খুঁজুন
রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

পুলিশের বন্দুক যুদ্ধে নিহতর ঘটনায়

৮ বছর পর আ’লীগ নেতাকর্মীদের নামে হত্যা মামলা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:১৪ অপরাহ্ণ
৮ বছর পর আ’লীগ নেতাকর্মীদের নামে হত্যা মামলা

বরিশালের মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী এলাকার আমানতগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এলাকায় ২০১৬ সালের ৩১ মে ভোরে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন সেলিম হাওলাদার (৪০)। ওই ঘটনার আট বছরেরও অধিক সময় পর ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি কর্মী সেলিম হাওলাদারকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের ভাই।

আজ শনিবার সকালে মামলার বাদি মোস্তফা হাওলাদার অভিযোগ করেন, সেলিম হত্যার প্রকৃত ঘটনা ধামাচাঁপা দেয়া হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয়ে দীর্ঘদিন এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে থাকায় মামলা দায়ের করতে পারেননি। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, সেলিমের আতঙ্ক শুধু মুলাদীতে নয়; আশপাশের এলাকায়ও ছিলো। তার (সেলিম) বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা ছিল। বন্দুক যুদ্ধে নিহত হওয়ার পূর্বে সেলিমকে ধরিয়ে দিতে জেলা পুলিশ ৫০ হাজার টাকা পুরষ্কার ঘোষনা করেছিলো।

সর্বশেষ আদালতে দায়ের করা এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে বিএনপি কর্মী সেলিম হাওলাদারকে হত্যার অভিযোগে নামধারী ও অজ্ঞাতনামাসহ মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে আনা হয়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে নালিশী মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মোস্তফা হাওলাদার। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ ফেরদৌস জানিয়েছেন, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুমাইয়া রেজবী মৌরি নালিশী অভিযোগ এজাহার হিসেবে রুজু করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য মুলাদী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহারে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর প্রতিদ্বন্ধীকে সমর্থন করে বিএনপি কর্মী সেলিম হাওলাদার। এতে এলাকার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়। নির্বাচনের পর ২০১৬ সালের ১ জুন সেলিম হাওলাদার ঢাকা থেকে নিজ গ্রামে আসে। স্থানীয় লঞ্চঘাট থেকে সকালে বাড়ি ফেরার পথে সফিপুর গ্রামের ৪০-৪৫ জন দুর্বৃত্তরা তার (সেলিম) উপর হামলা করে। পরে সেলিমকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার পর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চলে যায়। পথচারীরা সেলিমকে উদ্ধার করে মুলাদী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

যদিও তৎকালীন মুলাদী থানার ওসি মতিউর রহমানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্যের সূত্র বলছে, ২০১৬ সালের ৩১ মে ভোরে সেলিমকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার খোলামোড়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১০ এর সদস্যরা। ওইদিন দুপুরে সেলিমকে মুলাদী থানায় সোপর্দ করে র‌্যাব। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সেলিমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাত তিনটার দিকে পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সেলিমকে নিয়ে বের হন। এসময় উত্তর বালিয়াতলী এলাকার আমানতগঞ্জ বাজারের সন্নিকটে পৌঁছলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সেলিমের সহযোগিরা তাকে (সেলিম) ছিনিয়ে নেয়ার জন্য পুলিশের ওপর গুলি ছোঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে সেলিম পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলিতে মুলাদী থানার এসআই ফারুক হোসেন, এসআই কমল ও কনেস্টবল পারভেজ আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুটি পাইপগান, চার রাউন্ড বন্দুকের গুলি, দুটি রামদা, দুটি লোহার রড ও দুটি বন্দুকের গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। সেলিমের বিরুদ্ধে ডাকাতি অপহরনসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ১১টি মামলা রয়েছে। পরবর্তীতে সেলিমের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।

শনিবার সকালে নিহত সেলিমের ভাই ও মামলার বাদি মোস্তফা হাওলাদার বলেন, ইউপি নির্বাচনের জেরধরে বন্দুক যুদ্ধের নামে সেলিমকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাঁপা দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয়ে তিনি দীর্ঘদিন এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করায় মামলা করতে পারেননি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাড়ি ফিরে তিনি আদালতে ভাই হত্যার বিচার দাবি করে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় অভিযুক্তদের স্বজনরা জানিয়েছেন, এতোবছর পর বিষয়টিকে ভিন্নখাতে নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মাঠে নেমেছে সেলিমের স্বজনরা। এখন তারা সেলিমকে বিএনপির কর্মী বানিয়ে তাকে (সেলিম) হত্যা করার অভিযোগ এনেছেন। তারা আরও বলেন, মামলার বাদি মোস্তফা হাওলাদারের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা থাকায় সে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। সেইসাথে যাদের মামলায় আসামি করা হয়েছে তাদের অনেকেই কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নেই। অনেকে চাকরিসহ বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, বিনা অপরাধে কাউকে হয়রানি করার সুযোগ নেই। তদন্তে যা আসবে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেখ হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ৬:১১ অপরাহ্ণ
শেখ হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গণহত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

আজ রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

এর আগে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

একই সঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অপর আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে এই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।

এদিন সকালে জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। এই বিচারকাজ বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে নির্বিচারে হত্যা চালায় আওয়ামী লীগ সরকার। এতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারান।

বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব বানাতে চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ৬:০৯ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব বানাতে চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান

বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চীনা বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রবিবার রাজধানীর মাল্টিপারপাস হলে চীনা বিনিয়োগকারীদের নিয়ে আয়োজিত দিনব্যাপী চীন-বাংলাদেশ ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব বানাতে আপনারা এখানে বিনিয়োগ করুন। এখানে তৈরি পোশাক, জ্বালানি, কৃষি, পাট, তথ্য প্রযুক্তি সম্ভাবনাময় শিল্প। বাংলাদেশের মোট জনশক্তির অর্ধেকের বয়স ২৬ বছরের নিচে।

তিনি বলেন, এই তরুণরা কাজে যোগ দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এই তরুণদের কাজ লাগানোর জন্য চীনা ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও বাজার বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দিতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও চীন সরকার যৌথভাবে সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

সম্মেলনে চীনের ১০০ কোম্পানির প্রায় ২৫০ বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেছেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বক্তব্য রাখেন।

বাজারে আসছে নতুন নোট

১১ ব্যাংকের মাধ্যমে আজ ছাড়া হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ৬:০৭ অপরাহ্ণ
১১ ব্যাংকের মাধ্যমে আজ ছাড়া হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা নতুন নকশা ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট রোববার (১ জুন) প্রথমবারের মতো বাজারে আসছে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য অফিসগুলো থেকে এই নোটগুলো ইস্যু করা হবে।

রবিবার মোট ১১ ব্যাংকের মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। তবে গ্রাহকরা তা হাতে পাবেন সোমবার (২ জুন) থেকে। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সব মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট রোববার (১ জুন) প্রথমবারের মতো বাজারে ছাড়া হবে। বর্ণিত নোটসমূহ ওই তারিখে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে।

এসব মূল্যমানের নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া, মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে; যা টাকা জাদুঘর, মিরপুর থেকে নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে।

‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-

১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটের ডিজাইন :
১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬০ মি.মি.×৭০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘১০০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে বেগুনি রঙের আধিক্য রয়েছে।

নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, সাভার এর ছবি ও মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (এক হাজার টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানের ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বামদিকে নোটের মূল্যমান ‘১০০০’, ডানকোণে ‘১০০০’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের ওপরে বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে।

নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৫ মি.মি. চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং ‘১০০০ টাকা’ খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং ‘১০০০ টাকা’ অংশে একটি উজ্জ্বল রংধনু বার ওপর থেকে নিচে ওঠানামা করে।

এছাড়া, নোটের ডানদিকের কোণায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘১০০০’ রং পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি (ওভিএমআই) দ্বারা মুদ্রিত। যাতে নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রং ম্যাজেন্টা থেকে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং মূল্যমানের ভেতরে কোনাকুনিভাবে মুদ্রিত ‘১০০০’ লেখাটি দৃশ্যমান হয়। পাশাপাশি, নোটের সম্মুখভাগের পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা দ্বারা মুদ্রিত যা ইউভি ডিটেক্টর মেশিন দ্বারা দৃষ্টিগোচর হয়।

৫০ টাকা মূল্যমানের নোট:
৫০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ মি.মি.×৬০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘৫০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংককের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে গাঢ় বাদামি রঙের আধিক্য রয়েছে।

ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা- লেখাটি উভয় পাশে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে ইংরেজিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পেছনভাগের বামদিকের ওপরে ‘৫০’ ও নিচে ‘৫০’ লেখা ব্যাকগ্রাউন্ডে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে যথাক্রমে “50 TAKA’ এবং BANGLADESHBANK’ মুদ্রিত রয়েছে।
২০ টাকা মূল্যমানের নোট:

২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৭ মি.মি.×৬০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘২০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য রয়েছে।

ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুরের ছবি এবং নোটের মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (বিশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা’র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বামদিকে মূল্যমান ‘২০’, ডানকোণে ‘২০’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳২০’ মুদ্রিত রয়েছে।