পোষ্য কোটা বাতিল না করলে এবার রাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সব ধরনের পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আগামী রোববার থেকে “কমপ্লিট শাটডাউনের” ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। এদিন রাত ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।
ফলে দশ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রয়েছেন দুই উপ-উপাচার্য সহ শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা যায়, রাত ৭টার পরে প্রশাসন ভবনের ভেতর থেকে শাবল দিয়ে তালা ভাঙার চেষ্টা করেন অবরুদ্ধ থাকা কয়েকজন। এতে বাইরে থাকা এক শিক্ষার্থী আহত হন। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বর্তমানে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। তালাবদ্ধ অবস্থায় প্রশাসন ভবনের ভিতরেই রয়েছেন দুই উপাচার্য সহ অন্যরা।
এদিকে, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী ও রাবি অফিসার সমিতি। এতে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কয়েক দফা অবরুদ্ধ শিক্ষক-কর্মকর্তারা গেট ভেঙে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। জড়ান বাকবিতণ্ডায়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বাধায় তারা বের হতে পারেননি।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির সহ-সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার অসুস্থ হওয়ার আগে বলেন, “পোষ্য কোটা বাতিলের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। আমাদের দাবি না মেনে নিলে আগামী রবিবার থেকে আমরা সবকিছু বন্ধ করে দিবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন থেকে শুরু করে ক্লাস-পরীক্ষা সবকিছু বন্ধ থাকবে।”
এসময় “পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে, লড়াই হবে একসাথে”, “আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম”, “দালালদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে”, “মেধাবীদের কান্না, আর না আর না”, “জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো”, “আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ”সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও বাইরের শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছেন।
অন্যদিকে অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন বলেন, “আমরা আগামী ৫ জানুয়ারি উপাচার্যর সঙ্গে দেখা করবো। তিনি যদি আমাদের দাবি মেনে না নেন তাহলে ৬ তারিখে মানববন্ধন, ৭ তারিখে অবস্থান কর্মসূচি এবং ৮ তারিখে দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করবো। তাতেও যদি কোনো সমাধান না হয় তাহলে আমরা লাগাতার কর্মসূচিতে যাবো এবং কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দেব।”
শিক্ষার্থীদের অন্য দুইটি দাবি হলো – ফ্যাসিস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের আওতায় আনা এবং দুইজন ফ্যাসিবাদী শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেওয়ার জন্য উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে উন্মুক্ত স্থানে কারণ দর্শানো। এছাড়া, সম্পূরক একটি দাবি হলো – ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমানো।
আপনার মতামত লিখুন