মানহানির মামলা দিয়ে কণ্ঠ রোধের অপচেষ্টা
বিডিনিউজ ৯৯৯ সম্পাদকসহ ৪ সাংবাদিকের বিষয়ে মার্কিন গণমাধ্যম সংস্থার উদ্বেগ প্রকাশ

দেশের শীর্ষস্থানীয় অনুসন্ধানমূলক অনলাইন পত্রিকা বিডিনিউজ ট্রিপল নাইন (BDNEWS999) এর সম্পাদক মোঃ শাহ আলম খান সহ আরো ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যা মানহানি মামলাকে গনমাধ্যমের কন্ঠ রোধের অপচেষ্টা উল্লেখ করে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সুরক্ষা সংস্থা ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট’ (CPJ).
গত ১৭ ফেব্রুয়ারী (সোমবার) সংস্থাটির নিউ ইয়র্কে অবস্থিত সদর দপ্তর থেকে ওয়েবসাইটে এ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়৷ মার্কিন এ গণমাধ্যম সংস্থাটি বিশ্বব্যাপি সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করে থাকে৷ এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ঘটমান পরিক্রমা পর্যবেক্ষণ করে দেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে যোগাযোগ করে মার্কিন ওই প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থা ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট’ (সিপিজে)’র এই প্রতিবেদন দেশে গণমাধ্যম কর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন দেশের সুশীল সমাজ।
বলা বাহুল্য: অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে ব্যাংক খাতে লুটপাট চালিয়ে দেশ থেকে পালানোর পাঁয়তারা করা কুখ্যাত ঋণখেলাপী ও শ্রমিকদের হয়রানিকারী তাফরিদ কটন মিলের এমডি সামিউল ইসলামের দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা, প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক এবং নারী কর্মীকে হয়রানির তথ্য নিয়ে “বিডিনিউজ ট্রিপল নাইন” সহ কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করায় বিভিন্ন পাওনাদার ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ হানা দেয় ঋণখেলাপী সামিউল ইসলামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। তারা সামিউলের বিভিন্ন কারখানাও জব্দ করে।
এরই জের ধরে ক্ষুব্ধ হয়ে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধের অপচেষ্টায় আদালতকে বিভ্রান্ত করে, অনুসন্ধান মূলক অনলাইন পত্রিকা বিডিনিউজ ট্রিপল নাইন এর সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ শাহ আলম খান, সাপ্তাহিক জাতীয় পত্রিকা অগ্রযাত্রা’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মেহেদী হাসান ও এসাইনমেন্ট ইডিটর কামরুল ইসলাম, ইংরেজি পত্রিকা দ্য ডেইলি পোস্ট’র সিনিয়র রিপোর্টার আল ইহসান মোট ৪ সাংবাদিককে আসামী করে গত বছরের নভেম্বরে মানহানি মামলা দায়ের করেন তাফরিদ কটন মিলের এমডি কুখ্যাত ঋণখেলাপী শেখ শামিউল ইসলামের স্ত্রী নাজমুন নাহার। তবে মামলা দায়েরের পর প্রায় ৫ মাস পার হয়ে গেলেও অদ্যবধি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি ঋণখেলাপী ও জনগণের টাকা লুটপাটকারী প্রতিষ্ঠানটি৷
মূলত সংবাদকর্মীদের প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে দেশ থেকে পালাতে ব্যর্থ হয়েই ক্ষুব্ধ মনোভাব থেকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এমন হয়রানিমূলক মামলা করে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে চাইছে তাফরিদ কটন মিল কর্তৃপক্ষ- এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে তাফরিদ কটন মিলে চাকরি করে প্রতারিত, নির্যাতিত ও হয়রানির শিকার হওয়া শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী কুখ্যাত ঋণখেলাপী শেখ সামিউলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা ও অভিযোগ করলেও এখন অবধি সুবিচার না পেয়ে শঙ্কায় ভুগছেন৷ এ ব্যাপারে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট’ (সিপিজে) এর ওই বিশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখিত ৪ সাংবাদিক ছাড়াও বাংলাদেশে নির্যাতিত সকল সাংবাদিকদের বিষয়ে সর্বোচ্চ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটি ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সংস্থাটি।
আপনার মতামত লিখুন