খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪, ১ কার্তিক, ১৪৩১

সিআরপিসির ১৭টি ধারায় ক্ষমতা প্রদান

ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় কী কী করতে পারবে সেনাবাহিনী ?

মোঃ হাসানুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:২০ অপরাহ্ণ
ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় কী কী করতে পারবে সেনাবাহিনী ?

সম্প্রতি ছাত্রজনতার আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারকে। আন্দোলন ঘিরে দেশব্যাপী ব্যাপক সংঘর্ষ বেশ পোক্ত হাতে কন্ট্রোল করেছে সেনাবাহিনী। এবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশন প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-২ শাখা থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব জেতী প্রু স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘১৮৯৮ এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হলো।’

এতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭টি ধারায় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এসকল ধারা অনুযায়ী সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে দায়িত্ব পালন করবেন।

যা যা করতে পারবে সেনাবাহিনীঃ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে মঙ্গলবার যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭টি ধারায় সেনা কর্মকর্তারা তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ এবং ১৪২ ধারা অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে এই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

>>>ফৌজদারি কার্যবিধির এসব ধারা অনুযায়ী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পাওয়ায় এখন থেকে সেনা কর্মকর্তাদের সামনে কোনো অপরাধ হলে অপরাধীদের সরাসরি গ্রেফতার করতে পারবেন, দিতে পারবেন জামিনও।

>>>বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারবেন সেনা কর্মকর্তারা। গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পুলিশকে নির্দেশও দিতে পারবে তারা। বেআইনিভাবে আটক ব্যক্তিকে উদ্ধারের জন্য তল্লাশি করতে পারবে।

>>>নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন দাবিতে রাস্তা আটকে মিছিল সমাবেশ করতে দেখা যাচ্ছে সরকারি বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের।

>>>প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এখন থেকে সেনা কর্মকর্তারা বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে পারবেন। একই সাথে এটি বন্ধে বেসামরিক বাহিনীকেও ব্যবহার করতে পারবে সেনাবাহিনী।

>>>এছাড়াও স্থানীয় উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন আদেশ জারি করতে পারবে, আটক করতে পারবে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকেও।

এবিষয়ে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. নুরুল হুদা গণমাধ্যমে বলেন, “কমিশন্ড সেনা কর্মকর্তারা যখন চার্জ নিবে, তখন তারা ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার এক্সেস করতে পারে।”

“একনজরে সিআরপিসির ধারা সমূহ”
ধারা ৬৪:
এ ধরায় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে বলা আছে। এই ধারার ভাষ্য হচ্ছে, যখন ম্যাজিস্ট্রেট দেখতে পান, তাঁর সামনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তখন তিনি অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারেন অথবা গ্রেপ্তারের আদেশ দিতে পারেন।

ধারা ৬৫:
এ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অথবা তাঁর উপস্থিতিতে গ্রেপ্তারের বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে। ৬৫ ধারার ভাষ্য, বিচারের জন্য গ্রহণ করার পর তিনি তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন। অথবা তাঁকে তিনি গ্রেপ্তারের হুকুম দিতে পারেন।

ধারা ৮৩:
এ ধারার ভাষ্য, যখন কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়া আদালতের এখতিয়ারের স্থানীয় সীমারেখার বাইরে কার্যকর করা দরকার, তখন আদালত পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশ না দিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলার পুলিশ সুপার বা পুলিশ কমিশনার বরাবর ডাকযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠাতে পারবেন। অর্থাৎ যে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করবেন, তিনি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তার ওপর দায়িত্ব দিতে পারেন। আবার যাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে, তিনি যদি ম্যাজিস্ট্রেটের এলাকার বাইরের লোক হন, তখন পরোয়ানা সংশ্লিষ্ট এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ সুপার বা পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠাবেন।

ধারা ৮৪:
এ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের এখতিয়ারের বাইরের এলাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। ৮৪ ধারার ভাষ্য হচ্ছে, বাইরের এলাকার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সংশ্লিষ্ট এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট অথবা উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুমোদন নেবেন। এ অনুমোদন দেওয়া হলে ধরে নেওয়া হবে, যাঁরা অনুমোদন দিয়েছেন, তাঁরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন।

ধারা ৮৬:
এ ধারায় গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করার পর ম্যাজিস্ট্রেট যে পদ্ধতি অনুসরণ করবেন, সেটি বর্ণনা করা হয়েছে। ৮৬ ধারার ভাষ্য, বাইরের এলাকায় গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিকে ওই এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর যে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন, সেই আদালতে তাঁকে পাঠাতে হবে। জামিন, মুচলেকা ইত্যাদির বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট আইন মোতাবেক আদেশ দিতে পারবেন।

ধারা ৯৫(২):
এ ধারার ভাষ্য হচ্ছে, কেবল ম্যাজিস্ট্রেটরা ডাক বা টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষকে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে দলিল অর্পণ করতে বলতে পারেন। একই সঙ্গে ডাক ও টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষ দ্বারা ওই সব বস্তুর জন্য তল্লাশি পরিচালনা বা আটক করতে পারেন।

ধারা ১০০:
এ ধারায় অন্যায়ভাবে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের উদ্ধার করার বিষয়ে বিধান কী, তা বলা আছে। এ ধারার ভাষ্য, যখন কোনো মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এমন বিশ্বাস করার কারণ ঘটে যে কোনো ব্যক্তিকে এমন পরিস্থিতিতে আটক রাখা হয়েছে, যাতে আটক রাখা অপরাধে পরিণত হয়। তখন ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে উদ্ধারে তল্লাশি পরোয়ানা জারি করতে পারেন। পরোয়ানা অনুযায়ী তল্লাশির পর যদি আটক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়, তাহলে তাঁকে অবিলম্বে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করতে হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী তিনি প্রয়োজনীয় আদেশ দেবেন।

ধারা ১০৫:
এ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তল্লাশির বিধান বর্ণনা করা আছে। সিআরপিসির ১০৫ ধারার ভাষ্য হচ্ছে, নিজের উপস্থিতিতে তল্লাশি করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটে আদেশ দিতে পারেন। যে স্থান তল্লাশির জন্য তিনি হুকুম দিতে পারেন, সেই স্থানে তল্লাশির সময় সশরীর উপস্থিত থাকতে পারেন।

ধারা ১০৭:
এ ধারায় শান্তি রক্ষা ও সদাচরণে মুচলেকার বিষয় বলা আছে। সিআরপিসির ১০৭ ধারার ভাষ্য, যখন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হয় যে কোনো ব্যক্তি শান্তি ভঙ্গ করতে পারেন বা সর্বসাধারণের প্রশান্তি বিনষ্ট করতে পারেন বা এমন কোনো কাজ করতে পারেন, যাতে শান্তি ভঙ্গ হতে পারে, তখন ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন, তাহলে ওই ব্যক্তিকে শান্তি রক্ষার জন্য এক বছরের অনধিক সময়ের মুচলেকা দেওয়ার জন্য কারণ দর্শাতে বলতে পারেন।

ধারা ১০৯:
এ ধারায় ভবঘুরে ও সন্দেহভাজন ব্যক্তির সদাচরণের বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। সিআরপিসির ১০৯ ধারার ভাষ্য, যখন কোনো জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খবর পান যে কোনো ব্যক্তি তাঁর উপস্থিতি গোপন করার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করছেন অথবা যাঁর জীবিকা নির্বাহ করার কোনো প্রকাশ্য পন্থা নেই, তখন ম্যাজিস্ট্রেট ওই ব্যক্তিকে এক বছরের অনধিককালের জন্য মুচলেকা দেওয়ার কারণ দর্শাতে বলতে পারবেন। অর্থাৎ এ ধারা প্রয়োগ হবে, যখন কোনো ব্যক্তি অপরাধ করার জন্য লুকিয়ে থাকার চেষ্টায় লিপ্ত থাকেন অথবা জীবিকা অর্জনের প্রকাশ্য ব্যবস্থা নেই।

ধারা ১১০:
এ ধারায় অভ্যাসগত অপরাধীদের সদাচরণে মুচলেকার বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। সিআরপিসির ১১০ ধারার ভাষ্য, যখন কোনো ম্যাজিস্ট্রেট খবর পান, তাঁর এখতিয়ারসীমার মধ্যে অভ্যাসগত দস্যু, গৃহভঙ্গকারী, চোর বা জালিয়াত অথবা চোরাই মাল গ্রহণকারী অথবা চোরদের আশ্রয় দিয়ে থাকেন অথবা চোরাই মাল গোপন বা হস্তান্তর করতে সাহায্য করেন অথবা অভ্যাসগতভাবে অপহরণ, বলপূর্বক সম্পত্তি আদায়ের মতো অপরাধ করেন বা চেষ্টা করেন অথবা সহায়তা দেন অথবা অভ্যাসগতভাবে শান্তিভঙ্গ–সম্পর্কিত অপরাধ করেন বা করার চেষ্টা করেন বা সহায়তা করেন, তখন ওই ব্যক্তিকে তিন বছরের অনধিককালের জন্য মুচলেকা দেওয়ার আদেশ কেন দেওয়া হবে না, তার কারণ দর্শাতে বলতে পারবেন। অর্থাৎ যাঁরা অভ্যাসগতভাবে বারবার চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, প্রতারণার কাজে লিপ্ত হন, তাঁদের কাছ থেকে মুচলেকা নেবেন ম্যাজিস্ট্রেট।

ধারা ১২৬:
এ ধারায় জামিনদারদের অব্যাহতির বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। সিআরপিসির ১২৬ ধারার ভাষ্য, কোনো ব্যক্তির শান্তিপূর্ণ আচরণ বা সদাচরণের জন্য কোনো জামিনদার যেকোনো সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সম্পাদিত কোনো মুচলেকা বাতিলের আবেদন করতে পারবেন। এমন আবেদন পাওয়ার পর যে ব্যক্তির জন্য জামিনদার দায়ী, তাঁকে হাজির হওয়ার বা হাজির করার জন্য সমন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারবেন ম্যাজিস্ট্রেট। অর্থাৎ অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে যিনি জামিনদার হন, তাঁর ওপর কিছু দায়িত্ব বর্তায়। যদি তিনি মনে করেন, তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়, তখন আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেন।

ধারা ১২৭:
এ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশের আদেশে জনসমাবেশ ছত্রভঙ্গসংক্রান্ত বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অথবা কোনো থানার ওসি কোনো বেআইনি সমাবেশ অথবা সর্বসাধারণের শান্তি বিনষ্ট হওয়ার কারণ ঘটাতে পারে—এমন পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে কোনো সমাবেশ ছত্রভঙ্গ হওয়ার আদেশ দিতে পারেন।

ধারা ১২৮:
এ ধারায় জনসমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য বেসামরিক শক্তি প্রয়োগের বিধান বর্ণিত হয়েছে। সিআরপিসির ১২৮ ধারার ভাষ্য হচ্ছে, আদেশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যদি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ না হয় অথবা ছত্রভঙ্গ না হওয়ার সংকল্প প্রকাশ পায়, তাহলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অথবা থানার ওসি বলপূর্বক সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য অগ্রসর হতে পারবেন। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের আটক কিংবা গ্রেপ্তারও করা যাবে।

ধারা ১৩০:
এ ধারার ভাষ্য, যখন কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ কমিশনার সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা কমিশনপ্রাপ্ত নন এমন কর্মকর্তা, যিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোনো সেনাদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁকে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার কাজে এবং গ্রেপ্তার ও আটক করার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। প্রয়োজনবোধে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য অথবা শাস্তি দেওয়ার জন্য তাঁদের গ্রেপ্তার বা আটক করাতে পারবেন। অর্থাৎ ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিরক্ষা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগের দ্বারা সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে তিনি সামরিক কর্মকর্তাকে আহ্বান করতে পারেন। সামরিক কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ অনুযায়ী, আদেশ অমান্যকারীদের গ্রেপ্তার ও আটক করতে পারেন। তবে তাঁরা শক্তি প্রয়োগের ব্যাপারে খুবই রক্ষণশীল হবেন।

ধারা ১৩৩:
এ ধারার ভাষ্য হচ্ছে, যখন কোনো জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথবা অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ প্রতিবেদন বা অন্য কোনো সংবাদ পান যে জনসাধারণ আইনসংগতভাবে ব্যবহার করছেন বা করতে পারেন—এমন কোনো পথ, নদী বা খাল থেকে সর্বসাধারণের ব্যবহার্য কোনো স্থান থেকে বেআইনি বিঘ্ন বা উপদ্রব অপসারণ প্রয়োজন অথবা কোনো ব্যবসা বা পেশা পরিচালনায় অথবা কোনো মালপত্র বা পণ্যদ্রব্য রাখা স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য বা শারীরিক আরাম-আয়েশের পক্ষে ক্ষতিকর, সে জন্য এমন ব্যবসা বা পেশা নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত হওয়া প্রয়োজন অথবা এমন মালপত্র বা পণ্যদ্রব্য অপসারণ হওয়া দরকার অথবা কোনো ঘরের নির্মাণকাজে অথবা কোনো ঘরে, তাঁবু বা কাঠামো বা কোনো গাছ এমন অবস্থায় রয়েছে, যা পড়ে যেতে পারে; যাতায়াতকারীদের ক্ষতির কারণ ঘটাতে পারে, যে কারণে ঘর বা তাঁবু অপসারণ বা গাছ অপসারণ বা ঠেকা দেওয়া প্রয়োজন অথবা জনসাধারণের বিপদ থেকে নিবারণের জন্য কোনো পথ বা সর্বসাধারণের ব্যবহার করা স্থানের কাছে পুষ্করিণী, কূপ বা খন্দকের চারদিকে বেড়া প্রয়োজন অথবা কোনো বিপজ্জনক প্রাণী বিনষ্ট, আটক বা অন্য কোনোভাবে বিলি-ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, তখন ম্যাজিস্ট্রেট যে ব্যক্তি বাধা অথবা উপদ্রব সৃষ্টি করছেন অথবা এমন ব্যবসা বা পেশা চালাচ্ছেন অথবা এমন মালপত্র বা পণ্যদ্রব্য রাখিয়েছেন অথবা ঘর, তাঁবু, কূপের মালিক দখলদারদের ওই সব বাধা অপসারণ করার আদেশ দিতে পারবেন।

ধারা ১৪২:
সিআরপিসির ১৪২ ধারার ভাষ্য হচ্ছে, ১৩৩ ধারা অনুসারে আদেশ দেওয়ার সময় ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন, জনসাধারণের প্রতি গুরুতর রকমের আসন্ন বিপদ বা ক্ষতি প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন, তাহলে তিনি মীমাংসা সাপেক্ষে বিপদ মোকাবিলা বা ক্ষতি প্রতিরোধে জন্য যেরূপ প্রয়োজন, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদেশ হয়েছে, তাঁর সেরূপ আদেশ জারি করবেন। এরপরও যদি আদেশ না মানেন, তখন বিপদ মোকাবিলা বা ক্ষতি প্রতিরোধের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট যেরূপ ভালো মনে করেন, নিজে সেরূপ পন্থা অবলম্বন করবেন অথবা অবলম্বন করাবেন। এই ধারা অনুসারে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক সরল বিশ্বাসে করা কোনো কাজের বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা চলবে না।

মূলত সরকার পতনের পর থেকেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা টালমাটাল। বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসীদের বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, কথিত হাইব্রিড নেতাদের চাঁদাবাজি, ক্ষমতার মহড়া, শিল্প কারখানা বিশেষ করে পোশাক কারখানা গুলোতে নানামুখী ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ চোখে পড়ার মতো। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, “দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ইতিবাচক মাত্রায় নিয়ে আসতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই এ্যাক্টিভ থাকতে হবে। যেহেতু পুলিশ এখনো তাদেরকে গুছিয়ে নিতে পারেনি। তাই সেনাবাহিনীকে দিয়েই কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।”

সিরাজগঞ্জে বিএনপির স্হায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সম্প্রতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪, ৮:০৯ অপরাহ্ণ
সিরাজগঞ্জে বিএনপির স্হায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সম্প্রতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের নিয়ন্ত্রিত আদালতের মাধ্যমে ফরমায়েশি রায় এবং সরকারের সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হয়ে উত্তরবঙ্গের অবিসংবাদিত নেতা, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী,বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দীর্ঘদিন পরবাসে থেকে সিরাজগঞ্জে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকাল তিন ঘটিকায় সিরাজগঞ্জের বাজার স্টেশন এলাকারনকোট মসজিদের সামনে নতুন সড়কে জেলা বিএনপির সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দীর্ঘদিন বিদেশে চিকিৎসা শেষে সদ্য স্বদেশ প্রত্যাপনকারী সাবেক মন্ত্রী বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সংগ্রামী জননেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

এই সম্প্রীতি সমাবেশ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে জনাব ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে গন সম্বর্ধনা প্রদান করা হয়।

সম্প্রীতি সমাবেশ সভাপতিত্ব করবেন সিরাজগঞ্জ সদর  আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ।

সম্প্রীতি সমাবেশ পরিচালনা করবেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইদুর রহমান বাচ্চু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমিরুল ইসলাম খান আলিম। সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজসশাহী বিভাগ), বিএনপি।

এসময় সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান লেবু, মকবুল হোসেন চৌধুরী, নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, রকিবুল হাসান রতন, জাহাঙ্গীর হোসেন ভূইয়া সেলিম, রাকিবুল করিম খান পাপ্পু, ,তাঁতীদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক গোলাম মওলা খাঁন বাবলু, , বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজী জামাল উদ্দিন ভূইয়া,  সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ভিপি শামীম খান, যুগ্ম সম্পাদক রাশেদুল হাসান রঞ্জন, যুগ্ম সম্পাদক নুর কায়েম সবুজ, সাংবাদিক হারুন অর রশিদ খান হাসান, মুন্সি জাহেদ আলম, লিয়াকত আলী খান, সাব্বির হোসেন ভূইয়া সাফী,সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ সুইট, আলমগীর আলম, দফতর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশ, প্রচার সম্পাদক আলমগীর হোসেন জুয়েল, সহ-দফতর সম্পাদক সাংবাদিক শেখ মো. এনামুল হক, সহ-প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক রেজাউল করিম খান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহসম্পাদক সাংবাদিক এম দুলাল উদ্দিন আহমেদ,সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরকার মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. এস এম নাজমুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু, সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ, জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মতিয়ার রহমান, সদস্য সচিব টি এম শাহাদত হোসেন ঠান্ডু,জেলা মহিলা দলের সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন হাসি,সাধারন সম্পাদক এলেমা বেগম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আহসান হাবীব উজ্জ্বলসহ বিএনপি ও তার সকল অংগ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্র আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বললেন জয়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪, ২:৪৯ অপরাহ্ণ
ছাত্র আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বললেন জয়

ছাত্র আন্দোলনকারীরা নিজেরাই জাতির সামনে নিজেদের রাজাকার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ওই পোস্টে সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেন, ‘আমরা অনলাইনে দেখেছি কীভাবে ছাত্রদের আন্দোলনকে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রণ করেছে, এমনকি তারা নিজেরাও স্বীকার করেছে।’

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলতে তাদের কর্মকাণ্ড আপনারা দেখেছেন উল্লেখ করে জয় লিখেন, ‘এখন তারা প্রকাশ্যে আমাদের মুক্তির সংগ্রামে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে অস্বীকার করছে। নিজেদের রাজাকার হিসেবে নিজেরাই আবার জাতির সামনে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।’

বুধবার আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এসব দিবস উদযাপন/পালন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ জারি করা হয়।

বাতিল হওয়া আটটি দিবসের মধ্যে পাঁচটিই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারকেন্দ্রিক।

দিবসগুলো ছিল- ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের বিষয়ে বলা হয়েছে- উচ্চ আদালতের চূড়ান্ত আদেশ সাপেক্ষে দিনটি উদযাপন/পালন না করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

আজ থেকে সরকারি দামে ডিম বিক্রি করবে বড় কোম্পানিগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪, ২:৪৭ অপরাহ্ণ
আজ থেকে সরকারি দামে ডিম বিক্রি করবে বড় কোম্পানিগুলো

ডিমের বাজারের চলমান অস্থিরতা কাটাতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি দামে ডিম বিক্রির বিশেষ কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীতে ডিমের প্রধান দুটি পাইকারি বাজার তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করবে এ শিল্পের বৃহৎ করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)।

সেখানে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকায় এ কার্যক্রম শুরু করা হলেও সারাদেশেই এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’ এর মহাপরিচালক মো. আলীম আখতার খান কাপ্তান বাজারে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তেজগাঁও বাজারে এ কার্যক্রম শুরু হবে শুক্রবার থেকে।

এ বিষয়ে বিপিআইসিসির যুগ্ম-আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোল্ট্রি স্টেকহোল্ডাররা একত্রে বসে ডিমের যৌক্তিক উৎপাদন খরচসহ উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিজনিত বন্যার কারণে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জেলার পোল্ট্রি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হলে দৈনিক প্রায় ৬০-৭০ লাখ ডিমের উৎপাদন কমে যায়। এর ফলে চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, দেশের এ সংকটকালীন সময়ে একটি মহল অতিরিক্ত মুনাফা লোটার চেষ্টা করলে ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। দেশ ও মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিপিআইসিসি আগামী ১৫ দিনের যে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তাতে খামার থেকে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১২ টাকায় পাওয়া যাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সরকারের বাজার তদারকি সংস্থা, ডিম উৎপাদনকারী বড় খামারি ও পাইকারি আড়তদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠা এ উদ্যোগ সফল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিপিআইসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ১৫ অক্টোবর সকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে এবং দুপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে পৃথক দুটি সভা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায়ই বিপিআইসিসির উদ্যোগে ডিম উৎপাদনকারী বড় খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি অনলাইন সভা আহ্বান করা হয়। পরদিন ১৬ অক্টোবর বড় খামারি এবং তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারের পাইকারি আড়তদারদের প্রতিনিধি সমন্বয়ে আরও একটি সভা হয়। যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকায় ডিমের সরবরাহ ও বিপণন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

পরবর্তীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে সরকারি দামে ডিম বিক্রির কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সময় স্বল্পতার কারণে তেজগাঁও পাইকারি বাজারে যথাসময়ে ডিমের চালান পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না; তাই একদিন পর শুক্রবার থেকে তেজগাঁও বাজারের কার্যক্রম শুরু হবে।

এ কার্যক্রমে ডিম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- কাজী ফার্মস, ডায়মন্ড এগস লি., প্যারাগন পোল্ট্রি, পিপলস পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, নারিশ পোল্ট্রি, ভিআইপি শাহাদত পোল্ট্রি, নর্থ এগ লি., নাবিল অ্যাগ্রো, আর.আর.পি, রানা পোল্ট্রি, চাঁদ অ্যাগ্রো, কৃষিবিদ পোল্ট্রি, চিত্রা অ্যাগ্রো, আমান পোল্ট্রি এবং মেগা পোল্ট্রি। আফিল এগ্রো এবং প্রাণ অ্যাগ্রো পরবর্তীতে এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে আশা করছে বিপিআইসিসি।