ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর বর্বর হামলা, নির্যাতন বন্ধ করে ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের আহ্বানে বেজার বা অসন্তুষ্ট হয়েছে বর্বর দেশটির সরকার। এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দেওয়া বিবৃতিতে জয়সওয়াল অন্তর্বর্তী সরকারের ওই আহ্বানকে ‘অসৎ প্রয়াস’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সরকার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে নিকৃষ্ট সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়ানোর ভারতের চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
কট্টরপন্থী ও উগ্র হিন্দু প্রতিবেশী দেশটিকে সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার আহ্বানও জানায় ঢাকা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অন্তর্বর্তী সরকারের এই অবস্থান তুলে ধরে বলেন, মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোনো চেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি।
বাংলাদেশ সরকার মুসলিমদের ওপর হামলা এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তাহানির ঘটনার নিন্দা জানায়।
এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে জয়সওয়াল তার বিবৃতিতে বলেন, আমরা পশ্চিমবঙ্গে সংঘটিত ঘটনাসমূহ নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নিপীড়নের ঘটনা; যেখানে অপরাধে জড়িত ব্যক্তিরা এখনো অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগের সঙ্গে সমান্তরাল অবস্থান প্রকাশে এটি এক ধরনের ছলনাপূর্ণ ও অসৎ প্রয়াস।
সামপ্রদায়িক বিতর্কিত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মুখপাত্র বলেন, এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করা এবং নৈতিকতা প্রদর্শনের বদলে বাংলাদেশ তার দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দিকে মনোনিবেশ করলে ভালো হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সপ্তাহে মুসলিম-অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলায় নতুন ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলি জেলায় এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটে।
পশ্চিমবঙ্গের বিতর্কিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সহিংসতার জন্য নির্লজ্জভাবে বাংলাদেশকে দোষারোপ করেন। তার দাবি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৈঠক করে চক্রান্ত করে সেখানে অশান্তি লাগিয়েছেন।
উল্লেখ্য, শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, সংশোধিত নামে তুমুল বিতর্কিত ও মুসলিমদের অধিকার হরণ করা ওয়াকফ আইন ঘিরে উত্তর প্রদেশসহ দেশটির আরও কিছু অঞ্চলে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের নানা তথ্য গণমাধ্যমের খবরে উঠে আসছে। যা রীতিমতো লোমহর্ষক। তবুও বিশ্ব মিডিয়া চুপ, এমনকি বাংলাদেশের অনেক নামধারী মুসলমান গোষ্ঠীও চুপ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে ড.ইউনুসের সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পলাতক শেখ হাসিনা ভারতে বসে সর্বোচ্চ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতে মুসলমানদের উপর এই জুলুম, নির্যাতন, হত্যাকান্ড হয়তো তারই অংশ।
আপনার মতামত লিখুন