খুঁজুন
রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ়, ১৪৩২

সামাজিক ‘নেটওয়ার্ক’ হারিয়েছে পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৪:১৩ অপরাহ্ণ
সামাজিক ‘নেটওয়ার্ক’ হারিয়েছে পুলিশ

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স কখনও ছিল না। সদস্য সংখ্যা কম থাকার কারণে অপরাধ দমন ও প্রতিরোধে নানা পদ্ধতি ও উপায় হাতে নিতে হয়েছে পুলিশকে। বিশেষ করে এলাকাভিত্তিক অপরাধ যেমন- চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ যে কোনো অপরাধ দমন ও প্রতিরোধে স্থানীয় কমিউনিটির সাহায্য নিত পুলিশ। যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকার অপরাধী এবং বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে খুব সহজেই খবর পেত পুলিশ প্রশাসন। যা ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত।

জানা যায়, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সঙ্গে স্থানীয় সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকতেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির এলাকাভিত্তিক স্থানীয় নেতাকর্মীরা এখন পলাতক। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ ব্যবস্থা। এখন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধের বিষয়ে আগাম কোনো খবর আসছে না পুলিশের কাছে। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে নতুন করে কারা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন, সে বিষয়েও কোনো তথ্য পাচ্ছে না পুলিশ। বিষয়টি বুঝতে পেরে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে নানা অপরাধ ঘটাচ্ছেন।

জনবল সংকটের কারণে এলাকাভিত্তিক অপরাধ দমন ও প্রতিরোধে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের যাত্রা শুরু হয়। দেশের জনসংখ্যার আনুপাতিক হার অনুযায়ী পুলিশের জনবল অনেক কম। দেশে ৮০০ থেকে ৯০০ জনের বিপরীতে রয়েছেন একজন পুলিশ। ইউএন (জাতিসংঘ) স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ৪০০ জন নাগরিকের বিপরীতে একজন পুলিশ থাকার কথা বলা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশের ঘাটতি পূরণ এবং অপরাধ দমনে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার বিকল্প নেই

এদিকে, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী সরকারের পতনের পর ডিএমপিতে অনেক রদবদল হয়েছে। থানাগুলোর ওসি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত বদলি করা হয়েছে। বদলি করে যাদের ঢাকায় আনা হয়েছে তাদের মধ্যে অধিকাংশের ডিএমপিতে কাজ করার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। ফলে তারা এখনও ঠিক মতো ঢাকার রাস্তাঘাট চেনেন না। এর মধ্যে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া। ঢাকার নতুন পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের কাছ থেকে এখন কোনো তথ্য পাচ্ছেন না।

কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা মূলত পুলিশের সামাজিক নেটওয়ার্ক, এটি খবর ও তথ্য নেওয়ার মাধ্যম। এর মাধ্যমে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ প্রশাসন।

dhakapost

এ বিষয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে এলাকায় নিয়মিত পুলিশ আসত। বিশেষ করে রাতে টহল দিত। তারা এসে কমিউনিটি পুলিশিংয়ে যারা নিয়োজিত ছিলেন তাদের কাছ থেকে অপরাধ ও অপরাধীদের তথ্য নিতেন। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে চুরি কিংবা ছিনতাইয়ের ঘটনা কম হতো। কিন্তু এখন পুলিশ তেমন আসে না, কারও কাছ থেকে খবরও নেয় না। পুলিশের তৎপরতা না থাকায় এখন চোর ও ছিনতাইকারীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়।

রাজধানীর মালিবাগ এলাকার বাসিন্দা কাজল শেখ বলেন, আগে রাত-বিরাতে পুলিশ আসত। এলাকার মুরুব্বিদের সঙ্গে আড্ডা দিত, এলাকার খোঁজখবর নিত। ফলে চোর ও ছিনতাইকারীরা কিছুটা হলেও ভয়ে থাকত। কিন্তু এখন পুলিশ আসে না, এলাকার কারও কাছ থেকে তথ্যও নেয় না। অপরাধীরা এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ কিছু বলার সাহস দেখাচ্ছে না।

যে কারণে দরকার কমিউনিটি পুলিশিং

পুলিশ জানায়, তাদের জনবল সংকটের কারণে এলাকাভিত্তিক অপরাধ দমন ও প্রতিরোধে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের যাত্রা শুরু হয়। দেশের জনসংখ্যার আনুপাতিক হার অনুযায়ী পুলিশের জনবল অনেক কম। দেশে ৮০০ থেকে ৯০০ জনের বিপরীতে রয়েছেন একজন পুলিশ। ইউএন (জাতিসংঘ) স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ৪০০ জন নাগরিকের বিপরীতে একজন পুলিশ থাকার কথা বলা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশের ঘাটতি পূরণ এবং অপরাধ দমনে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার বিকল্প নেই।

আগে রাত-বিরাতে পুলিশ আসত। এলাকার মুরুব্বিদের সঙ্গে আড্ডা দিত, এলাকার খোঁজখবর নিত। ফলে চোর ও ছিনতাইকারীরা কিছুটা হলেও ভয়ে থাকত। কিন্তু এখন পুলিশ আসে না, এলাকার কারও কাছ থেকে তথ্যও নেয় না। অপরাধীরা এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ কিছু বলার সাহস দেখাচ্ছে না          রাজধানীর মালিবাগ এলাকার বাসিন্দা কাজল শেখ

তবে পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা ব্যাহত হলেও অপরাধ দমনে নাগরিকদের সাহায্য নেওয়ার জন্য পুলিশ ভিন্ন আঙ্গিকে কাজ করা শুরু করেছে। ‘নাগরিক কমিটি’ বা ‘সিটিজেন ফোরাম’ নামে একটি পদ্ধতি নিয়ে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। এর মাধ্যমে নাগরিকদের নতুন করে পুলিশিং ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সিটিজেন ফোরাম নিয়ে কাজ চলছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। সিটিজেন ফোরামের মাধ্যমে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।

dhakapost
গত ১৫ বছরে পুলিশ বড় ধরনের অপরাধ করেছে, আমরা লজ্জিত : পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম । 

অন্যদিকে, কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার কাজ করা হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় ঘটেছে। যেমন- এর সঙ্গে সম্পৃক্তরা মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে অনেকের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করতেন। এ ছাড়া ঘনিষ্ঠ অপরাধীদের বাঁচাতে তারা নানা রকম মিথ্যা তথ্য দিতেন পুলিশকে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা এখন পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কারণ, স্বেচ্ছাচারিতা ও পক্ষপাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন অনেক কমিউনিটিপ্রধান। বিশেষ করে দলীয় পরিচয়ে যারা এখানে সম্পৃক্ত ছিলেন। এ কারণে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা নতুন করে আর সচল করা হয়নি।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ‘সিটিজেন ফোরাম’ গঠন নিয়ে কাজ চলছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। সিটিজেন ফোরামের মাধ্যমে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে                                     পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর

যা বলছেন মাঠ পর্যায়ের পুলিশ

এ বিষয়ে ডিএমপির বিভিন্ন থানার অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অপরাধ দমনে স্থানীয়দের সহায়তার প্রয়োজন আছে। কারণ, পুলিশের একার পক্ষে প্রতিটি এলাকার গিয়ে অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তবে, এখন একটু সমস্যা হচ্ছে। বিগত কমিটিগুলোর সদস্যরা আওয়ামী লীগের লোকজন ছিলেন। তাদের অনেকে পালিয়ে গেছেন, আবার অনেকে বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ফলে নতুন করে লোকজন নিয়ে এ কমিটি আর করা হয়নি। এটি আসলেই বড় ধরনের সমস্যা। কারণ, এসব কমিটি করতে হলে আবারও রাজনৈতিক দলের লোকজনকে নিয়ে আসতে হবে। তারা আসলে ফের নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠবে। তবে, যেভাবেই হোক পুলিশিং ব্যবস্থার সঙ্গে নাগরিকদের যুক্ত করতে হবে। তা না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমপির এক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, আগের কমিটিগুলোর বিরুদ্ধে অনেক অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাই এসব কমিটি এখন আর সক্রিয় করা সম্ভব নয়। তবে, আমরা স্থানীয় সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে কমিউনিটির একটি সেতুবন্ধন তৈরি হবে।

dhakapost

ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি থানার ওসিকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেন দ্রুত নাগরিক কমিটি বা সিটিজেন ফোরামের কার্যক্রম চালু করেন। থানাগুলো এ কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। তারা দল-মত নির্বিশেষে নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করছেন। স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, খেলোয়াড়, চিকিৎসক, শিক্ষক ও ধর্মীয় নেতাদের কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।

কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা এখন পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কারণ, স্বেচ্ছাচারিতা ও পক্ষপাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন অনেক কমিউনিটিপ্রধান। বিশেষ করে দলীয় পরিচয়ে যারা এখানে সম্পৃক্ত ছিলেন। এ কারণে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা নতুন করে আর সচল করা হয়নি                           ডিএমপির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)

থানা পুলিশের প্রত্যাশা, জনগণ আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে।

যেভাবে শুরু কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা শুরু হয় ১৯৯৪ সালে থেকে। ওই সময়ে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম‍ শহীদুল হক, যিনি পরবর্তীতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হন; মূলত তিনিই এ ব্যবস্থা চালু করেন। ১৯৯৪ সালে ময়মনসিংহে হঠাৎ করে বেড়ে যায় চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। ওই পরিস্থিতিতে তৎকালীন এসপি আহমাদুল হক গঠন করেন ‘টাউন ডিফেন্স পার্টি’। এটি মূলত কমিউনিটি পুলিশিংয়ের একটি অংশ। ঠিক সে সময়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম শহীদুল হক কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে কাজ শুরু করেন, যা পরবর্তীতে ডিএমপিসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

গাজীপুরে বিপুল পরিমান বিদেশি মাদকসহ ২ যুবক আটক

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ১০:৫৯ অপরাহ্ণ
গাজীপুরে বিপুল পরিমান বিদেশি মাদকসহ ২ যুবক আটক

২১ জুন ২০২৫, শুক্রবার বেলা ১১:৩০ এর দিকে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি চৌকস দল গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার জৈনা ফুটওভার ব্রিজের নিচে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মাদকদ্রব্যসহ দুই যুবককে আটক করেছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ জানতে পারে, ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের পাকা রাস্তা উপরে মাদক পাচারের উদ্দেশ্যে একদল মাদক কারবারি অবস্থান করছে। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকাগামী একটি প্রাইভেটকার (মডেল-এন-২১-০০৭৬) থামিয়ে তল্লাশি করে। এ সময় গাড়ির ভেতর থেকে ৪টি প্লাস্টিকের বক্সে রাখা ১৬০ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ভারতীয় বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।

আটককৃতরা হলো: ১. ইমন হোসেন (২৪), পিতা-মৃত আমির হামজা, গ্রাম-বোয়ালকান্দি, থানা-চৌহালী, জেলা-সিরাজগঞ্জ। ২. আরিফ হোসেন বাপ্পী ওরফে বাবু (২৪), পিতা-মৃত শাহাবুদ্দিন সাং- রৌহা জামতলা বাজার, ডাকঘর কুমলী, থানা- নেত্রকোনা সদর, জেলা – নেত্রকোনা ।

তাদের সঙ্গে থাকা অপর সহযোগী পালিয়ে যায়।ডিবি পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আটক কৃতরা স্বীকার করেছে তারা শ্রীপুর থানাধীন মাওনা এলাকার একজন মাদক ব্যবসায়ী তাজুল ইসলামের নিকট মাদক বিক্রির উদ্দেশ্যে এসেছিল।

আটক কৃতদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় মামলা নং-৪৫, তারিখ-২১/০৬/২০২৫, ধারা-৩৬(১) টেবিল ২৪(খ)/৪১ অনুযায়ী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামি তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।

আসামিদের আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শিক্ষা থেকে দূরে থাকায় বাঙালি মুসলমান সমাজ শত বছর পিছিয়ে গেছে: ফজলুল হক

মহানগর প্রতিনিধি, ঢাকা
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ
শিক্ষা থেকে দূরে থাকায় বাঙালি মুসলমান সমাজ শত বছর পিছিয়ে গেছে: ফজলুল হক

বাংলা একাডেমি’র সভাপতি বিশিষ্ট চিন্তক ও লেখক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, “ব্রিটিশরা আসার পর স্কুল-কলেজের শিক্ষা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকায় বাঙালি মুসলমান সমাজ ১০০ বছর পিছিয়ে যায়‌। সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বই পড়া তথা শিক্ষার বিকল্প নেই।’

শুক্রবার বিকেলে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বুক অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বুক অলিম্পিয়াড বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সভাপতি লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী মাহফুজ ফারুকের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বুদ্ধিজীবী গবেষক ও লেখক ড. কাজল রশীদ শাহীন, বুদ্ধিজীবী লেখক ও সংগঠক নাহিদ হাসান, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, ‘এবং বই’য়ের সম্পাদক ও লেখক ফয়সাল আহমেদ এবং ‘স্বরে অ’ প্রকাশনীর প্রকাশক আবু বকর সিদ্দিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বুক অলিম্পিয়াড বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেঁজুতি হাসান।

বুক অলিম্পিয়াডের মধ্যমে দেশ সেরা পাঠক হিসেবে জাতীয় পর্বে প্রথম স্থান অধিকার করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাবিবা আক্তার মিম, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিতা বিশ্বাস এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার।

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট, সনদপত্র এবং বই তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আগত অতিথিদের বই দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। বিষয় ভিত্তিক পরীক্ষা, লেখক কথন, উপস্থিত কুইজ, অনুভূতি প্রকাশসহ বই বিষয়ক বিভিন্ন সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এসব পর্বে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বিষয়ক লেখক ও গবেষক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার এবং কবি ও কথাসাহিত্যিক মনোয়ার লিটন।

অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে উপস্থাপনা করেন বুক অলিম্পিয়াডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে এইচ খান রোহান, সদস্য সৌরভ মন্ডল এবং সাদিয়া আফরিন।

সারাদেশের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীরা বাছাই পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। বাছাই পর্বে উত্তীর্ণ শতাধিক বিজয়ীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় পর্ব।

অলিম্পিয়াডে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত বই আল মাহমুদের ছড়া-কিশোরকবিতাগ্রন্থ ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘আম আঁটির ভেঁপু’, জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ ‘বনলতা সেন’, হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘ময়ূরাক্ষী’, মাহফুজ ফারুকের লেখা ‘বুকপিডিয়া’ এবং ইমরান মাহফুজ সম্পাদিত লিটলম্যাগ ‘কালের ধ্বনি’র জুলাই অভ্যুত্থানে আহত কবি ও লেখক সংখ্যা পাঠ শেষে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।

বাংলাদেশের জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ১০:৫০ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের

বাংলাদেশের জন্য আরও ৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার সমান ১২৩ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ছয় হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

ওই টাকা বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতা, সরকারি খাতের জবাবদিহিতা এবং আর্থিকখাতের স্থিতিশীলতা বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হবে।

শনিবার (২১ জুন) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস এ তথ্য জানায়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি টেকসইভাবে বৃদ্ধির জন্য সরকারি অর্থায়ন কীভাবে পরিচালিত হয় তার উন্নতি গুরুত্বপূর্ণ। সরকার তার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও উন্মুক্ত এবং জবাবদিহিতামূলক করার জন্য উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে তারা জনগণকে আরও ভালো সেবা দিতে পারে। এই অর্থায়ন সরকারের নীতিমালা এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে যাতে একটি শক্তিশালী, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ে তোলা যায়। যা সবার উপকার করে। গত সপ্তাহে অনুমোদিত আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে, আমরা এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তা করছি।

বিশ্বব্যাংক জানায়, বর্তমানে, মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম, যা জনগণের কাছে মানসম্পন্ন পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে সীমিত করছে। এই কর্মসূচি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহের উন্নতির লক্ষ্যে সংস্কারগুলোকে সমর্থন করবে। এই সংস্কারগুলো আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে কর প্রশাসন এবং নীতি নির্ধারণকে আরও স্বচ্ছ এবং দক্ষ করে তুলবে।

এই অর্থায়ন আন্তর্জাতিক মানের সাথে আর্থিক প্রতিবেদনের সমন্বয় সাধন এবং স্বচ্ছতা বাড়ানোর মাধ্যমে কর্পোরেট সুশাসন এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাঠামোকেও শক্তিশালী করবে। এটি ব্যাংকিংখাতে দুর্বলতা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংককে সম্পূর্ণ সমাধান ক্ষমতা প্রদান করে আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা উন্নত করতে সহায়তা করবে।

সংস্কারের তৃতীয় ধাপটি সরকারি খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং দক্ষতা উন্নত করবে। ২০২৭ সালের মধ্যে, সমস্ত সরকারি প্রকল্প মূল্যায়ন নথি জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করতে হবে। প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং দুর্নীতির ঝুঁকি কমাতে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক সরকারি ক্রয় (ই-জিপি) ব্যবহার, সুবিধাভোগীর মালিকানা প্রকাশ এবং মূল্যসীমা অপসারণ করতে হবে। সরকারিখাতে আর্থিক জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা উন্নত করার জন্য, নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক কার্যালয়ের নিরীক্ষা ক্ষমতাও জোরদার করা হবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর স্বাধীন তথ্য স্বচ্ছতা উন্নত করবে, এর ফলে দেশের মানুষের জন্য উন্নত পরিষেবা সরবরাহ সম্ভব হবে।

এ অর্থায়নের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশকে মোট নতুন প্রতিশ্রুত তিন দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ালো। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে ৪৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান, সুদমুক্ত এবং ঋণ অনুমোদন করেছে।