দুদকের সেই শরীফকে (সিইও) পদে চায় বিমান কোম্পানি, বেতনের প্রস্তাব ২ লাখ টাকা « বিডিনিউজ৯৯৯ডটকম

দুদকের সেই শরীফকে (সিইও) পদে চায় বিমান কোম্পানি, বেতনের প্রস্তাব ২ লাখ টাকা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১০ নভেম্বর, ২০২২ | ৪:৫৮
ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১০ নভেম্বর, ২০২২ | ৪:৫৮
Link Copied!
দুদকের সেই শরীফকে (সিইও) পদে চায় বিমান কোম্পানি, বেতনের প্রস্তাব ২ লাখ টাকা -- বিডিনিউজ৯৯৯ডটকম

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে মাসিক ২ লাখ টাকা বেতনে একটি বিমান কোম্পানি তাদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছে। এই বিমান কোম্পানির পাশাপাশি আরও ৩০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে দুদকের এই সাবেক উপ-সহকারী পরিচালককে। সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি থেকে তাকে জয়েনিং লেটার অর্থাৎ নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এর মধ্যে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও শরীফকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ভূমিকা রাখায় ঘটনাচক্রে চাকরি হারান দুদকের পুরস্কারপ্রাপ্ত এই সাবেক কর্মকর্তা। চাকরি ফেরতের আবেদন নিয়ে দীর্ঘদিন দুদকের পেছনে ছুটেছেন মো. শরীফ উদ্দিন। কিন্তু তার আবেদনে সাড়া দেওয়া হয়নি। এমনকি তিনি চাকরি ফেরত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলেও দুদক থেকে তার বিরুদ্ধে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা শরীফ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে চট্টগ্রামে তার ভাইয়ের এক মুদির দোকানে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমের দৃষ্টিগোচর হলে সবাই ইতিবাচকভাবে শরীফের এই দুর্বিসহ জীবনের কথা তুলে ধরে।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণমাধ্যমের এসব প্রতিবেদন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নজরে আসলে তারা শরীফকে চাকরির জন্য প্রস্তাব দেন।

এ ব্যাপারে শরীফ বলেন, শেষ পর্যন্ত চাকরিটি ফিরে না পেয়ে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। রাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করতে গিয়ে আমি ভিকটিম হয়েছি। দুদক যেখানে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার কথা, সেখানে আমার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। আমি এই অংক মেলাতে পারছি না এখনও। আমার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি কমিশন। পারবেও না ইনশাআল্লাহ।

দুদকের এ সাবেক কর্মকর্তা বলেন, আমি চট্টগ্রামের প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে কাজ করেছি। অনুসন্ধান করেছি, তদন্ত করেছি, মামলা করেছি। এটা যদি আমার অন্যায় হয়ে থাকে, তাহলে দুদকে যারা ভালো কাজ করে তারা সবাই অন্যায় করছে। আর যদি আমার কাজ সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে দুদকের উচিত আমার পাশে দাঁড়ানো।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফকে দুদক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরিচ্যুতির আদেশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ৫৪(২)তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দিন, উপ-সহকারী পরিচালক, দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

বিনা নোটিশে শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হলেও এর বিপরীতে কোনো কারণ উল্লেখ করেনি সংস্থাটি। তার চাকরি ফেরত দিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। জাতীয় সংসদেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুদক কর্মকর্তারাও মাঠে নেমেছিলেন। এতকিছুর পরও চাকরি ফেরত পাননি শরীফ, যে কারণে জীবন চালাতে তিনি মুদি দোকানের চাকরি নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

বিষয়ঃ: