খোলস পাল্টেছে ছাত্রলীগের অনেকেই
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা মহিবুল্লাহ বর্তমানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতা !
সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জেরে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নার্সিং ইউনিটের নেতা মহিবুল্লাহর দাপটে এখনো তটস্ত ঢাকা নার্সিং কলেজ। জুলাই আগস্ট গন অভ্যুত্থানে ছাত্রলীগ নেতা মহিবুল্লাহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহনে বাধা দেয় ও ছাত্রলীগের এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। তবে এখন তিনি ভোল পাল্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে থাকেন।
ঢাকা নার্সিং কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগ নার্সিং ইউনিটের সাধারন সম্পাদক পদ প্রার্থী মহিবুল্লাহ নিয়মিত আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে যাতায়াত করতেন। সেখানে তার সাথে ঢাকা নার্সিং কলেজের অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকতো। তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামের অনূসারী মহিবুল্লাহ ক্ষমতার দাপটে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অপমান, অপদস্থ করতো প্রতিনিয়ত।
মহিবুল্লাহর নামে অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে ছাত্রলীগ নেতা মহিবুল্লাহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। ছাত্রলীগ পরিচয় গোপন করে গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সম্বন্বয়ক তরিকুল ইসলামের সাথে ঢাকা নার্সিং কলেজের পক্ষ থেকে মতবিনিময় করেন। এতে ক্ষুব্ধ ঢাকা নার্সিং কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা।
সাধারন শিক্ষার্থীদের দাবি, কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা এসব ছাত্রলীগ নেতাদের প্রশ্রয় দিলে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী হবে। সমন্বয়কদের সমালোচনা করে সাধারন শিক্ষার্থীরা বলেন, সাধারন শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তের বাইরে ছাত্রলীগকে পূর্নবাসনের চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে।
ছাত্রলীগ নেতা মহিবুল্লার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের কমতি নেই। কলেজের অধ্যক্ষ শিরিনা আক্তারকে জোরপূর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে এবং তাকে শারিরিক ভাবে লাঞ্চিত করেন ছাত্রলীগ নেতারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রলীগ নেতা মো: মহিবুল্লাহ ও অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে মিডওয়াইফ শিক্ষার্থী সানজিদা সুলতানা পানশিসহ কয়েকজন ছাত্রীর উপর হামলা করে। আহত শিক্ষার্থী পানশিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। ছাত্রলীগ নেতা মো: মহিবুল্লাহ ভয় ও হুমকিতে ঢাকা নার্সিং কলেজের অনেক শিক্ষার্থী আতঙ্কিত ও সর্বদা জীবননাশের সংকায় থাকে।
এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতা মহিবুল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, বর্তমানে রেজিস্টার পদে হালিমা আক্তারকে সাময়িক নিয়োগ প্রদান করায় সে অসন্তোশ প্রকাশ করে এবং গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে মারামারি ও ভাংচুর করে সরকারের প্রায় ১০ (দশ) লক্ষ টাকার সম্পদ নষ্টসহ বিভিন্ন নথি নষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে।
এমতাবস্থায় ক্যাম্পাসে পড়ালেখার পরিবেশ সৃষ্টি করতে ছাত্রলীগ নেতা মহিবুল্লার ছাত্রত্ব বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থার দাবি জানিয়েছে সাধারন শিক্ষার্থীরা। নার্সিং কলেজের শিক্ষকরা দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
মহিবুল্লাহর বিরুদ্ধে এতোসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও যোগাযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
আমরা পরের পর্বে বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতা মহিবুল্লাহর আরো ইতিবৃত্ত তুলে ধরবো।
আপনার মতামত লিখুন