োগ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

তথ বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শেখ কবির হোসেন দেশের অন্তত ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে ছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে:

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বীমা কোম্পানি
সেবা খাতের গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
ব্যবসায়ী ও শিল্প সংগঠন
এমনকি কিছু গণমাধ্যমেও তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

অথচ এসব প্রতিষ্ঠানে তিনি নীতিনির্ধারণে সরাসরি সক্রিয় ছিলেন না বরং তার নাম ও রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে একাধিক ব্যবসায়ী ও সুবিধাভোগী গোষ্ঠী বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুবিধা আদায় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশেষভাবে বিতর্কিত ব্যবসায়ী চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও ক্ষমতাসীন মহলের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার নাম যুক্ত হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা শেখ কবির হোসেনকে ‘মুখপাত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে কোম্পানি দখল, সরকারি প্রকল্পে প্রভাব বিস্তার এবং আর্থিক সুবিধা আদায়ে সক্রিয় ছিলেন।

তথ্য অনুযায়ী, শেখ কবির হোসেন একই সময়ে একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক এবং একাধিক কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন। যা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

এই সাংঘর্ষিক ভূমিকা তাকে শুধু ক্ষমতার অপব্যবহারের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসেনি, বরং সুশাসন ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছতার প্রশ্নেও বিতর্ক তৈরি করেছে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকেই শেখ কবির হোসেন অনেকটা আত্মগোপনে চলে যান। তিনি একে একে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং বোর্ড মিটিংয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। তার অনুপস্থিতি এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে স্থবিরতা সৃষ্টি করে।

শেখ কবির হোসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো ভাই ও শেখ হাসিনার চাচা হওয়ায় দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীন পরিবারের ছায়াতলে ছিলেন। এই পারিবারিক পরিচয়ের জোরেই তিনি একে একে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও শিক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোতে শীর্ষপদ দখলে রাখেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

তার এই হঠাৎ বিদেশ গমন নিয়ে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সরকারের সরাসরি অনুমতিতে একজন প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ব্যক্তির এমন প্রস্থান— বিশেষ করে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই — আইন, প্রশাসন ও নৈতিকতার প্রশ্নে এক গভীর সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সেই সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থায় নিশ্চিতভাবেই বড় ধাক্কা খেয়েছে।