খুঁজুন
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ পৌষ, ১৪৩১

শ্রীপুরে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, রক্তমাখা দা উদ্ধার

মোঃ রিপন মিয়া, গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪, ৫:৩৮ অপরাহ্ণ
শ্রীপুরে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, রক্তমাখা দা উদ্ধার

গাজীপুরের শ্রীপুরে মামাশ্বশুরের বাড়ি থেকে স্মৃতি রাণী সরকার নামে এক গৃহবধূর গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি ধারালো দা ও এক জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী কাব্য সরকারকে আটক করেছে পুলিশ। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল এসব নিশ্চিত করেন।

বাড়ির পেছনের টিনের বেড়াটি ভাঙা থাকায় স্থানীয়দের ধারণা, দুর্বৃত্তরা বসতবাড়ির পেছন দিয়ে প্রবেশ করে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানোর পর গলা কেটে হত্যা করে স্মৃতি রাণী সরকারকে।

গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরমী বাজারের কামারপট্টির নিমাই চন্দ্র সন্ন্যাসীর বসতবাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে শ্রীপুর থানার পুলিশ।

নিহত স্মৃতি রাণী সরকার (৩৬) ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার দৌলতপুর গ্রামের সুনীল পালের মেয়ে। তঁর স্বামী কাব্য সরকার শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের কেশব চন্দ্র সরকারের ছেলে। বাবার সঙ্গে পারিবারিক বিরোধের কারণে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বামী কাব্য সরকার বরমী বাজারের কামারপট্টির মামাবাড়িতে বসবাস করেন।

নিহতের নানিশাশুড়ি রূপকোনা বলেন, ‘প্রতিদিন ভোরে আমি বাজারের মন্দিরে পূজা দিই। এ জন্য একটু আগেই আমাকে ঘুমাতে হয়। আমি পাশের ঘরে ঘুমের প্রস্তুতি সেরে বিছানায় শুয়ে ছিলাম। স্মৃতি তার দেড় বছর বয়সী ছেলে শ্রেয়ানকে নিয়ে তার ঘরে ছিল। হঠাৎ স্মৃতি দিদা বলে চিৎকার দেয়। দ্রুত আমি ঘরের বাইরের বারান্দায় এসে দেখি স্মৃতি বসে আছে। হঠাৎ দেখি সে বারান্দায় লুটিয়ে পড়ে। লাইটের সুইচ অন করে দেখি পুরো শরীর রক্তাক্ত। এরপর আমি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’ তবে কাউকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেননি বলে জানান তিনি।

নিহতের ছোট ভাই হৃদয় সরকার বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের এক ঘণ্টা আগে আপা আমাকে ফোন করে জানায় তার স্বামী ইন্ডিয়া যাওয়া জন্য রওনা হয়েছে। এক ঘণ্টা পর আপুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফোন করে জানায় বাড়িতে প্রবেশ করে কারা যেন আপুকে কুপিয়েছে। এরপর আমরা দ্রুত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে মরদেহ দেখতে পাই। আপুকে ওরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার পর গলা কেটে হত্যা করে।’

বরমী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. হাদিউল ইসলাম স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, ‘রাতে বসতবাড়িতে কয়েকজন দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে গলা কেটে খুন করে। এরপর তারা দ্রুত দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্বজনেরা প্রথমে তাকে স্থানীয় ক্লিনিকে এবং পরে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুদেপ চক্রবর্তী বলেন, ‘স্মৃতি রাণীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে কয়েকজন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা কেটে ফেলায় প্রচুর রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া হাতসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।’

শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞেসবাদের জন্য নিহতের স্বামী কাব্য সরকারকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা ধারালো দা ও জুতা জোড়া উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’

নরসিংদীর মাধবদীতে চাঁদা না দেওয়ায় শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ

মোঃ আলম মৃধা, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:৫৩ অপরাহ্ণ
নরসিংদীর মাধবদীতে চাঁদা না দেওয়ায় শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ

মাধবদীতে চাঁদা না দেওয়ায় নুর মোহাম্মদ নামে এক টেক্সটাইল মালিককে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ (২১ ডিসেম্বর) হত্যার পর গুমের উদ্দেশ্যে লাশ ফেলতে গিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীদের হাতে আটক হয় অভিযুক্তরা। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা।

জানা যায়, অটককৃতরা হলো মাধবদী কাঠালিয়া গ্রামের রববানি মিয়ার ছেলে রবিন (২১), একই গ্রামের এবাদুলাল্লাহ হোসেনের ছেলে রুবেল (২২), কোলাতপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে আলামিন (৪২), একই এলাকার আব্দুল রশিদ এর ছেলে রকিব হোসেন (২১)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিন, রকিব, আলামিন ও রুবেলসহ বেশ কয়েকজন নুর মোহাম্মদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তবে নিহত ব্যক্তি চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন।
এ নিয়ে তাদের সাথে টেক্সটাইল মালিকের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে গতকাল শুক্রবার রাতে নূর মোহাম্মদকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে তাকে পাশের একটি বন্ধ কারখানায় নিয়ে যায়া। এক পর্যায়ে চাঁদা দাবিকারী রুবেল, রকিব, রবিন, আলামিনসহ অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিরা নূর মোহাম্মদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

হত্যার পর নিহত নূর মোহাম্মদের লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ভোর রাতে বস্তাবন্দি করে নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার সীমান্তে ফেলে দিতে যায়। লাশ ফেলার সময় স্থানীয় লোকজন দেখে ফেলে। পরে স্থানীয়রা তাদের আটক করে মাধবদী থানা পুলিশকে খবর দেয়। দুপুরে পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে ও ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৪ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়।

নিহত নুর মোহাম্মদ সদর উপজেলার মাধবদী কাঠালিয়া ইউনিয়নের কোলাতপুর গ্রামের আলকাস মিয়ার ছেলে।

এই হত্যার বিষয়ে জানতে মাধবদী মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ নজরুল ইসলামকে সরকারি মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলে ফোনটি রিসিভ করেননি।

রাজধানীর মগবাজারে ট্রেনের ধাক্কাই এক যুবকের মৃত্যু

আব্দুল্লাহ আল মোত্তালিব, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:৫১ অপরাহ্ণ
রাজধানীর মগবাজারে ট্রেনের ধাক্কাই এক যুবকের মৃত্যু

রাজধানীর মগবাজার রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মোঃ আপন (২২)নিহত হয়েছে। নিহত আপন কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী উপজেলার মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে। বর্তমানে মগবাজার এলাকায় ভাড়া থাকতো।

শনিবার(২১ ডিসেম্বর)সন্ধ্যা সোয়া ৫টা নাগাদ অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী সোহাগ বলেন, আজ বিকেলের দিকে মগবাজার রেল ক্রসিং পারাপারের সময় কমলাপুরগামী একটি ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় ওই যুবকটি।পরে দ্রুততাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান ওই যুবকটি আর বেঁচে নেই।

তিনি আরও বলে,
আমরা ওই যুবকের পকেটে থাকা কাগজে লেখা মোবাইল নাম্বারে তার পরিবারের সাথে কথা বলে তার নাম পরিচয় জানতে পেরেছি। পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ ফারুক হোসেন, ওই যুবকের মরদেহ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশকে জানিয়েছি।

আগে একদল সড়কে দুর্নীতি করত এখন করছে অন্যদল: উপদেষ্টা নাহিদ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৫৩ অপরাহ্ণ
আগে একদল সড়কে দুর্নীতি করত এখন করছে অন্যদল: উপদেষ্টা নাহিদ

সড়ক ও পরিবহন খাতে দুর্নীতির সঙ্গে পলিটিক্যাল প্রভাব জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কের নৈরাজ্যের সাথে একটা পলিটিক্যাল প্রভাব জড়িত। সড়ক ও পরিবহণ খাতে আগে একদল দুর্নীতি করত এখন অন্যদল করছে। এটা খুব সহজে সমাধান হবে না। তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। দুর্নীতির সঙ্গে যেহেতু রাজনৈতিক কর্মী ও নেতারা জড়িত তাই সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা রাখতে হবে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সার্কিট হাউস সংলগ্ন প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত সড়ক পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। দিনব্যাপী এ সংলাপে সড়ক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও পরিবহণ সেক্টরের অংশীদারজনও উপস্থিত ছিলেন।

এ-সময় নাহিদ বলেন, বুয়েটের একজন মারা গেল। একটা ধারণা যে সমাজের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে যারা আছেন তাদের বিচার হয় না, জবাবদিহিতা হয় না। এখানে সাধারণ মানুষদের জীবনটাই আসলে যায়। এই চিত্র আমাদের সমাজে আছে। এটার পরিবর্তন দরকার। সবাইক বিচারের আওতায় আনা দরকার। এখানে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। উন্নয়ন নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, এখন রাস্তায় বের হয়ে মানুষ মারা গেলে সেটাকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। কারণ এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কারণে হচ্ছে। এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে রাস্তায় মানুষ বের হলে মানুষ মারা যেতে পারে৷ এখানে ব্যবস্থাপনাতেই সমস্যা রয়েছে। যে ধরনের প্রতিষ্ঠান সড়কের নিরাপত্তা দিতে পারে সেটাই তৈরি হয়নি।

পরিবহণ সেক্টরের দুর্নীতি চলমান আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের দল দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল আবার এখন আরেক দল রয়েছে। এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা প্রয়োজন। কারণ রাজনৈতিক কর্মীরাই এগুলোত জড়িত।

জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা পরিবহণ সমন্বয়ক কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক আরমানা সাবিহা হকসহ অন্যান্যরা।