রাজধানীর জেনেভা ক্যাম্পে গোলাগুলি, নিহত ১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে শাহনেওয়াজ ওরফে কাল্লু (৩৮)নিহত হয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জে একটি চাপের দোকানে কাজ করতেন।
বুধবার (১৭ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জেনেভা ক্যাম্পের একজন বলেন, “ক্যাম্পে প্রায়ই মাদক ব্যবসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি এবং হত্যার মতো ঘটনাও ঘটে। বুধবার রাতে জেনেভা ক্যাম্পে আবারও মাদকের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি শুরু করে শীর্ষ মাদক কারবারি ভূইয়া সোহেল গ্রুপ ও মাদক কারবারি পারমনু গ্রুপ।
এ-সময় ভূইয়া সোহেল গ্রুপের গুলিতে শাহ নেওয়াজ কাল্লু নামের যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ভূইয়া সোহেল বর্তমানে জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি। সোহেল, তার ভাই রানা ও টুনটুনের হাতে নিয়ন্ত্রিত হয় পুরো ক্যাম্প এলাকার হেরোইন কারবার৷ তাদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যান তারা।”
তিনি আরো বলেন, “শাহ নেওয়াজ কাল্লু জেনেভা ক্যাম্পের আরেক মাদক কারবারি লালনের বড় ভাই।লালন ভেনেভা ক্যাম্পের মাঝারি পর্যায়ের একজন মাদককারবারি। তার নামেও রয়েছে বেশ কয়েকটি মাদক মামলা। তিনি আরেক মাদককারবারি পারমনুর বিশ্বস্ত সহযোগী।”
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নিহত শাহ নেওয়াজ ওরফে কাল্লু মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে ছিলেন। তিনি জেনেভা ক্যাম্পের ৮ নম্বর ব্লকে থাকতেন।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আলী ইফতেখার হাসান বলেন, ‘গোলাগুলিতে জেনেভা ক্যাম্পে কাল্লু নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে কে বা কারা গুলি করেছে প্রাথমিকভাবে তিনি সেটা বলতে পারেননি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে আমি র্যাব এবং পুলিশ পাঠিয়েছি জেনেভা ক্যাম্পে যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে। আপনারা জানেন এই ক্যাম্পের ভিতরে নানা ধরনের অপকর্ম হয়। কিছুদিন আগেও আমরা সেনাবাহিনীসহ যৌথ অভিযান করেছি। সরকারের পক্ষ থেকে এটিকে উদ্যোগ না নিলে এরকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে। সামাজিকভাবে তাদেরকে পুনর্বাসন করা দরকার। আপনাদের মাধ্যমে এই বিষয়টি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা দরকার। আমরা এযাবৎ কালের মধ্যে এখানে সবচেয়ে বড় যৌথ অভিযান করেছি।’
বলা বাহুল্য, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিনে মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানার অস্ত্রাগার লুট করে জেনেভা ক্যাম্পের মাদককারবারিরা। যা নিয়ে ইতোপূর্বে সংবাদ প্রচারও হয়েছে। সেই অস্ত্র হাতে ওই দিন থেকেই মাদক নিয়ে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে লিপ্ত হয় তারা। ৬ আগস্ট গুলিতে নিহত হয় একজন। সেপ্টেম্বরে প্রাণ যায় আরও দুইজনের। এবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
আপনার মতামত লিখুন