খুঁজুন
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ পৌষ, ১৪৩১

আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করি না: শফিকুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:৪৮ অপরাহ্ণ
আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করি না: শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করি না। জামায়াত ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মত, পথ নির্বিশেষে সবাইকে নিয়েই দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সংগ্রামে সব ধর্মের মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর মিরপুর সেনপাড়া ব্যাপ্টিস্ট চার্চে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াত আয়োজিত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য সাধারণ দেশ; ফুলের বাগান। মাঝে মাঝে কিছু হুতুম পেঁচা আমাদের ফুলের বাগানে ঢুকে সবকিছু এলোমেলো করে দেওয়ার অপচেষ্টা করে। এরা কোনো ধর্মের নয়, বরং এরা অপশক্তি। তাই এদের সম্পর্কে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের আদি পিতা হজরত আদম (আ.) এবং আদি মাতা হজরত হাওয়া (আ.)। ইসলামে সব নবী- রাসুলকে যথাযথভাবে সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এটা আমাদের ঈমান বা বিশ্বাসের অংশ। তারা সবাই আল্লাহর প্রফেট, মেসেঞ্জার। তারা আল্লাহর বিধানের বার্তাবাহক হিসেবে দুনিয়াতে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে হজরত ঈসা (আ.) ব্যতিক্রম। তিনি দুনিয়াতের দ্বিতীয়বার প্রেরিত হয়ে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছোট একটি রাষ্ট্র। এ দেশে ১৮ কোটি মানুষের বসবাস। দেশে নানান ধর্ম ও গোত্রের মানুষের বসবাস হলেও মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান প্রধানতম ধর্ম। সবার সঙ্গে মিলেমিশে চলা আমাদের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত বা সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাসী নই, বরং আমরা সবাই বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। জামায়াতের লোকেরা চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি, লুটপাটসহ কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। তারপরও আমরা মানুষ। আমাদের কোনো মানবীয় ভুল ধরিয়ে দিলে আমরা তা সংশোধনের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই হীনম্মন্য নই। আমরা দেশের সব নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবসময়ই আপসহীন। তিনি একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সব শ্রেণির মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সৃষ্টি এক, স্রষ্টাও এক ও অদ্বিতীয়। আকাশ থেকে বৃষ্টি হলে সব ধর্ম ও শ্রেণির মানুষ সমাজভাবে উপকৃত হন। আবার কোনো বিপর্যয় হলেও সবাইকে তা ভোগ করতে হয়। ধর্মীয় সংখ্যালঘু আখ্যা দিয়ে শ্রেণি বিশেষ মানুষের ওপর জুলুম করার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী এ ধরনের সংকীর্ণতার সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বে।

দুই শ্রেণির মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি হলো সবচেয়ে উচ্চ শ্রেণি। এরা কলমের খোঁচায় মানুষের অধিকার কেড়ে নেন। আর অপর শ্রেণি হচ্ছে বস্তি। এদের হাতেই মাদক ও অস্ত্র তুলে দিয়ে দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করা হয়। তাই এদের সম্পর্কে আমাদের শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে। তিনি গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের জ্যেষ্ঠ পালক রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সাধারণ সম্পাদক বাবুল কুমার সাহাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানীর মগবাজারে ট্রেনের ধাক্কাই এক যুবকের মৃত্যু

আব্দুল্লাহ আল মোত্তালিব, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:৫১ অপরাহ্ণ
রাজধানীর মগবাজারে ট্রেনের ধাক্কাই এক যুবকের মৃত্যু

রাজধানীর মগবাজার রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মোঃ আপন (২২)নিহত হয়েছে। নিহত আপন কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী উপজেলার মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে। বর্তমানে মগবাজার এলাকায় ভাড়া থাকতো।

শনিবার(২১ ডিসেম্বর)সন্ধ্যা সোয়া ৫টা নাগাদ অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী সোহাগ বলেন, আজ বিকেলের দিকে মগবাজার রেল ক্রসিং পারাপারের সময় কমলাপুরগামী একটি ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় ওই যুবকটি।পরে দ্রুততাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান ওই যুবকটি আর বেঁচে নেই।

তিনি আরও বলে,
আমরা ওই যুবকের পকেটে থাকা কাগজে লেখা মোবাইল নাম্বারে তার পরিবারের সাথে কথা বলে তার নাম পরিচয় জানতে পেরেছি। পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ ফারুক হোসেন, ওই যুবকের মরদেহ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশকে জানিয়েছি।

আগে একদল সড়কে দুর্নীতি করত এখন করছে অন্যদল: উপদেষ্টা নাহিদ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৫৩ অপরাহ্ণ
আগে একদল সড়কে দুর্নীতি করত এখন করছে অন্যদল: উপদেষ্টা নাহিদ

সড়ক ও পরিবহন খাতে দুর্নীতির সঙ্গে পলিটিক্যাল প্রভাব জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কের নৈরাজ্যের সাথে একটা পলিটিক্যাল প্রভাব জড়িত। সড়ক ও পরিবহণ খাতে আগে একদল দুর্নীতি করত এখন অন্যদল করছে। এটা খুব সহজে সমাধান হবে না। তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। দুর্নীতির সঙ্গে যেহেতু রাজনৈতিক কর্মী ও নেতারা জড়িত তাই সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা রাখতে হবে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সার্কিট হাউস সংলগ্ন প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত সড়ক পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। দিনব্যাপী এ সংলাপে সড়ক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও পরিবহণ সেক্টরের অংশীদারজনও উপস্থিত ছিলেন।

এ-সময় নাহিদ বলেন, বুয়েটের একজন মারা গেল। একটা ধারণা যে সমাজের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে যারা আছেন তাদের বিচার হয় না, জবাবদিহিতা হয় না। এখানে সাধারণ মানুষদের জীবনটাই আসলে যায়। এই চিত্র আমাদের সমাজে আছে। এটার পরিবর্তন দরকার। সবাইক বিচারের আওতায় আনা দরকার। এখানে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। উন্নয়ন নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, এখন রাস্তায় বের হয়ে মানুষ মারা গেলে সেটাকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। কারণ এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কারণে হচ্ছে। এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে রাস্তায় মানুষ বের হলে মানুষ মারা যেতে পারে৷ এখানে ব্যবস্থাপনাতেই সমস্যা রয়েছে। যে ধরনের প্রতিষ্ঠান সড়কের নিরাপত্তা দিতে পারে সেটাই তৈরি হয়নি।

পরিবহণ সেক্টরের দুর্নীতি চলমান আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের দল দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল আবার এখন আরেক দল রয়েছে। এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা প্রয়োজন। কারণ রাজনৈতিক কর্মীরাই এগুলোত জড়িত।

জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা পরিবহণ সমন্বয়ক কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক আরমানা সাবিহা হকসহ অন্যান্যরা।

অবৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে দিল্লির সব স্কুলে নির্দেশনা জারি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৪৯ অপরাহ্ণ
অবৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে দিল্লির সব স্কুলে নির্দেশনা জারি

কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েনের আঁচ এবার শিক্ষার্থীদের ওপরও লাগছে। অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী শিক্ষার্থীদের শনাক্তে ভারতের রাজধানী দিল্লির সব স্কুলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের পরিচয় যথাযথভাবে শনাক্তও যাচাইয়ের বিষয়টিও আছে নির্দেশনাতে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিল্লি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (এমসিডি) জারি করা ওই নির্দেশনাটি প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লি সরকারের প্রধান সচিবের (গৃহ বিভাগ) সভাপতিত্বে গত ১২ ডিসেম্বর এমসিডি একটি ভার্চুয়াল সভা আয়োজন করে। এতে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে স্কুলে তাদের শনাক্তকরণ ও তাদের জন্ম সনদ না দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এছাড়া কোনও অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে জন্ম সনদ না দেওয়ার ব্যাপারে দিল্লির জনস্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমসিডি তাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে এবং সঠিক পরিচয় ও যাচাইকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনারও নির্দেশ দিয়েছে।

এমনকি যেসব জায়গায় এই অভিবাসীরা অন্যের জমি বা জায়গা দখল করে রেখেছে, সেগুলো খালি করে দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।

ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া কঠিন। কারণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাজ্য তাদের নিজস্ব রেকর্ড রাখে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে অল ইন্ডিয়া সার্ভে ফর হায়ার এডুকেশনের ২০২১-২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ৬০৬ জন শিক্ষার্থী ভারতে উচ্চশিক্ষার জন্য গেছেন।

শিক্ষার্থীদের আগে নয়া দিল্লিতে থাকা অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরতেও পুলিশ অভিযানে নেমেছিল।

বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর কয়েকদিন পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর থেকেই ঢাকা ও নয়া দিল্লির সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না।

এরপর তা আরও নাজুক হয়ে পড়ে গত নভেম্বরে হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তার হওয়ার পর। তার প্রতিবাদে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় এক বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশ মিশনে হামলা হয়। অন্যদিকে ভারতবিরোধী বিক্ষোভ বাংলাদেশেও চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।