খুঁজুন
রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ়, ১৪৩২

ফিরে দেখা ২০২৪

অভ্যুত্থানে অগ্নিগর্ভ ছিল ময়মনসিংহ, মণ্ডা-পায়েসের জিআই স্বীকৃতি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:০৬ অপরাহ্ণ
অভ্যুত্থানে অগ্নিগর্ভ ছিল ময়মনসিংহ, মণ্ডা-পায়েসের জিআই স্বীকৃতি

কালের আবর্তে বিদায় নিয়েছে ঘটনাবহুল আরও একটি বছর। দুয়ারে উঁকি দিচ্ছে নতুন বছর। আওয়ামী লীগের বিতর্কিত ডামি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে ২০২৪ শুরু হলেও শেষ হয়েছে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের মধ্যে দিয়ে। ময়মনসিংহ বিভাগে অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী হিসেবে বিদায় নেওয়া বছরটিতে ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থান রয়েছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই বিভাগের পতিত সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের একসঙ্গে ‘পলায়ন’ এর বিষয়টিও ছিল নজিরবিহীন। 

বিজ্ঞাপন

ছাত্র-জনতার লাশের সারি আর দীর্ঘ না করতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ আর নন্দিত ভাবমূর্তির প্রশংসা কুড়িয়েছে তার নিজ জেলা শেরপুরেও। তার বলিষ্ঠ পদক্ষেপে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সারাদেশের মতো ময়মনসিংহ রেঞ্জের ৩৬টি থানাতে পূর্ণোদ্যমে কাজে ফিরেছে পুলিশ। জনরোষ থেকে সচল হয়ে ওঠেছে থানাগুলোর নানাবিধ কার্যক্রম। বেশ কয়েকবার সেনাপ্রধান স্বচক্ষে শেরপুর ও গৌরীপুরের কার্যক্রম পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতনদের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বক্ষণিক তৎপরতায় সব শঙ্কা কাটিয়ে নির্বিঘ্নে ১ হাজার ৭৬৫টি পূজা মণ্ডপে উৎসবের আমেজে নির্দ্বিধায় দুর্গোৎসব পালন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

সাফল্য-ব্যর্থতার বছরটিতে ময়মনসিংহ বিভাগের সীমান্তবর্তী তিন জেলার মানুষকে সামলাতে হয়েছে আকস্মিক বন্যার ধকল। বিদায়ী বছরটিতেই জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে মুক্তাগাছার মণ্ডা ও শেরপুরের ‘ছানার পায়েস’। মাদক বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৫ নভেম্বর ২৮ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) কর্তৃপক্ষের বহিষ্কারের বিষয়টিও ছিল চর্চিত। পরবর্তী সময়ে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে মমেক ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৮ শিক্ষার্থী ও ইর্ন্টান চিকিৎসককে কলেজ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। নিজের সহোদর চাচার হাতে ওমর ফারুক সৌরভ (২৪) নামে এক যুবকের লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড কাঁদিয়েছে সবাইকে।

বিজ্ঞাপন

সাফ ফুটবলে বিজয়-বৈজয়ন্তী উড়ানো বাংলার ৬ বাঘিনী দেশের নারী ফুটবলের জাগরণের গ্রাম হিসেবে পরিচিত ধোবাউড়ার কলসিন্দুর গ্রামকে করেছে আলোকোজ্জ্বল। বছরজুড়ে ক্রীড়াঙ্গণে স্থবিরতা থাকলেও শেষ সময়ে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট ও জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে নিন্দিত লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির নিজ বিভাগ ময়মনসিংহেও ছিলেন আলোচিত-সমালোচিত।

বিজ্ঞাপন

এসব কারণেই গ্রেগেরিয়ান ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে খসে পড়া বছরটি ময়মনসিংহবাসীর স্মৃতিতে উদ্ভাসিত থাকবে অনন্ত সময়। অতীতের সব দুঃখ-গ্লানি, বেদনা আর হতাশাকে ভুলে বৈষম্য দূরীকরণ আর সাম্য ফিরিয়ে আনার নতুন প্রত্যয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমালোচিত তাপসী তাবাসসুম

ডামি নির্বাচন, অতঃপর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের বিতর্কিত ডামি ভোটে ময়মনসিংহের ২৪টি সংসদীয় আসনে জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ না করলেও ভোটারবিহীন নির্বাচনে ২৪টি আসনেই জয় পায় আওয়ামী লীগ। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছিল চরমে। যার প্রভাব পড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে। গত ৫ আগস্টের পর থেকেই দলটির রাঘব-বোয়াল সব নেতারা ‘পলাতক’ রয়েছেন। তাদের খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঢেউ লাগে রাজনৈতিক সচেতন জেলা ময়মনসিংহেও। ২০২৪ সালের ৬ জুলাই ময়মনসিংহে সর্বপ্রথম বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন নগরীর ঐতিহ্যবাহী আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয়  কলেজ থেকে শিক্ষার্থীদের বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর টাউন হলে এসে শেষ হয়। ধীরে ধীরে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে শুরু করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ। এরই মধ্যে ১৯ জুলাই নগরীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সশস্ত্র হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশ। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন কলেজ শিক্ষার্থী রোদোয়ান হাসান সাগর (১৯)। এদিন ময়মনসিংহসহ সারাদেশে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে জারি হয় কারফিউ। পরদিন ২০ জুলাই কারফিউ ভঙ্গ করে সারাদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম গৌরীপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নির্বিচারে গুলি চালালে নূরে আলম রাকিব, বিপ্লব হাসান ও জুবায়ের আহমেদ শহীদ হন। এরপর ময়মনসিংহসহ সারাদেশে আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করলে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীসহ ময়মনসিংহের মন্ত্রী ও এমপিরা। ওই সময় স্থানীয় মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।

পালিয়ে যান দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

আওয়ামী লীগ নেতাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সৌমিত্র শেখর। এ নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. ফজলুল হক এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে।

ফুটবলকন্যা সানজিদা-তহুরা

ক্রীড়াঙ্গণে কলসিন্দুরের নারী ফুটবলারদের কৃতিময় সাফল্য  

আন্তর্জাতিক ফুটবলে ছেলেদের কোনো সাফল্য না থাকলেও আশা জাগিয়েছে নারী ফুটবল। সাফের শিরোপা ধরে রাখার পাশাপাশি মেয়েরা অনুর্ধ্ব-১৬ ও অনুর্ধ্ব-১৯ আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। দেশের নারী ফুটবলে শক্তি ও সম্ভাবনার কথা জানান দেওয়া ফুটবলের আকাশে চাঁদ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মারিয়া মান্দা, শামসুন্নাহার সিনিয়র, শামসুন্নাহার জুনিয়র, তহুরা খাতুন, সানজিদা আক্তার ও শিউলি আজিম ময়মনসিংহের সীমান্তঘেষা শেষ উপজেলা ধোবাউড়ার কলসিন্দুর গ্রামের সন্তান। সাফ শিরোপাতেও তারা রেখেছেন নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের ছাপ। ওই টুর্নামেন্টে তহুরা ভুটানের বিপক্ষে ৩টি, ভারতের বিপক্ষে ২টি ও শামসুনাহার জুনিয়র একটি গোল করে আন্তর্জাতিক মহলে উজ্জ্বল করেন বাংলাদেশের মুখ। বছরের শেষ প্রান্তে এসে জেগে ওঠে ময়মনসিংহের ক্রীড়াঙ্গণ। জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এবং আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের সফল আয়োজন অনন্য মর্যাদায় মহিয়ান করেছে ময়মনসিংহকে।

যুবদল নেতার মৃত্যুতে তোলপাড়, বহিষ্কার অ্যাকশনে বিএনপি

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ময়মনসিংহের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ ঘটে। মাঠ থেকে আওয়ামী লীগ লাপাত্তা থাকলেও পুরোদমে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় রয়েছে বিএনপি, জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এরই মধ্যে ঘটে যায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ নগরীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের (৪০) মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গণে তোলপাড় শুরু হয়। এদিকে, দলে শৃঙ্খলায় আনতে হার্ডলাইন কৌশল গ্রহণ করে বিএনপি। বহিষ্কারের মুখে পড়েন দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভালুকা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুসহ প্রায় ডজন খানেক নেতা। এ ঘটনায় আতঙ্কে ছিলেন দলটির বেশিরভাগ শীর্ষ সারির নেতারাও। দলটির নির্বাহী কমিটিতে জায়গা করে নেন আন্দোলন-সংগ্রামের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ। তিনি দলটির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে অভিষিক্ত হন।

জিআই পণ্য হিসাবে মুক্তাগাছা মণ্ডা ও ছানার পায়েস এর স্বীকৃতি  

স্বাদে-ঘ্রাণে অতুলনীয় মুক্তাগাছার মণ্ডার কদর দেশজুড়েই। অনন্য এই মিষ্টিকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। একইভাবে শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ‘ছানার পায়েস’ পেয়েছে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি। তারা মণ্ডা ও ছানার পায়েসের স্বাদসহ গুণগত মান বজায় রাখতে নিজেদের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন।

জামালপুর কারাগারে বিদ্রোহে নিহত হন ৬ বন্দি

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন কারাগারে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে একমাত্র জামালপুর কারাগারে বিদ্রোহে নিহত হন ৬ বন্দি। জেলারসহ আহত হন ১৯ জন। প্রায় ১০ ঘণ্টা গোলাগুলির পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় স্থানীয় প্রশাসন। এরপর কারা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করে জামালপুর কারাগার। বিদায়ী বছরটিতে আলোচিত এই ঘটনা ছাড়াও বিএনপির রাজনীতিতে অভ্যন্তরীণ বিরোধ দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

এরই জের ধরে গত ৩১ আগস্ট শহরের দেওয়ানপাড়া মোড়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন ৩০ নেতাকর্মী। এছাড়া মামলা থেকে নাম কাটার জন্য স্থানীয় বকশিগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান লাভলুকে ফোন করেন যুবমহিলা লীগের সভাপতি জহুরা বেগম। এ ঘটনার একটি অডিও কল রেকর্ড ফাঁস হলে যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান লাভলুকে কেন্দ্র থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে মারা যাওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতার নামে মামলা, র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়ে হাসপাতালে বশেফমুবিপ্রবির শিক্ষার্থী, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছাড়েন দুই শিক্ষক। এছাড়া গত ১১ সেপ্টেম্বর জামালপুরের মেলান্দহে নিজ ঘর থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় শাহিনা বেগম নামে এক সেনা সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নেত্রকোণায় পুলিশের অস্ত্র ও গুলি লুট; টংক আন্দোলনের নেতার মৃত্যু

গত ৪ আগস্ট সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন চলাকালে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে পুলিশের গাড়িতে হামলা করে ৭টি অস্ত্র ও ৪২০ রাউন্ড গুলি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় উত্তেজিত আন্দোলনকারীরা ৬ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে আহত করে। এতে ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়ি। ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ৭ আগস্ট শিক্ষার্থীরা রং তুলি দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মুছে দিয়ে ‘নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে ঝুলিয়ে দেয়। এরপর শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এর আগে এই বছরের গত ২৩ মার্চ উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রামের বাড়িতে মারা যান ঐতিহাসিক টংক আন্দোলনের সংগ্রামী নারী কুমুদিনী হাজং। ৯২ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা যান। কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে টংক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয় দুর্গাপুরের হাজং সম্প্রদাযয়ের কুমুদিনী হাজংয়ের স্বামী লংকেশ্বর হাজং। তৎকালীন পুলিশ ১৯৪৬ সালে কুমুদিনী হাজংকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে রাশিমনি হাজংয়ের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। সেখানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান রাশিমনি হাজং ও সুরেন্দ্র হাজং। এ সময় পুলিশের দুইজন সদস্য নিহত হন ওই ঘটনায়। যা ছিল দেশের তৎকালীন সময়ে বিশ্বব্যাপী আলোচিত একটি ঘটনা।

৪ মাস পর শেরপুর কারাগারের কার্যক্রম শুরু

বিগত ৪ আগস্ট শেরপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকারি গাড়ির ধাক্কায় দুই কলেজ ছাত্রের মৃত্যুতে শেরপুর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই দিনই শেরপুর কারাগারেও ঘটে হামলার ঘটনা। এতে অস্ত্র লুট, বন্দি পালিয়ে যাওয়াসহ নানা অঘটনের সূত্রপাত হয়। প্রায় ৪ মাস কারাগারের কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর গত ১২ ডিসেম্বর ফের শুরু হয়েছে  শেরপুর জেলা কারাগারের কার্যক্রম।

সেই সঙ্গে বিগত ৩৫ বছরের রেকর্ড ভেঙে আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার ৫টি উপজেলার দুই লাখেরও বেশি মানুষ। এতে ৪৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যায়। ভেঙে পড়ে প্রায় ৮ হাজার ঘড়বাড়ি। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে শেরপুর সদরের দোজা পীরের দরবারে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনাও ছিল বহুল আলোচিত।

এই প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করেছেন নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি চয়ন দেবনাথ মুন্না, জামালপুরের জেলা প্রতিনিধি মুত্তাছিম বিল্লাহ এবং শেরপুরের জেলা প্রতিনিধি মো. নাইমুর রহমান।

‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা’ জানানো সেই ছাত্রদল নেতাকে শোকজ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ
‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা’ জানানো সেই ছাত্রদল নেতাকে শোকজ

গাজীপুরে বিএনপির দলীয় পথসভায় বক্তব্য দেওয়ার পুরোনো এক ভিডিও সামনে আসার পর শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি নাহিদ হাসানকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিয়াউল করিম মোড়ল রিফাত গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে।

গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সরকার মো. রাকিব হোসেন স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, ‘শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে থেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. সোহাগ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল জনির উপস্থিতিতে জেলা কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।’

জানা যায়, শ্রীপুরের প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ। ওই কমিটিতে নাহিদ হোসেনকে সভাপতি করা হয়।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের ভাষ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তারও চার-পাঁচ মাস আগের।

সাত সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এসএম রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে বক্তব্য রাখছেন নাহিদ হোসেন।

তিনি বক্তব্যের এক পর্যায়ে সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আমি প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে মুজিবীয় শুভেচ্ছা জানাই।’

সে সময় রফিকুল ইসলাম তার কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন।

গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল জনি বলেন, ‘এক সময় যখন ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মীকে আন্দোলনে পাওয়া যেত না, তখন নাহিদ হোসেন আমাদের পাশে থেকে রাজনীতি করেছেন।’

এ বিষয়ে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ভুল করে ভারতে ঢুকে গেলেন বিজিবি সদস্য, পতাকা বৈঠকে ফেরত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ
ভুল করে ভারতে ঢুকে গেলেন বিজিবি সদস্য, পতাকা বৈঠকে ফেরত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে চোরাকারবারিদের তাড়া করতে গিয়ে দিকভ্রান্ত হয়ে ভারতে ঢোকে পড়া এক বিজিবি সদস্যকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। গত শনিবার (২১ জুন) ভোর ৫টার দিকে ভারতে ঢুকে পড়ার পর রাত পৌনে ১০টার দিকে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে ফেরত আনে বিজিবি।

এর আগে জেলার সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জহূরপুরটেক সীমান্তে বাংলাদেশে মহিষ চোরাচালানের সময় ২ মহিষ আটক করে বিজিবি। পরে আরো ২টি মহিষ ধরতে চোরাকারবারিদের তাড়া করতে গিয়ে ওই বিজিবি সদস্য দলছুট হয়ে ভুলক্রমে কাঁটাতারের বেড়াবিহীন সীমান্তের ওপারে ভারতে ঢুকে পড়েন।

বিজিবির ওই সদস্য হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (৫৩ বিজিবি) জহূরপুরটেক সীমান্ত ফাঁড়িতে (বিওপি) কর্মরত ল্যান্স নায়েক মতিউর রহমান।

স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানায়, শনিবার ভোরে মেইন আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৯/৭ এসের কাছ দিয়ে নিজ টহলদলের সঙ্গে চোরাকারবারি তাড়া করতে গিয়ে দলছুট হয়ে ভুলক্রমে কাঁটাতারের বেড়াবিহীন সীমান্তের ওপারে ভারতে ঢুকে পড়েন ল্যান্স নায়েক মতিউর। ইউনিফর্ম পরিহিত সশস্ত্র অবস্থায় ওপারে কাশবন এবং ঝোপজঙ্গলে হারিয়ে যান তিনি। সকাল ৭টার দিকে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিজিবির শেষ যোগাযোগ হয়।

সীমান্ত বিধি অনুযায়ী বিজিবি কর্মকর্তারা তাকে নির্দেশনা দেন কাছের বিএসএফ ক্যাম্পে যোগাযোগ করতে। এরপরই মতিউরের ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায়।
এদিকে নির্দেশনা অনুযায়ী মতিউর কাদাপানির মধ্যে সীমান্তের প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের ৭১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের পিরোজপুর ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিএসএফ তাকে হেফাজতে নেয়।

এর মধ্যেই বিজিবি কর্মকর্তারা বিএসএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। দিনব্যাপী যোগাযোগের পর রাত পৌনে ১০টায় সীমান্ত পিলার ১৯/১ এসের কাছে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত আনে বিজিবি।

৫৩ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেন, পতাকা বৈঠকে বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৭১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্ট অশোক কুমার জুবে।

তিনি বলেন, ঘটনার পর বিজিবি রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে এ রউফ সীমান্ত পরিদর্শন করেন।

অধিনায়ক আরো বলেন, নিছক দুর্ঘটনাক্রমে এ ঘটনার পর বিএসএফ ওই বিজিবি সদস্যকে আরো আগেই দিনের আলোয় ফেরত দিতে পারত। কিন্তু তারা তা করে নি। তারা রাতের অন্ধকারে ফেরত দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, গত ৪ জুন সকাল ৭টায় ওই একই সীমান্ত দিয়ে মদ্যপ ও সশস্ত্র অবস্থায় গালি দিতে দিতে এক বিএসএফ সদস্য বাংলাদেশের ৩শ গজ ভেতরে লোকালয়ে ঢুকে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে বিজিবি তাকে উদ্ধার করে ওইদিন সকাল সাড়ে ১১টায় ফেরত দেয়। কিন্তু বিজিবি সদস্য ফেরত দিতে বিএসএফ অনেক দেরি করেছে।

১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি: সমন্বয়ক নাহিদের বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ
১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি: সমন্বয়ক নাহিদের বিরুদ্ধে মামলা

ফেনীর সিভিল সার্জন অফিসে চাকরির জন্য ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির একটি অডিও ফাঁস হওয়ায় সমন্বয়ক নাহিদ ও চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

শুক্রবার (২০ জুন) রাতে জেলার পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার ইফতেখার হাসান ভূঁইয়া বাদী হয়ে পরশুরাম মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল হাকিম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। যদিও অভিযুক্ত নাহিদ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দাবি করছেন, অডিওটি তার নয়, এটি এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) দিয়ে তৈরি।

মামলার আসামিরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ রাব্বি (২৮)। তিনি পরশুরাম পৌর এলাকার কোলাপাড়া গ্রামের নুরুন্নবীর ছেলে। মামলার অপর আসামি আব্দুল কাদের (৩০) অনন্তপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ডা. মো. ইফতেখার হাসান ভূঁঞা হাসপাতালে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অডিও পেয়েছেন। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা সমন্বয়ক নাহিদ রাব্বি ফেনীর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ‘অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদে অর্থের বিনিময়ে এক চাকরি প্রার্থীকে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ১০লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। দুই মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের কথোপকথনে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এ জন্য নাহিদ রাব্বিকে প্রধান আসামি করে দুজনের বিরুদ্ধে তারা এ মামলাটি করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নাহিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নাহিদ দাবি করেছেন, ফাঁস হওয়া অডিওটি এআই দিয়ে তৈরি। এমন ঘটনার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন।

তবে অডিওটির কথোপকথনের সত্যতা চাকরিপ্রত্যাশী যুবক আবদুল কাদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সমন্বয়ক পরিচয়দানকারী নাহিদ আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের আগে তিনি আন্দোলন–সংগ্রামে না থেকেও বিভিন্ন সময় নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। মূলত তার মুখোশ উন্মোচন করতে এমন কৌশল তিনি বেছে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেনী জেলার সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমান ছাত্র প্রতিনিধি মুহাইমিন তাজিম বলেন, ফেনী জেলাসহ ৬ উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কমিটি নেই। কোথাও কোনো সমন্বয়কও নেই। তবে জেলাসহ প্রতিটি উপজেলায় ছাত্র প্রতিনিধি আছে একাধিক জন। পরশুরামের নাহিদ রাব্বি একজন ছাত্র প্রতিনিধি। রাব্বি একজন ভালো মানের সংগঠক, তিনি এমন কাজ করতে পারেন, তা বিশ্বাস হচ্ছে না।

ফেনী জেলার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ রুবাইয়েত বিন করিম বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। যারা লেনদেন করতে চাইছেন, তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ও মেধার ভিত্তিতে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে।

ঘুষ লেনদেনের অডিও ফাঁস হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ঘটনায় ইতোমধ্যে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে কাজ করছেন।

ফেনী সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন পদের ওই নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ১১৫টি পদের বিপরীতে ১২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষায় প্রতিটি পদের জন্য গড়ে ১০৮ জন লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন।