খুঁজুন
শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৯ পৌষ, ১৪৩১

বিতর্কিত নির্বাচন, গণঅভ্যুত্থান থেকে সরকার পতন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৪:০৮ অপরাহ্ণ
বিতর্কিত নির্বাচন, গণঅভ্যুত্থান থেকে সরকার পতন

আর মাত্র এক দিন, শুরু হবে নতুন বছর ২০২৫-এর যাত্রা। নতুন বছরে নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা বয়ে আনুক— এমন প্রত্যাশা সবার। অন্যদিকে, কালের গহ্বরে হারিয়ে যেতে থাকা ২০২৪ সাল জন্ম দিয়েছে নানা ঘটনার। এসব ঘটনা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বাংলাদেশের ইতিহাসে। 

২০২৪ সালের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। বছরের মাঝামাঝি সময়ে বের হয়ে আসতে থাকে দুর্নীতির একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এসব ঘটনা একদিকে যেমন জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার করে, তেমনি চরমভাবে বিব্রত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের একটি রায়কে কেন্দ্র করে শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার সীমাহীন বলপ্রয়োগ এবং নির্বিচারে শিক্ষার্থী হত্যার মতো ঘটনা ঘটায়। একপর্যায়ে কোটা আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে। শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পতন হয় দীর্ঘ ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। দেশের ইতিহাসে শুরু হয় নতুন এক অধ্যায়।

dhakapost
সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ । ছবি- সংগৃহীত

বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পান ৬১টি আসনে। জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পায় মাত্র ১১টি আসন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। তবে, এ নির্বাচন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের জন্ম দেয়। কারণ, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ শরিক দলগুলো এ নির্বাচন বর্জন করে। তারা এটিকে ‘ডামি নির্বাচন’ হিসেবে আখ্যা দেয়। নির্বাচনের প্রায় তিন সপ্তাহ পর ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন করে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। যদিও মাঠের রাজনীতিতে সেভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি তাদের।

ফাঁস হয় প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা বেনজীরের দুর্নীতি

পুলিশের প্রভাবশালী কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ছিলেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে পুলিশের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয় একটি জাতীয় দৈনিকে। সেই সংবাদ প্রকাশের পর শুধু বেনজীর আহমেদ নয়, বেকায়দায় পড়ে আওয়ামী লীগ সরকারও। দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। একপর্যায়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে তৎকালীন সরকার এ দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করে। বিষয়টি জানতে পেরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান পুলিশের সাবেক আইজিপি।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের ৬২১ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) খুঁজে পাওয়া গেছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দেন।

dhakapost
বছরের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ভারতে এমপি আনারের হত্যাকাণ্ড । ছবি- সংগৃহীত

মে মাসে ঘটে এমপি আনার হত্যাকাণ্ড

২০২৪ সালে সংঘটিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম ঝিনাইদহের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ড। ওই ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, গত ১২ মে পশ্চিমবঙ্গে যান ঝিনাইদহের সাবেক এমপি আনার। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। পরের দিন ১৩ মে চিকিৎসক দেখাতে হবে জানিয়ে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনার। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলে বন্ধুকে জানান। এরপর আর খোঁজ মেলেনি আনারের। পরে তার পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকার একটি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ২২ মে জানা যায়, কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের ‘বিইউ-৫৬’ নামের একটি ফ্লাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে। পরে কলকাতা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সঞ্জীবা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রায় চার কেজি মাংস উদ্ধার করে।

বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়, ঘাতকেরা এমপি আনারের মরদেহ টুকরো টুকরো করে সঞ্জীবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটের টয়লেটে ফেলে ফ্ল্যাশ করে দেয়। এ ছাড়া শরীরের হাড় কলকাতার ভাঙ্গরের বাগজোলা খালের বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয় তারা।

এ মামলায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। তারা হলেন- সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া, সিলিস্তা রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী।

dhakapost
১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার বুকিং দেন মুশফিকুর ইফাত। তিনি আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে । ছবি- সংগৃহীত

বছরের মাঝামাঝি সময়ে ঘটে আলোচিত ছাগলকাণ্ড

বছরের মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ জুন মাসে ঘটে দেশের অন্যতম আলোচিত ঘটনা ‘ছাগলকাণ্ড’। কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে এনবিআরের এক কর্মকর্তার ছেলে একটি ছাগল কেনেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। প্রশ্ন ওঠে, একজন সরকারি কর্মকর্তার ছেলে কীভাবে এত টাকা দিয়ে ছাগল কেনে?

পরে জানা যায়, ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার বুকিং দিয়ে আলোচনায় আসেন তরুণ মুশফিকুর ইফাত (২০)। তিনি আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। সমালোচনার মাত্রা বেড়ে গেলে ‘ইফাত তার ছেলে নয়’ বলে ঘোষণা দেন মতিউর রহমান। যদিও এ ঘোষণা দিয়ে কাজ হয়নি। দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে মতিউর রহমানের শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য। পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (শুল্ক ও আবগারি) ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দুর্নীতি, পিএসসির প্রশ্ন ফাঁস

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব থেকে বড় দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসে জুলাই মাসে। বিসিএস পরীক্ষাসহ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে জানা যায়, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় পিএসসির কর্মকর্তারা জড়িত।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম, পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

dhakapost
হাইকোর্টের একটি রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন । ছবি- সংগৃহীত

কোটা আন্দোলনে শুরু, সরকার পতনে শেষ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয় গত ১ জুলাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে ঠাঁই করে নেওয়া এ আন্দোলন থেকে ঘটে সরকার পতন।

গত ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায়ের পর দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তৎকালীন সরকার শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিটি বিভিন্নভাবে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে।

জুলাইয়ে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ধীরে ধীরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু তখনও আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি উপেক্ষা করে দলীয় ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে শক্তি প্রয়োগ করে। ফল হয় উল্টো। অর্থাৎ সরকার যতই শক্ত অবস্থান নেয় আন্দোলন ততই শক্তিশালী হয়। একপর্যায়ে আন্দোলন দমনে নির্বিচারে গুলি চালানো হয় ছাত্র-জনতার ওপর। শত শত বুক ঝাঁঝরা হয় পুলিশের ছোড়া বুলেটে। আহত হয় হাজারে হাজারে। তীব্র অসন্তোষ দেখা যায় জনমনে। লাখ লাখ জনতা নেমে আসে রাস্তায়। ছাত্র আন্দোলন রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। অবশেষে ৫ আগস্ট পতন ঘটে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের।

ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা জানান, আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। অন্যদিকে, ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের তথ্য অনুযায়ী, আন্দোলনে নিহত হয়েছেন ৮৬৫ জন। আহত হয়েছেন ১১ হাজার ২ জন। এর মধ্যে মৃত্যু অবস্থায় ৬৮২ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। ১৮৩ জন মারা যান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।

dhakapost
কোটা আন্দোলন থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, এরপর সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন; যা পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয় । ছবি- সংগৃহীত

জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যখন দিশেহারা সরকার, তখন পতনের ঠিক আগ মুহূর্তে অর্থাৎ ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে সরকার। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যখন সারা দেশ অচল, তখনও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরও কঠোর হওয়ার জন্য চাপ দেন তিনি। তবে, পরিস্থিতি যে একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে, সেটি তিনি কিছুতেই মানতে চাচ্ছিলেন না। পরে পরিবারের সদস্যরা বোঝানোর পর পদত্যাগে রাজি হন। এরপর দ্রুততম সময়ে পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টারযোগে গোপনে বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের একটি উড়োজাহাজ দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। ওই দিন (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিমানঘাঁটিতে শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাকে স্বাগত জানান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। পরের দিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশটির পার্লামেন্টে জানান, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনা ‘সাময়িকভাবে’ এ দেশে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন। সেটি মঞ্জুর হওয়ার পরই তিনি ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন।

dhakapost
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা, আশ্রয় নেন পাশের দেশ ভারতে । ছবি- সংগৃহীত

৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট শপথ গ্রহণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়। বঙ্গভবনে তাদের শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বঙ্গভবনে শপথ নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের ঘৃণ্য চেষ্টায় ব্যবহৃত হয়ে যারা অপরাধ সংঘটিত করেছেন তাদের আইনানুগ বিচারের মাধ্যমে শিগগিরই শাস্তি দেওয়া হবে। একই কথা সব মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য। সব অপরাধীর বিচার হবে।

dhakapost
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর একে একে ধরা পড়েন আওয়ামী লীগ ও শরিক দলের প্রভাবশালী নেতারা । 

দেশ ছেড়ে পালান প্রভাবশালী নেতারা

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও বিগত সরকারের অনেক প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপি ও নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার তিন মাস পরও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান বলে গুঞ্জন রয়েছে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলা দিয়ে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে হেভিওয়েটরাও রয়েছেন। যারা মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে সীমান্তবর্তী চিহ্নিত দালাল চক্রের মাধ্যমে দেশ ছাড়েন।

বছরের শেষদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ আওয়ামী লীগের একাধিক এমপিকে ভারতের কলকাতার একটি পার্কে দেখা যায়। সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে নিয়েও সৃষ্টি হয়েছিল ধূম্রজাল। সরকার পতনের পর তাকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় যে, তিনি দুবাই হয়ে বেলজিয়াম পাড়ি দিয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি অসীম কুমার উকিল, তার স্ত্রী অপু উকিলসহ সাবেক এমপি হাজী সেলিমের ছেলেকেও দেখা গেছে কলকাতার একটি ইকো পার্কে।

এমএসি/এমজে

যুবদল কর্মী হত্যার ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০:৪০ অপরাহ্ণ
যুবদল কর্মী হত্যার ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার

বরগুনার পাথরঘাটা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষ করে ফেরার পথে নাসির হাওলাদার (৩৮) নামে এক যুবদল নেতাকে পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সন্দেহের জেরে তিনটি বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও উপজেলা শিবিরের সভাপতিকে মারধর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

বুধবার উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সত্তার মিলিটারির বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার ইব্রাহিম খলিল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পাথরঘাটা সার্কেল মোহাম্মদ আবু ছালেহ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।

নিহত নাসির হাওলাদার পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে এবং ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য।

প্রত্যক্ষদর্শী আনসার মোল্লা জানান, আজ দুপুরে বাড়ির সামনে চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি নাসির রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে রাব্বি, ইব্রাহিম ও হাসান মোটরসাইকেলে করে দ্রুত পালিয়ে যান। রাব্বির হাতে একটি রামদা ছিল। এর আগে একাধিক মোটরসাইকেল দ্রুত চলে যায়।

জানা গেছে, রাব্বি (১৮) মাহবুব হোসেনের ছেলে, হাসান (১৯) ফরিদ গাজীর এবং ইব্রাহিম (১৮) আবু হানিফের ছেলে। এঁদের বাড়ি উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।

উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন, একসময়ের ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা-কর্মীরা জামায়াত-শিবিরের মাধ্যমেই এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। নাসিরের হত্যাকারী রাব্বি ও হাসান আগে ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। বর্তমানে তাঁরা জামায়াত–শিবিরে যোগদান করে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে যুবদলের নেতা নাসির হত্যার প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পাথরঘাটা বিএনপি। মিছিলে কয়েক শত নেতা-কর্মী অংশ নিয়ে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

এর আগে ঘটনার পরপর রাব্বি, ইব্রাহিম ও হাসানের বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সন্ধ্যার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা শিবিরের সভাপতি রাকিব হাসানকে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মারুফ হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখেছি নাসির আওয়ামী লীগের আমলে ১৫ থেকে ২০টি কোপ খেয়েও বেঁচে রয়েছে। কিন্তু শিবিরের রগ কাটার কৌশলের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। ছাত্রলীগ এখন শিবির লীগ হয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘নাসির যুবদলের সক্রিয় কর্মী। দলীয় প্রোগ্রাম শেষে নাসির শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে তার মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে ৮-১০ জনের একটি গ্রুপ তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে যায়।’ অভিযুক্তরা আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও বর্তমানে জামায়াত–শিবিরের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নিহত নাসিরের বাবা শাহজাহান বলেন, ‘আমি জামায়াত আর আওয়ামী লীগ চিনি না। আমার একমাত্র ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের সর্বোচ্চ বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা জামায়াতের সভাপতি হাফেজ মাওলানা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমার বাবা অসুস্থ থাকায় তাকে নিয়ে ঢাকায় চিকিৎসায় এসেছি। এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার শাহাদাত হোসেন জানান, নাসিরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাঁর দুই পায়ের রগ কাটা ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, যুবদল নেতা নাসিরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনায় পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাব্বি ও তাঁর বাবা মাহবুবকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ণ
স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনে গেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত ৮টা ৩০ মিনিটে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবনে প্রবেশ করেন তিনি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে এসেছিলেন তিনি। সেনাপ্রধানের সঙ্গে ওনার সহধর্মিণী ছিলেন। তারা প্রায় ৪০ মিনিট ছিলেন।’

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে এসেছিলেন তিনি। সেনাপ্রধানের সঙ্গে ওনার সহধর্মিণী ছিলেন। তারা প্রায় ৪০ মিনিট ছিলেন।’

শায়রুল কবির খান জানান, সেনাপ্রধান বাসভবনে পৌঁছালে মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবর তাকে স্বাগত জানান।

ফজলে এলাহি আকবরকে উদ্ধৃত করে শায়রুল কবির জানান, ‘সেনাপ্রধান বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেজন্য তিনি দোয়া করেছেন।

পোষ্য কোটা বাতিল না করলে এবার রাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ণ
পোষ্য কোটা বাতিল না করলে এবার রাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সব ধরনের পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আগামী রোববার থেকে “কমপ্লিট শাটডাউনের” ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। এদিন রাত ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।

ফলে দশ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রয়েছেন দুই উপ-উপাচার্য সহ শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা যায়, রাত ৭টার পরে প্রশাসন ভবনের ভেতর থেকে শাবল দিয়ে তালা ভাঙার চেষ্টা করেন অবরুদ্ধ থাকা কয়েকজন। এতে বাইরে থাকা এক শিক্ষার্থী আহত হন। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বর্তমানে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। তালাবদ্ধ অবস্থায় প্রশাসন ভবনের ভিতরেই রয়েছেন দুই উপাচার্য সহ অন্যরা।

এদিকে, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী ও রাবি অফিসার সমিতি। এতে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কয়েক দফা অবরুদ্ধ শিক্ষক-কর্মকর্তারা গেট ভেঙে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। জড়ান বাকবিতণ্ডায়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বাধায় তারা বের হতে পারেননি।

আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির সহ-সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার অসুস্থ হওয়ার আগে বলেন, “পোষ্য কোটা বাতিলের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। আমাদের দাবি না মেনে নিলে আগামী রবিবার থেকে আমরা সবকিছু বন্ধ করে দিবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন থেকে শুরু করে ক্লাস-পরীক্ষা সবকিছু বন্ধ থাকবে।”

এসময় “পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে, লড়াই হবে একসাথে”, “আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম”, “দালালদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে”, “মেধাবীদের কান্না, আর না আর না”, “জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো”, “আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ”সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও বাইরের শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছেন।

অন্যদিকে অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন বলেন, “আমরা আগামী ৫ জানুয়ারি উপাচার্যর সঙ্গে দেখা করবো। তিনি যদি আমাদের দাবি মেনে না নেন তাহলে ৬ তারিখে মানববন্ধন, ৭ তারিখে অবস্থান কর্মসূচি এবং ৮ তারিখে দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করবো। তাতেও যদি কোনো সমাধান না হয় তাহলে আমরা লাগাতার কর্মসূচিতে যাবো এবং কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দেব।”

শিক্ষার্থীদের অন্য দুইটি দাবি হলো – ফ্যাসিস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের আওতায় আনা এবং দুইজন ফ্যাসিবাদী শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেওয়ার জন্য উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে উন্মুক্ত স্থানে কারণ দর্শানো। এছাড়া, সম্পূরক একটি দাবি হলো – ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমানো।