খুঁজুন
মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

সন্দেহের তীর উগ্রবাদী ইসকনের দিকে

চট্টগ্রামে চিন্ময় অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, আইনজীবীকে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:৩৬ অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামে চিন্ময় অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, আইনজীবীকে হত্যা

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র দেশদ্রোহিতায় অভিযুক্ত উগ্রবাদী বিতর্কিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, চিন্ময় কৃষ্ণের উগ্রবাদী ইসকনের সমর্থকেরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। কারণ ওই আইনজীবীর শরীরে মারাত্মকভাবে কোপের চিহ্ন রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, নিহত আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫)। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করে আসছিলেন।

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিক্ষোভকারীরা এক আইনজীবীকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অবস্থায় আরও ৮ জন চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা হলেন শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হক। গুরুতর আহত হওয়া আরেকজনের নাম এখনো জানা যায়নি। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালে আরও ১৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মূলত বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না মঞ্জুর করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজনভ্যান আটকে দেয়। তারা এ সময় বিক্ষোভ শুরু করে।

তখন পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী চেষ্টা করেও উগ্রবাদী সমর্থকদের বাধার কারণে প্রিজনভ্যান আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে কারাগারে নিতে পারেনি। পরে পৌনে বেলা তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধ্য হয়ে সাউন্ড গ্রেনেড, ক্যাঁদানে গ্যাসের (টিয়ার) শেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ শুরু করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এর পর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। পরে চিন্ময় কৃষ্ণকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে কট্টরপন্থী চিন্ময় অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।

ঘটনাস্থলের এক প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী বলেন, পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী আলিফকে বিক্ষোভকারীরা বেধড়ক কোপায়। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কোপানোর সময় তারা জয় শ্রীরাম বলে স্লোগান দিচ্ছিলো।

চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ জানান, আহত অবস্থায় সাত/ আটজনকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

এবিষয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার লিয়াকত আলী গণমাধ্যমে বলেন, একজন মারা গেছে। তবে কীভাবে মারা গেছে এখনো জানি না।

সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আদালত এলাকায় আইনজীবীরা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছিলেন। আগামীকাল বুধবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তারা।

ট্রাইব্যুনালে হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সালাহউদ্দিনের গুমের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৩:১৭ অপরাহ্ণ
ট্রাইব্যুনালে হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সালাহউদ্দিনের গুমের অভিযোগ

নিজের গুম হওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

অভিযুক্ত অন্যান্যরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও ডিবির সাবেক ডিসি মনিরুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (৩ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অভিযোগ গ্রহণ করেন।

এসময় বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার এম বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুলসহ অনেকে।

এর আগে নিজের গুম হওয়ার অভিযোগ জমা দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

গত বছরের ১৫ অক্টোবর গুম কমিশনে নিজের গুম হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ও গুমের শিকার সালাহউদ্দিন আহমেদ।

২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হন। ৬২ দিন পর একই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

ভারতের পুলিশের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, সালাহউদ্দিন শিলংয়ে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করার সময় লোকজনের ফোন পেয়ে তাকে আটক করা হয়।

সালাহউদ্দিনকে আটক করার পর বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহউদ্দিন খালাস পান। ভারত সরকার এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।

২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিলেও খালাস পান সালাহউদ্দিন। আদালত তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই বছরের ৮ মে সালাহউদ্দিন ভ্রমণ অনুমোদনের জন্য আসাম রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেন।

আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি ভারতে আটকে আছেন। দেশটিতে তার বিরুদ্ধে যে অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ভারতে থাকার কারণে তিনি নিজের পাসপোর্ট নবায়নের সুযোগ পাননি। ভ্রমণ অনুমোদন দেওয়া হলে তিনি নিজের দেশে ফিরতে চান, দেশবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হতে চান।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর ১১ আগস্ট দেশে ফেরেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।

‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৩:১৫ অপরাহ্ণ
‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার প্রস্তাব জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, এই সুযোগ থাকলে মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য প্লট বা ফ্ল্যাট কেনা অসম্ভব হয়ে যাবে। এর ফলে সমাজে বৈষম্য হবে।

তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলন বৈষম্যহীন সমাজের জন্য হয়েছিল। বাজেটের প্রত্যয়টা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার, সেটার সঙ্গে এই প্রস্তাব চরমভাবে সাংঘর্ষিক।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ নিয়ে সিপিডির মিডিয়া ব্রিফিং এসব কথা বলেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, বাজেটে অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধতা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে গেলে সেখানে অপ্রদর্শিত আয় দেখিয়ে বর্ধিত হারে বিশেষ কর দিয়ে সেটি ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু আমরা সবসময় বলে এসেছি কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব একেবারেই বন্ধ করা উচিত। এটা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়, আমরা এটা সমর্থন করছি না।

তিনি বলেন, এই প্রস্তাব সৎ করদাতাদের অনুৎসাহিত করবে। তাদের নৈতিকতার ওপর আঘাত। আমরা এই প্রস্তাব উঠিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করছি। এটা বৈষম্য সৃষ্টির হাতিয়ার।

উদাহরণ দিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, আবাসন খাতের মূল্য অনেক বেশি। এর কারণ এই অপ্রদর্শিত অর্থ। এই অর্থ সেই খাতে সেটার দাম বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে যারা বৈধভাবে আয় করে তাদের জন্য একটা অ্যাপার্টমেন্ট কেনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর ফলে সমাজে বৈষম্য হয়। জুলাই আন্দোলন বৈষম্যহীন সমাজের জন্য হয়েছিল। বাজেটের প্রত্যয়টা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার, সেটার সঙ্গে এই প্রস্তাব চরমভাবে সাংঘর্ষিক।

বিএনপি-জামায়াত-এনসিপিসহ ৩০ দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৩:১৩ অপরাহ্ণ
বিএনপি-জামায়াত-এনসিপিসহ ৩০ দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক

বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বহুদলীয় আলোচনা শুরু হয়।

কমিশন সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭০, সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলোর কার্যকারিতা, নিম্নকক্ষে নারী আসন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। মূলত সংবিধান সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশ নিয়ে এখনও রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে ওঠেনি, সেইসব বিষয়ে নিয়েই পর্বের আলোচনা আয়োজিত হচ্ছে।

এর আগে বিভিন্ন সময়ে পৃথকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করলেও এবারই প্রথম একসঙ্গে সব দলের অংশগ্রহণে আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজকের আলোচনাতেই সব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব নাও হতে পারে। ফলে ঈদের পরও আলোচনা পর্ব অব্যাহত থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এসব কমিশন—সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন ও পুলিশ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় রাজনৈতিক ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।

কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, চলমান আলোচনা পর্বের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসে একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করা হবে।