খুঁজুন
বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ৩১ বৈশাখ, ১৪৩২

বিশেষ ছাড়ে ৯১ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ
বিশেষ ছাড়ে ৯১ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন

বিশেষ ছাড়ের সুযোগ নিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় গত বছর রেকর্ড পরিমাণ খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ কমাতে নবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছিল। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ বা খেলাপি কিস্তির অর্থ এককালীন বা ডাউন পেমেন্ট কম হারে পরিশোধ করে দীর্ঘ সময়ের জন্য নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়।

এ সুযোগ নিয়ে ২০২৩ সালে ৯১ হাজার ২২১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়। নবায়ন করা ওইসব ঋণের মধ্যে একই বছরে আবার ৫৪ হাজার ৬০ কোটি টাকার ঋণ নতুন করে খেলাপি হয়ে পড়ে। ঋণ নবায়নের শর্ত অনুযায়ী কিস্তি পরিশোধ না করায় ওইসব ঋণ আবার খেলাপি হয়ে পড়ে।

রোববার রাতে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটি প্রতিবছর একবার প্রকাশ করা হয়। এতে দেশের সার্বিক অর্থনীতি ও আর্থিক খাতের সম্ভাবনা ও ঝুঁকির চিত্র তুলে ধরা হয়। এবারের প্রতিবেদনটিতে ওইসব খাতের সার্বিক অবস্থার পাশাপাশি ব্যাংক খাতের সব ধরনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আগে এ প্রতিবেদনে অনেক তথ্য গোপন করা হতো। এবার প্রায় সব তথ্যই তুলে ধরা হয়েছে। ফলে আর্থিক খাতের অনেক নেতিবাচক চিত্রও প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে। আইএমএফ-এর ঋণের শর্ত হিসাবে গত বছরের আগস্টে এ প্রতিবেদনটি তথ্যসমৃদ্ধ করে প্রথম প্রকাশিত হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন গভর্নর দায়িত্ব নিয়ে প্রতিবেদনটিকে আরও সমৃদ্ধ করে প্রকাশ করা হয়েছে। এবার অনেক বেশি মাত্রায় নতুন নতুন তথ্য দেওয়া হয়েছে, যা ব্যাংক খাতের দুর্বলতার চিত্র ওঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ নবায়ন করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বেশকিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে, যা ২০১৮ সাল থেকেই চলমান। এর মধ্যে করোনার সময় ও বৈশ্বিক মন্দার কারণেও ২০২০ থেকে ২০২২ সালেও বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ঋণের বা কিস্তির অর্থ কম হারে পরিশোধ করে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঋণ নবায়ন করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে ডাউন পেমেন্ট ছাড়াও খেলাপি ঋণ নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব সুযোগ নিয়ে খেলাপিরা গত বছর রেকর্ড পরিমাণ খেলাপি ঋণ নবায়ন করেছেন, যা আগে কখনো করা হয়নি।

বিশেষ বিবেচনায় বা ছাড়ে ২০১৮ সাল থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ নবায়নের সুযোগ দিয়ে আসছে। ওই সুযোগ নিয়ে ২০১৯ সালে ৫২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়। ২০২০ সালে নবায়নের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ কমে ১৯ হাজার ৮১০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০২১ সালে আবার বেড়ে ২৬ হাজার ৮১০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন হয় বিশেষ ছাড়ে। ২০২২ সালে তা আবার বেড়ে রেকর্ড পরিমাণ অর্থাৎ ৬৩ হাজার ৭২০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়। ২০২৩ সালে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে ৯১ হাজার ২২১ কোটি টাকার খেলাপি নবায়ন করা হয়। বিশেষ বিবেচনায় নবায়ন করা খেলাপি ঋণের কিস্তি গ্রাহক নিয়মিত পরিশোধ না করায় আবার খেলাপি হয়ে পড়ছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে খেলাপি থেকে নবায়ন করা ঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ওই বছরে আবার খেলাপি হয়েছিল ২৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা, যা মোট নবায়ন করা ঋণের ২১ দশমিক ৯ শতাংশ।

২০২০ সালে খেলাপি থেকে নবায়ন করা ঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ওই বছর আবার ২৯ হাজার ৯৩০ কোটি টাকার ঋণ নতুন করে খেলাপি হয়ে পড়ে, যা মোট নবায়ন করা ঋণের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ।

২০২১ সালে নবায়ন করা ঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ওই বছর ৩২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকার ঋণ নতুন করে খেলাপি হয়ে পড়ে, যা মোট নবায়ন করা ঋণের ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

২০২২ সালে খেলাপি থেকে নবায়ন করা ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে একই বছর নতুন করে খেলাপি হয়েছে ৪০ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা, যা ছিল মোট নবায়ন করা ঋণের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ।

২০২৩ সালে খেলাপি থেকে নবায়ন করা হয়েছে এমন ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ওই বছর নতুন করে খেলাপি হয়েছে ৫৪ হাজার ৬০ কোটি টাকা, যা মোট নবায়ন করা ঋণের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, খেলাপি ঋণ নবায়নের মধ্যে বেশির ভাগ ঋণই নিয়মিত থেকে যাচ্ছে। অর্থাৎ ওইসব ঋণের গ্রাহকরা নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করছেন। কিন্তু গড়ে ১৯ থেকে ২২ শতাংশ গ্রাহক ঋণের শর্ত অনুযায়ী কিস্তি পরিশোধ করছেন না। ফলে ওইসব ঋণ আবার খেলাপি হয়ে পড়ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংক খাতে গত বছর স্বল্পমেয়াদি তারল্যের ঘাটতি ছিল। যে কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যাংকগুলোয় তারল্যের ঘাটতি মোকাবিলা করতে হয়। কিছুদিনের মধ্যেই আমানত বাড়তে শুরু করেছে।

খেলাপি ঋণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এবং ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দেওয়ায় ঋণ আদায় কম হয়েছে। যে কারণে ব্যাংকগুলোর সম্পদ বা ঋণ থেকে আয় কম হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে ব্যাংকগুলোর নিট আয় বেড়েছে। অন্যান্য খাত থেকে আয় বাড়ায় ব্যাংকগুলোর আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ওই বছরে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ বাণিজ্যি ও আমদানি খাতে অর্থাৎ ৩১ হাজার কোটি টাকা এবং শিল্প খাতে ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, খেলাপি ঋণের মধ্যে সিংহভাগই ছিল শীর্ষ ৫ ব্যাংকের হাতে। মোট খেলাপির ৪৭ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল ৫ ব্যাংকের কাছে। বাকি ৫২ দশমিক ৪০ শতাংশ ছিল অন্য ব্যাংকগুলোর কাছে।

ছাত্রশিবিরের কোরআন কুইজে বিজয়ী হিন্দু শিক্ষার্থী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ১:১৩ অপরাহ্ণ
ছাত্রশিবিরের কোরআন কুইজে বিজয়ী হিন্দু শিক্ষার্থী

ছাত্রশিবিরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত পবিত্র কোরআনের ওপরে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছেন গৌরব সরকার নামের এক হিন্দু শিক্ষার্থী। সোমবার (১২ মে) বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে এই কোরআন কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে কলেজ চত্বরে কুইজে বিজয়ী শিক্ষার্থী গৌরবসহ ৫০ শিক্ষার্থীর হাতে আল কোরআনের বাংলা অনুবাদ তুলে দেন ছাত্রশিবিরের নেতারা।

পরে সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিবছর ১১ মে ছাত্রশিবির পবিত্র কোরআন দিবস পালন করে।

এ উপলক্ষ্যে পবিত্র কোরআন ও আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাস সম্পর্কিত প্রশ্নের ভিত্তিতে অনলাইনে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়৷

কুইজ প্রতিযোগিতায় ৪০০ অংশগ্রহণকারীর মধ্য থেকে ৫০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে গৌরব সরকার ৪০ নম্বরের পরীক্ষায় ৩৬ নম্বর পেয়ে প্রথম হন।

এ প্রসঙ্গে বিজয়ী গৌরব সরকার বলেন, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ধর্মগ্রন্থগুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে বেশ ভালো লাগে। সেই হিসেবে কোরআন নিয়েও পড়াশোনা করি। ছাত্রশিবিরের কুইজে অংশ নিয়ে বিজয়ী হতে পেরেছি এজন্য দারুণ লাগছে বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চত করে সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিক্ষার্থীদের পবিত্র কোরআন পাঠে আগ্রহী করতে কুইজের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে গৌরবের বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারটি দারুণ। তাকে পুরস্কৃত করতে পেরে আমাদের ভালো লেগেছে।

এছাড়াও সবারই জ্ঞান অর্জনের জন্য ধর্মের ঊর্ধ্বে এসে ধর্ম গ্রন্থগুলো পাঠ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাম্য হত্যায় ঢাবি ভিসির ওপর দায় চাপানো সত্যকে আড়াল করার পাঁয়তারা: সারজিস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ১:০৬ অপরাহ্ণ
সাম্য হত্যায় ঢাবি ভিসির ওপর দায় চাপানো সত্যকে আড়াল করার পাঁয়তারা: সারজিস

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাম্য হত্যাকাণ্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রক্টর স্যারের সঙ্গে অসভ্য আচরণের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

বুধবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় সামাজিক মাধ্যমে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি অভিযোগ তুলেছেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের ভাই সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রক্টর স্যারের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে এবং তাদের ওপরে দায় চাপানোর যে চেষ্টা করা হয়েছে সেটা স্রেফ অপচেষ্টা এবং সত্যকে আড়াল করার পাঁয়তারা।’

তিনি বলেন, ‘প্রথমত, ঘটনা ঘটেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শৃঙ্খলার দায়িত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের না। দ্বিতীয়ত, এই উদ্যানের মাদক সেবন, হেনস্থা, চাঁদাবাজি সহ যাবতীয় অপকর্ম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নয় বরং ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কিংবা প্রভাব খাটানো বিভিন্ন সংগঠন এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা বিভিন্ন সিন্ডিকেট করে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উদ্যানের গেট এবং উদ্যানের ভিতরের অংশে ভাসমান দোকান দিয়ে বস্তি বানানো, মন্দিরের গেটের আশপাশে এবং পুরো ক্যাম্পাসে শতাধিক ভাসমান দোকান ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্টের অন্যতম কারণ। এই দোকানগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বসায়নি বরং ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কোনো না কোনো সংগঠনের কিছু চাঁদাবাজ নেতাকর্মীরা বসিয়েছে। তারা এর ভাগ নেয় এবং প্রটেকশন দেয়।’

সারজিস বলেন, ‘এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেকেই সিন্ডিকেটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এসব অপকর্মে প্রশ্রয় দেয় এবং নিজের ভাগ বুঝে নেয়। কেউ ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করতে চাইলে তাকে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা বিভিন্ন নেতাকর্মীর দ্বারা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এগুলো উচ্ছেদ করতে যায় তখন তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়, ক্ষমতার দাপট দেখানো হয়। উদ্যানের গেট যখন বন্ধ করা হলো তখন এই গেট খুলে যারা গেটের ভিতরে ও বাইরে পঞ্চাশের অধিক দোকান বসিয়েছে তারা এই হত্যার পরিবেশ সৃষ্টির পিছনে অন্যতম দায়ী।’

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল স্টেশন এবং শহিদ মিনারকে ব্যবহার করে যারা সেখানে শতাধিক ভাসমান দোকান বসিয়ে, চাঁদাবাজি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করছে তারা এমন হত্যাকাণ্ডের পরিবেশ সৃষ্টির পেছনে দায়ী।

যারা উদ্যানের ভিতরে মাদকের সিন্ডিকেট চালায়, মাদক সাপ্লাই দেয়, মাদক সেবনের পরিবেশ তৈরি করে এবং সেখান থেকে চাঁদাবাজি করে তারা এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে পরোক্ষভাবে দায়ী।’

‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কখনো একটা শহরের মানুষের চা, পান, সিগারেট খাওয়ার, আড্ডা দেওয়ার কিংবা অবাধ মেলামেশার জায়গা হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য টিএসসির ভিতরের ক্যাফেটেরিয়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য যাবতীয় চা, কফি, নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে‌। কিন্তু সেই ক্যাফেটেরিয়াকে অকার্যকর করে টিএসসিতে প্রায় ৩০টা চা দোকানের আসর বসানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এগুলো বন্ধ করতে যাক, দেখবেন একদল ভণ্ড এবং সো-কল্ড লিবারেল সুশীল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের বদহজম শুরু হয়েছে। তাদের চেতনা থেকে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের মতো লাভার নির্গমন শুরু হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে অনেকটাই অপ্রয়োজনীয় এই চা দোকানগুলোতে প্রতিদিন পুরো ঢাকা শহর থেকে হাজার হাজার ছেলে মেয়ে আসে। সঙ্গে কিছু বখাটে মাদকসেবীও আসে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে। যারা টিএসসির এই দোকানগুলো রাখতে বাধ্য করেছে এবং যারা চাঁদাবাজি করছে তারাও এই হত্যাকাণ্ডের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য দায়ী।’

‘দোয়েল চত্বরের একপাশে প্রায় ৩০টার মতো বিভিন্ন কারুকার্যখচিত পণ্যের দোকান এবং অপরপাশে প্রায় ২০টা গাছের দোকান বসানো হয়েছে। দেখতে সুন্দর লাগলেও এখানেও প্রতিদিন হাজার হাজার খদ্দের ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসে এবং পুরো ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা বৃদ্ধি করে। যানজট সৃষ্টি করে। অবৈধভাবে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতি মাসে কারা এখান থেকে চাঁদাবাজি করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে হবে। তারাও এই হত্যাকাণ্ডের পরিবেশ সৃষ্টিতে পরোক্ষ ভাবে দায়ী ।’

‘আমার যে কোনো একজন ভাইয়ের হত্যা হওয়া তো দূরের কথা, তার গায়ে অনাকাঙ্ক্ষিত একটা আঘাত আমরা প্রত্যাশা করিনা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের কাজগুলো করতে দিব না, নিজেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য অবৈধ দোকান বসাবো, মাদকের ব্যবসা চালাবো, চাঁদাবাজি করব, বহিরাগত নিয়ে আসার যাবতীয় আয়োজন করব আর কোনো একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টরের পদত্যাগ চাইবো; এইসব দ্বিচারিতা বন্ধ করতে হবে।’

‘একটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমি আমার মন মতো স্বাধীনতা চাইব, যা খুশি তাই করতে চাইব, ক্ষমতার অপব্যবহার করব আবার শৃঙ্খলাও প্রত্যাশা করব; এই দুইটা একসঙ্গে সম্ভব না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করবো- ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের সকল ভাসমান দোকানকে উচ্ছেদ করতে হবে। টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুলভ মূল্যে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মাফিক খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। কার্জন হল, মোকারম ভবন এবং মোতাহার ভবনে ক্যাফেটেরিয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। টিএসসিকে চা দোকানের আখড়া থেকে মুক্ত করতে হবে। ক্যাম্পাসে অবাধে সকল প্রকার যান চলাচল এবং বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

সর্বশেষে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাই সাম্যের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সাম্যের মতো আর কোন ভাইকে যেন হারাতে না হয় কিংবা কারো গায়ে আঘাত না লাগে তার যথাযথ ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনতিবিলম্বে কার্যকর দেখতে চাই।’

ঢাবির ছাত্রদল নেতা হত্যার ঘটনায় উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

মহানগর প্রতিনিধি, ঢাকা
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ
ঢাবির ছাত্রদল নেতা হত্যার ঘটনায় উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচারের দাবি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে মাঠে নামছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে ছাত্রদল।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাংলা একাডেমি সংলগ্ন এলাকায় কতিপয় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী, স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য মঙ্গলবার রাতে নিহত হয়েছেন। সাম্যর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।

এদিকে সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) থেকে তাৎক্ষণিক মিছিল বের করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে ভিসির বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ ঢাবি ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস।

এ সময় ‘দফা এক দাবি এক, ভিসির পদত্যাগ’, আমার ভাইয়ের লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। মিছিলে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।